ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক।
Published : 31 Jan 2024, 07:29 PM
স্নাতকোত্তর পর্বের থিসিস করতে গিয়ে শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের এক ছাত্রী।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং থিসিসের সুপারভাইজার অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে গত রোববার উপাচার্যের কাছে অভিযোগপত্র দেন ওই ছাত্রী।
অভিযোগে বলা হয়, থিসিস চলাকালীন সুপারভাইজার কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হন তিনি। ল্যাবে একা কাজ করার সময় এবং কেমিকেল দেয়ার বাহানায় নিজ কক্ষে ডেকে দরজা আটকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, গত ৬ জানুয়ারি ল্যাবে একা কাজ করার সময় অনেক ঠান্ডা লাগছে বলে ওই শিক্ষক তাকে জড়িয়ে ধরেন। এরপর গত ১৩ জানুয়ারি কেমিকেল দেয়ার বাহানায় নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে শিক্ষকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে পালিয়ে আসেন ওই ছাত্রী।
অভিযোগে তিনি বলেন, বিষয়টি তার দুই সহপাঠীকে জানানো হলে তারাও এর আগে ওই শিক্ষকের যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন বলে জানতে পারেন তিনি।
পরে ওই শিক্ষক তাদেরকে কক্ষে ডেকে নিয়ে ঘটনা কারও কাছ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ছাত্রীর এক সহপাঠী বলেন, “উনি (ড. মাহবুবুল মতিন) অনেকদিন ধরে এরকম আচরণ করে আসছেন। আবার আমার সহপাঠীকে প্রেসারাইজও করেছেন ব্যাপারটা এখানেই ডিসমিস করে দেয়ার জন্য। তাই তার শাস্তির দাবিতে আমরা অভিযোগ দিয়েছি।”
অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মতিন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা অসম্ভব, আমি দুঃখিত এরকম একটা কথা শুনতে হচ্ছে। মামলা তো অসত্যও হয়, হয়রানি করার জন্য। আর সে আমাকে হয়রানিও কেন করতে চাইবে? আমি সবাইকে একটু বকাবকি করি শেখার জন্য।”
মাহবুবুল মতিন বলেন, “মেয়েটা বেশ কিছুদিন ধরে বিষন্নতায় ভুগছিল। তাই আমি তার সহপাঠীদের সঙ্গে তাকে ডেকে জানতে চেয়েছিলাম কি হয়েছে। পরে জানতে পারি তার পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে সে চিন্তিত।”
এই ঘটনার বিচারের দাবিতে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বিজ্ঞান অনুষদের সামনে মানববন্ধনও করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অভিযোগটি পেয়েছি। এই ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় দেখছি।”
অভিযোগটি ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়িন সেলের কাছে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জরিন আখতার বলেন, “অভিযোগ পেয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা মিটিং ডেকেছি। অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে।”