“শেখ হাসিনাকে যদি বিদায় দিতে না পারি তাহলে আমাদের কারও এক হাজার বছর, কারও দেড় হাজার বছর সাজা খাটতে হবে,” বলেন তিনি।
Published : 08 Jul 2023, 09:10 PM
কয়েকদিনের মধ্যে ৩৬টি রাজনৈতিক দল সরকার পতনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
তিনি বলেছেন, “চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে সকল মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাই কয়েকদিনের মধ্যে ৩৬টি রাজনৈতিক দল একসাথে সরকার পতনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
“সে ঘোষণা আসার পর আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করব। এছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
শনিবার বিকালে চট্টগ্রামে বিএনপি কার্যালয়ের মাঠে এক প্রস্তুতি সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আগামী ১৬ জুলাই কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত ‘চট্টগ্রাম বিভাগীয় মেহনতি শ্রমিক জনতার মহাসমাবেশ’ সফল করতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের এই প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, “শেখ হাসিনাকে হটাতে হলে সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে। এখন বাংলাদেশের মানুষের একটাই দাবি যে, শেখ হাসিনা কখন গদি ছাড়বে।
“আজকে বিদেশি গণতান্ত্রিক দেশগুলো একটি কথাই বলছে, বাংলাদেশে কোনো গণতান্ত্রিক সরকার নেই। বাংলাদেশে অবৈধ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। একে সরাতে হবে।”
বিএনপি নেতা বুলু বলেন, “আগে যেখানে সর্ব্বোচ্চ সাজা সব মামলা মিলিয়ে ২০ বছর বা ৩০ বছর খাটলে চলে যেতো। কিন্তু শেখ হাসিনা এই ছয় মাসে একটা আইন করেছে। আপনার যদি ৫০ বা ১০০টি মামলা থাকে সব মামলার একটির পাঁচ বছর বা ১০ বছর সাজা আপনাকে খাটতে হবে।
“আমরা হিসেব করে দেখেছি, শেখ হাসিনাকে যদি বিদায় দিতে না পারি তাহলে আমাদের কারও এক হাজার বছর, কারও দেড় হাজার বছর সাজা খাটতে হবে। সারাদেশে ৪০ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা আছে। শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় টিকে যায় তাহলে আমাদের সবার পরিবারকে জেলখানা থেকে আমাদের লাশ নিয়ে আসতে হবে।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, “রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যতক্ষণ পর্যন্ত শ্রমিক, মজুর, কৃষক, অসহায় শ্রমজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করেনি; ততক্ষণ পর্যন্ত অতীতে কোন আন্দোলনই সফলতার মুখ দেখেনি।
“শ্রমিক জনতা রাস্তায় নামলেই শাসকেরা মাথানত করে। শেখ হাসিনা কুট কলা কৌশলে জনগণকে আজকে জর্জরিত করে ফেলেছে। তাই বীর চট্টলার মানুষ ১৬ জুলাই দেশকে জাগিয়ে দিতে মহাসমাবেশ সফল করবে।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, “আওয়ামী লীগ জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়। তারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। দেশে আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই, তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে।
“আজকে সরকারের অবস্থান দেশেও নাই, বিদেশেও নাই। আমরা সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনে আছি। আমাদের বিজয় খুব কাছাকাছি। এই সরকারের পতনের ঘণ্টা বাজাতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।”
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় সহ শ্রমিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।