সন্তানকে মারছিল কিশোর গ্যাং, বাঁচাতে গিয়ে চিকিৎসক সংজ্ঞাহীন

পাথর দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়।

চট্টগ্রামে মারধরের শিকার সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন এক চিকিৎসক।

নগরীর আকবর শাহ থানার ফিরোজশাহ কলোনীতে শুক্রবার এ মারধরের ঘটনা ঘটে। দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলী (৬০) বর্তমানে একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন।

এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে জানিয়ে আকবর শাহ থানার ওসি গোলাম রব্বানী বলেন, “গত শুক্রবার বিকালে সন্তানকে কিছু যুবক মারধর করছিল দেখে কোরবান আলী বাঁচাতে গিয়েছিলেন। এসময় তিনি আহত হয়েছেন। আসামিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা করছে।”

কোরবানের ছেলে আলী রেজা সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুক্রবার বিকালে ইফতার আনতে যাবার পথে স্থানীয় ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ কিছু সদস্য আমাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। এটা দেখে আমার বাবা আমাকে বাঁচাতে বাসা থেকে নেমে আসেন। এসময় তারা পাথর দিয়ে আমার বাবার মাথায় আঘাত করে।”

সংজ্ঞাহীন অবস্থায় কোরবান আলীকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়া হয় জানিয়ে আলী রেজা বলেন, “অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমার বাবার আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হয়েছিল। তাই বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।”

হামলাকারীরা সবাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী বলে ভাষ্য আলী রেজার।

হামলার কারণ কী, এমন প্রশ্নের উত্তরে রেজা বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফিরোজ শাহ ঈদগাঁ মাঠের কাছে জে লেইনে কিছু ছেলে তিন স্কুল ছাত্রকে মারধর করছিল।

“সেখানকার একটি ছেলে আমাদের ভবনে থাকেন। সে ছেলেটি আমার কাছে সহায়তা চাইলে আমি ৯৯৯-এ ফোন করি। পুলিশ এসে হামলাকারীদের একজনকে আটক করে তিনজনকে উদ্ধার করে। ওই দিনই গোলাম রসুল নিশান আমার বাসায় গিয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে এসেছিল। আমি মনে করেছি বিষয়টি সেখানেই সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু তার দুই মাস পর আবার প্রতিশোধ নিয়েছেন “

আলী রেজা বলেন, “আমাকে শুক্রবার যারা মারধর করেছিল তাদের এক জনের নাম সামি। গত ফেব্রুয়ারিতে ৯৯৯-এ ফোন করার পর পুলিশ তাকে আটক করেছিল।”

আকবর শাহ এলাকার বাসিন্দা গোলাম রসুল নিশান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে তিনি পরিচিত।

বক্তব্য জানতে গোলাম রসুল নিশানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।