মিল গেইটে বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে বেশি রাখা হচ্ছে বলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
Published : 27 Jun 2023, 08:52 PM
রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদনের পরও এ বছর লবণের দাম আগের বছরের চেয়ে বেশি বলে প্রমাণ পেয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে এর জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দায়ী করেছেন লবণ মিল মালিকরা।
কোরবানির ঈদের আগে লবণের বাজার নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার বিসিক প্রতিনিধিদের নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঝিরঘাট এলাকায় বিভিন্ন মিল পরিদর্শনে যান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হলেও মিলে চাহিদা অনুযায়ী অপরিশোধিত লবণ আসছে না। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মাঠ পর্যায়ে এক শ্রেণির ‘মধ্যস্বত্বভোগী’ যুক্ত হয়েছে। যারা লবণ আটকে রাখছে।
মাঝিরঘাটে অবস্থিত ৩৭টি লবণ মিল পরিদর্শন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত; পরে বাজারে পর্যাপ্ত লবণ মজুদ রয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
তিনি বলেন, আগের বছরের চেয়ে এ বছর লবণের দাম মিল গেইটে বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে বেশি। গত বছর বস্তাপ্রতি যে লবণের দাম ছিল ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা, সেটা এ বছর ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশের পশুর চামড়ার চাহিদার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই কোরবানির ঈদে জবাই করা পশু থেকে পূরণ হয়ে থাকে। ফলে প্রতি বছরই এই চামড়া সংগ্রহের মৌসুমে লবণের দাম বাড়ানো হয় বলে অভিযোগ কাঁচা চামড়া আড়ৎদারদের।
তারা বলছেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে লবণের দাম বাড়ানো হচ্ছে। গত বছরের চেয়েও এ বছর লবণের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি দুই থেকে তিনশ টাকা।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়ৎদারদের দাবি, ১০০টি চামড়া সংরক্ষণের জন্য এক বস্তা লবণের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রতি বছর কোরবানির ঈদের মাস খানেক আগে থেকে বাজারে লবণের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত বছর প্রতি বস্তা লবণ বিক্রি হয়েছিল ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকায়। যা তার আগের বছর ছিল ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা ছিল। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০০ টাকা।
কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের প্রধান উপাদান লবণের দাম প্রতি বছর কোরবানির আগে বাড়ানোর কারণে চামড়া সংরক্ষণের খরচ বেড়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এবার লবণের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কাঁচা চামড়া আড়ৎদারদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথাই জানাল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত।
সরকারি তথ্যের বরাতে মো. তৌহিদুল জনান, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ ২২ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদিত হয়েছে, যা পুরো দেশের চাহিদার প্রায় কাছাকাছি পরিমাণ।
এদিকে মিল মালিকরা তাদের কাছে যে পরিমাণ লবণ মজুদ আছে তার চেয়ে বেশি অপরিশোধিত লবণ কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে আনা প্রয়োজন বলে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল বলেন, লবণ উৎপাদন, মজুদ নিয়ন্ত্রণ ও বাজারজাতকরণ মনিটরিং এর সঙ্গে জড়িত সরকারি সংস্থা বিসিক চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিজিএম জনাব নিজাম উদ্দিনের মাধ্যমে তারা কক্সবাজারে যোগাযোগ করেছেন। সেখানে এ মৌসুমে পড়ে থাকা সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত লবণ পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়মিতভাবে পরিবহনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।