“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একটা গোষ্ঠী ব্যাপক অপপ্রচার করছে। সেসব অপপ্রচারে অনেক ভোটার বিভ্রান্ত হচ্ছেন” বলেন তিনি।
Published : 02 Jan 2024, 12:30 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে মন্তব্য করে ভোটারদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা।
তিনি বলেছেন, “দিনের ভোট রাতে- এরকম কিছু কল্পনা করার কোনো সুযোগ নেই। একজনের ভোট আরেকজন দেবে এবং ভোট যেখানেই দিই না কেন এক জায়গায় চলে যাবে- এসব অপপ্রচারের একটা অংশ।
“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একটা গোষ্ঠী ব্যাপক অপপ্রচার করছে। সেসব অপপ্রচারে অনেক ভোটার বিভ্রান্ত হচ্ছেন।”
সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপে ভোটের মাঠের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “ভোট কেন্দ্রে আসতে বলাটা পুলিশের কাজ না। মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে বলতে চাই, তারা যেন গুজবে কান না দেন। ভোটের দিন তারা যেন কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন নিজের ভোট নিজে দিতে পারলেন কিনা। কোনো ভোটারকে যদি কেউ বাধা দেয় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।
“আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, নির্বাচন কমিশন এবং সরকার আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। কেউ ভোটকেন্দ্র দখল বা দখলের সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। আপনার ভোট আপনি দেবেন, নিশ্চিত করতে পারি কোনো ধরনের ঝামেলা হবে না।”
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ১১টি জেলার অধীনে রয়েছে ৫৮টি সংসদীয় আসন। তার মধ্যে তিনটি পূর্ণাঙ্গ আসন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে।
আগামী ৭ জানুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ। ভোটের প্রচারে নেমে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের মত ঘটনা ঘটছে।
ডিআইজি মিনা বলেন, “বিভিন্ন দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ‘প্রবল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকায় কিছু নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা আমরা দেখেছি। এসব এলাকায় ফৌজদারি যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে অপরাধের ধরন অনুযায়ী আমরা নিয়মিত মামলাও নিয়েছি, অনেকগুলো আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে নন এফআইআর প্রসিকিউশন দাখিল করেছি।
“আপনারা জানেন যে, নির্বাচন কমিশন প্রত্যেক জেলায় নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি করেছে। সেখানে যুগ্ম জেলা জজ পদমর্যাদার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছে। তারা নির্বাচনি আচরণবিধির বিষয়টি দেখছেন। পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও দেখছেন। কিছু কিছু অভিযোগ নির্বাচন কমিশন সরাসরি আমলে নিয়ে শুনানি করেছে।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “ওভারঅল বলতে পারি, এখন পর্যন্ত একটা-দুইটা ঘটনা ছাড়া তেমন বড় কিছু ঘটেনি। এগুলোর মধ্যে পটিয়া ও কুমিল্লায় দুটি ঘটনা একটু চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, সেগুলোতে মামলা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারও হয়েছে।”
ভোটের মাঠে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘অনেক বেশি প্রস্তুত’ দাবি করে তিনি বলেন, “নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে বিজিবি, আনসার কোস্ট গার্ড থাকবে। এর বাইরে নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। উপজেলা পর্যন্ত তারা স্ট্যান্ডবাই থাকবে। যে কোনো সময় তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার কলে রেসপন্স করবে। আমি মনে করি কারচুপি হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।”
ভোটের দিন ভোরবেলায় কেন্দ্রে ব্যালট গেলেও পার্বত্য অঞ্চলের ৩৩টি এবং সন্দ্বীপের উরির চরের কয়েকটি বিচ্ছিন্ন কেন্দ্রগুলোতে আগের দিন সন্ধ্যায়ই ব্যালট পেপার যাবে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।