“আজকে থেকে আর একটি পাহাড়ও কাটতে দেওয়া যাবে না, যারাই পাহাড় কাটবে সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে,” বলেন তিনি।
Published : 11 Jun 2023, 11:27 PM
পাহাড়খেকোর জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, “পাহাড় প্রকৃতির সৃষ্টি, এটি গড়া যায় না। পাহাড়কে হত্যা করছে দখলকারীরা। ৫০ হাজার, একলক্ষ টাকা জরিমানা তাদের জন্য নয়। পাহাড়খেকোদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখতে হবে।”
রোববার চট্টগ্রামের একটি হোটেলে পাহাড় কাটা রোধে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এমন দাবি জানান।
মেয়র বলেন, “অনেক সময় ভুয়া দলিল করে সিডিএ থেকে প্ল্যান নেওয়া হচ্ছে। সরেজমিন তদন্ত করে সিডিএর প্ল্যান দিতে হবে। পাহাড় রক্ষায় সিটি করপোরেশন দায়িত্ব নেবে, তবে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা ভাবতে হবে। দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি মানুষের অসাধ্য কিছুই নাই।”
পাহাড় রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে বায়েজিদ লিংক রোড- পাহাড় না কেটেও করা যেত। ব্যক্তি উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে গিয়ে আমরা প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি। পাহাড় কাটলে পূর্বাবস্থায় আনা অসম্ভব। তাই তা কাটা বন্ধের কোনো বিকল্প নেই। আজকে থেকে আর একটি পাহাড়ও কাটতে দেওয়া যাবে না, যারাই পাহাড় কাটবে সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
পাহাড় কাটা রোধ ও পরিবেশ রক্ষায় একটি হটলাইন প্রতিষ্ঠা ও এর জন্য আলাদা এনফোর্সমেন্ট টিম রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “ট্রিপল নাইনের মতো পরিবেশ সুরক্ষায় যেন সবাই সাথে সাথে তথ্য দিয়ে ফল পায় সেটা আমাদের করতে হবে।”
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, চট্টগ্রাম শহরের কাটা পাহাড়ের ৭৪ শতাংশই পাহাড়তলী মৌজার। দ্রুততার সাথে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে পাহাড়গুলোর সুরক্ষায় নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামে ৩২ দশমিক ৩৭ বর্গ কিলোমিটার পাহাড় ছিল। ২০০৮ সালে তা কমে ১৪ দশমিক দুই বর্গ কিলোমিটারে নেমে আসার তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
সভায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের উপ পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, “গত কয়েক বছরে মোট ৮৫টি মামলা করেছি আমরা। ২০২২ সালেই মামলার সংখ্যা ২২টি। আমরা আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের চেষ্টা করছি।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নগর সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সিকান্দার খান, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, চট্টগ্রামের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) উমর ফারুক।