জমা পড়া ১৪৮টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে মোট ৩২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
Published : 04 Dec 2023, 08:06 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মোট ১১৬ জনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষ দিন সোমবার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বাছাই করেন চট্টগ্রাম-৭, ১২, ১৪, ১৫ ও ১৬ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র।
আর বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বাছাই করেন চট্টগ্রাম ৯, ১০, ১১ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র।
এই আট আসনে মোট ১৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয় এদিন। আগের দিন রোববার বাতিল হয়েছিল ১৮ জনের প্রার্থিতা।
ফলে ১৬ আসনে জমা পড়া ১৪৮টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে মোট ৩২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হল।
সোমবার বাছাইয়ে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে ৬ জন প্রার্থীর সবার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের বর্তমান এমপি সামশুল হক চৌধুরী এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
সোমবার বাছাইয়ে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর আইনজীবী মুজিবুল হক। মহানগর পিপি আবদুর রশিদও এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
তারা দাবি করেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে দাখিল করা প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ‘ভুয়া’।
সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল হক চৌধুরী শারুন এসময় তার বাবার সনদের পক্ষে সরকারি কর্মাস কলেজ থেকে আনা প্রত্যায়নপত্র উপস্থাপন করেন।
তখন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “সবকিছু যাচাই বাছাই করে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হল। তবে কারও আপত্তি থাকলে তা আপিল করার সুযোগ রয়েছে। যথাযথভাবে নির্বাচন কমিশনের আপিল করতে হবে।”
চট্টগ্রাম-১২ আসনে মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়ন নেন। যার মধ্যে ৩ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াস মিয়া ও গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে গরমিল থাকায়। আর বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নেতা এম এ মতিনের মনোনয়ন বাতিল হয় বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায়।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনের আট প্রার্থীর মধ্যে কারও মনোনয়ন বাতিল হয়নি।
তবে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া) আসনের নয় জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেছে।
তাদের মধ্যে আ ন ম মিনহাজুর রহমান ও আবদুল মোতালেবের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে গরমিল থাকায়।
আর এনপিপির ফজলুল হকের মনোনয়ন বাতিল হয় আয়কর রিটার্ন দাখিল না করায় এবং মনোনয়নপত্র অসম্পূর্ণ হওয়ায়।
তাদের মধ্যে আবদুল মোতালেব সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। আর মিনহাজুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
তাদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এবং ন্যাপের আশীষ কুমার সেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ঋণখেলাপির কারণে। আর ইসলামী ঐক্যজোটের শওকত হোসেন চাঁটগামীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে আয়কর রিটার্ন দাখিল না করায়।
জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র।
সোমবার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৯ কোতোয়ালি-বাকলিয়া আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ৭ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
আর চট্টগ্রাম-১০ ডবলমুরিং-পাহাড়তলি আসনে ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ, মো. ফয়সাল আমীন ও মো. ওসমান গনির মনোনয়নপত্র বাতিল হয় এক শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিল থাকায়।
তাদের মধ্যে ফরিদ মাহমুদ নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। আর ফয়সাল আমীন প্রয়াত সংসদ সদস্য আফসারুল আমীনের ছেলে।
আর বিএনএফের মঞ্জুরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয় সমর্থনকারীর তথ্য না থাকায়।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে নয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ওই আসনের ৮টি মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
রেখা আলম চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় এক শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিল থাকায়।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে দুই দিনে চট্টগ্রামের ৬টি আসনের মোট ৬০টি মনোনয়নপত্র বাছাই করে ৪৪টি বৈধ এবং ১৬টি বাতিল করা হয়।
আর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চট্টগ্রামের ১০টি আসনের ৮৮টি মনোনয়নপত্র বাছাই করে ৭২টি বৈধ ও ১৬টি বাতিল করা হয়।