“বিটিসিএলকে আমরা একটা স্মার্ট, লাভজনক ও দক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করব,” বলেন তিনি।
Published : 02 Mar 2024, 08:32 PM
চার মাসের মধ্যে বিটিসিএলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেছেন, “এক মাস ২২ দিন, এর মধ্যে আমি ১০-১২টা জেলা সফর করলাম। বিটিসিএলের তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত কথা বললাম। আমাদের যে টেকনোলজি তা দেখলাম।
“বিটিসিএলের যে মানবসম্পদ, যে প্রযুক্তি সক্ষমতা- তাকে যদি কাজে লাগাই, একসাথে যদি কাজ করি, আমার বিশ্বাস বিটিসিএলকে আমরা আগামী ৩০ জুনের মধ্যে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারব।”
শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকাননে বিটিসিএলের টেলিফোন ভবনে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ সেবা ‘জিপন’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি মূল ‘ব্যাকবোন’ হবে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “আর এটাকে মানুষের সুলভ মূল্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হবে বিটিসিএল। বিটিসিএলকে আমরা একটা স্মার্ট, লাভজনক ও দক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করব।”
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন এবং এর পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। আজকে যে জিপন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম বিভাগে ১১টি জেলায় ৫৯ হাজার উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে, সেটি আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্রেইন চাইল্ড।
“তিনি যদি এই প্রকল্পের নির্দেশনা না দিতেন এবং বিটিসিএলের সক্ষমতা না বাড়াতেন, তাহলে ল্যান্ডফোন নির্ভর সেবা প্রদান করে বিটিসিএলের টিকে থাকা দুরূহ ব্যাপার হয়ে যেত।”
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “নতুন প্রযুক্তির যে জিপন কানেকশান সারা বাংলাদেশে আমরা দিতে পারব চার লক্ষ। চট্টগ্রামে দিতে পারব ৫৯ হাজার। দিয়েছি ১৫ হাজার। সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্যই আমরা ভাষার মাসে দাম কমিয়ে অর্ধেকে নিয়ে এসেছি। যাতে করে এই সম্পদ সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারি।
“সারাদেশে ১ কোটি ৩০ লাখ ফিক্সড ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি, ১৩ কোটি মোট ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি যার মধ্যে ১২ কোটি মোবাইল ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি রয়েছে। আমরা যদি বিটিসিএলের মাধ্যমে নতুন ৪ লাখ সংযোগ অ্যাকটিভ করতে পারি, তাহলে বিটিসিএলের গড়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আয় হবে। যদি ২০০ কোটিও যোগ করতে পারি, তাহলে বিটিসিএল কি লসে থাকে?”
বিটিসিএল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এখানে সরকারের যে ডেটা আইআইজি, সার্ভারগুলো করছি- এর বাইরে যদি প্রাইভেট আইএসপি আসে, আইআইজি আসে, এখানে যদি হোস্ট করে আপনারা কাজ করতে কোনো সমস্যা আছে।
“এখানে যে সার্ভারগুলো অকেজো পড়ে আছে, সেগুলো ডিসমেন্টাল করেন স্পেস তৈরি করেন। করে যা ফ্যাজিলিটিজ আছে তা ব্যবহার করে কো-লোকেশন সার্ভিস দেন। এটা থেকে ভাড়া দিয়ে আমরা আয় পাব।”
আগামী জুনের মধ্যে চট্টগ্রামে ৩০ হাজার জিপন সংযোগ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম অঞ্চলের টার্গেট আমি দিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের টার্গেট আমি এমডিকে দিছি। ৩০ জুনের মধ্যে যার যার দায়িত্ব পালন করে, সে যদি এটা এচিভ করতে পারে তার জন্য পুরস্কার আছে। আর যদি সে এই টার্গেট ফুলফিল করতে না পারে, তাহলে কিন্তু তার কপালে দুঃখ আছে।
“প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। ১৯৭৩ সালে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের সদস্য পদ গ্রহণ করেন, তখন কেউ কল্পনা করেনি যে টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি হয়ে যাবে সকল যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। আজ থেকে ৫০ বছর আগে তার দূরদর্শিতা দিয়ে তিনি সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আর্থ স্টেশন সেটাও কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন তিনি স্থাপন করেছিলেন।”
বিটিসিএলকে আগামীদিনে একটি স্মার্ট প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং উদ্যোগগুলো গ্রহণ করা প্রয়োজন মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “হাটহাজারীতে আর্থ স্টেশনের প্রাথমিক একটা সাইট নির্বাচন করা হয়েছিল। এটা আমি শুনলাম। কালকে জানতে পারলাম ইতিহাসটা।
“১৫০ একর জায়গা যেটার হয়ত দাম প্রায় হাজার কোটি টাকার উপরে। এই জায়গাটা পড়ে আছে আজ ৭০ বছর ধরে। অথচ বিটিসিএল লস করেছে গত বছর ১৪৭ কোটি টাকা। তাহলে আমাকে বুঝান, মূল্যবান সম্পদ আপনি ব্যবহার করছেন না। ফেলে রেখেছেন।”