মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকায় পানি সরবরাহ করা হবে বলে আশ্বস্ত করা হয় তাদের।
Published : 11 Mar 2025, 07:07 PM
নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের দাবিতে চট্টগ্রাম ওয়াসা ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার দুপুরে মিছিল নিয়ে ওয়াসার মোড় এলাকায় ওয়াসা ভবনের নিচে জড়ো হন ধনিয়ালাপাড়া, সুপারিওয়ালাপাড়া, পোস্তারপাড়, দেওয়ানহাট, মতিয়ারপোলসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।
নগরীর ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তারা পানির সংকটে ভুগছেন। এরমধ্যে গত শনিবার সাগরিকা মোড়ে ওয়াসার পাইপ লাইন কাটা পড়ার পর ওই এলাকায় পানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
অবস্থান কর্মসূচির পর তারা স্মারকলিপি দিয়েছেন ওয়াসার কর্মকর্তাদের কাছে। এ সময় মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকায় পানি সরবরাহ করা হবে বলে আশ্বস্ত করা হয় তাদের।
২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী চট্টগ্রাম ওয়াসা গ্রাহক কল্যাণ কমিটির পক্ষে স্মারকলিপি দেন মো. সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ওয়ার্ডের পানির সমস্যা একদিনের নয় বা গত শনিবার থেকেও নয়। আমরা আগে পানি পেতাম কলেজিয়েট স্কুল এলাকার ওয়াসার ডিপটিউবওয়েল থেকে।
“প্রায় এক বছর ধরে আন্দোলন করে আমরা জাইকার সরবরাহ লাইনে সংযুক্ত হই। কিন্তু সেই পাইপলাইনের ব্যাস কম এবং ওই ব্যাসের পুরোটুকুও পানি দেয়া হয় না। একারণে আমাদের ওয়ার্ডে পানির সংকট সারা বছর ধরে লেগে থাকে।”
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দেওয়া স্মারকলিপিতে ওই এলাকায় ওয়াসার সরবরাহ লাইনে কারিগরি ত্রুটি এবং ওয়াসার কর্মকর্তাদের ‘বিমাতাসুলভ আচরণ’ পানি সংকটের জন্য দায়ী করা হয়।
পাশাপাশি অনতিবিলম্বে কারিগরি ত্রুটি চিহ্নিত করে এই এলাকার পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
মো. সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওয়াসার কর্মকর্তারা বলেছেন শনিবার সাগরিকায় যে পাইপ লাইন কাটা পড়েছে সেজন্য পানি সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। বিকল্প ব্যবস্থায় তারা আজ রাতে আমাদের এলাকায় কিছু পানি দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
“তবে আমাদের যে দীর্ঘ মেয়াদি সমস্যা সেটার বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তারা আমাদের মদুনাঘাট এলাকায় পানিতে লবণাক্ততা ও এ কারণে কম পরিশোধনের অজুহাত দিচ্ছেন। এসব বক্তব্য দায়সারা।”
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দেওয়ানহাটের বাসিন্দা আবদুল জব্বার বলেন, “গত শনিবার রাত থেকে পাইপে কোনো পানি নেই। হঠাৎ করে পানি আসা বন্ধ হয়ে গেছে। ঘরে জমা কোনো পানিই ছিল না। বড় বিপদে পড়তে হয়েছে।”
এ বিষয়ে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের ঠিকাদারের ভুলের কারণে সাগরিকায় সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খননযন্ত্রের আঘাতে পাইপ ফুটো হয়। এতে হালিশহরের জলাধারটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। মেরামতের কাজ চলছে। আজ রাতের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে।”
এর আগে গত রোববার ওয়াসা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শনিবার রাতে ‘চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের কাজ করার সময় সাগরিকা মোড়ে ওয়াসার ৪৪ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন ফুটো হয়ে যায়।
ঠিকাদারের মাধ্যমে ওই প্রকল্পের কাজ করছিল পাওয়া গ্রিড বাংলাদেশ লিমিটেড। পাইপ লাইন ফুটো হওয়ায় নগরীর আগ্রাবাদ, পশ্চিম মাদারবাড়ী, হালিশহর, বড়পোল, ছোটপোল, ব্যাপারীপাড়া, গোসাইলডাঙ্গা, পানওয়ালাপাড়া, পোস্তারপাড়, ধনিয়ালাপাড়া, কদমতলী, হাজীপাড়া, শান্তিবাগ, মুহুরীপাড়া, পাহাড়তলী, ঈদগাহ, দেওয়ানহাটসহ সংলগ্ন এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই সব এলাকায় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন:
ওয়াসার লাইন কাটা সাগরিকায়, পানি নেই চট্টগ্রামের বড় অংশজুড়ে
ওয়াসার পাইপ ভেঙে চট্টগ্রামের বড় অংশে পানি সরবরাহ বন্ধ
তিন দিনেও মেরামত হয়নি পাইপ, চট্টগ্রামের বড় অংশে পানির কষ্ট