চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর ওপর তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পর ওই সেতু হয়ে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
রেল কর্মকর্তারা জানান, সোমবার বিকালে ৫টা ২০ মিনিটের দিকে সেতুতে ওঠার পর ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে না পৌঁছানোয় সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেলে সেতুর দুইপাশে অনেক যানবাহন আটকা পড়েছে।
বোয়ালখালীর গোমদণ্ডী স্টেশনের মাস্টার অনুপম দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ট্রেনটি দোহাজারি পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য তেল নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে খালি অবস্থায় ফেরার সময় গার্ড ব্রেক (যেখানে গার্ডরা বসেন) এর চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়।”
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর সবার পেছনের ওই লাইনচ্যুত বগি রেখে বাকি সাতটি ওয়াগন নিয়ে ইঞ্জিন চলে যায়।
“রেখে যাওয়া বগিটা সরাতে শহর থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন রওনা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সেটা পৌঁছালে উদ্ধার কাজ শুরু হবে।”
চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের মাধ্যম কালুরঘাট সেতু বন্দর নগরীর সঙ্গে কক্সবাজারের রেল যোগাযোগেরও অন্যতম সংযোগ।
দুর্ঘটনার পর সেতুর ওপর দিয়ে উভমুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগরী ও বোয়ালখালীমুখী বহু মানুষকে হেঁটে সেতু পার হতে দেখা যায়। সেতুর দুই পাশে অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকশ গাড়ি।
১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় ৭০০ গজ দীর্ঘ কালুরঘাট রেল সেতু। ১৯৫৮ সালে সেতুটি সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার।
সেতুটি এখন ভরে আছে নানা খানাখন্দে। জোড়াতালি দিয়ে সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে কয়েক হাজার যানবাহন ও কয়েক জোড়া ট্রেন।
সেতুটি নগরী লাগোয়া বোয়ালখালী উপজেলার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫০ হাজার লোক পারাপার হয়।
চট্টগ্রাম শহর থেকে বোয়ালখালী উপজেলায় পৌঁছাতে যেখানে সময় লাগার কথা ৩০ থেকে ৪০ মিনিট, সেখানে একমুখী এ সেতু দিয়ে চলাচলে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টাও সময় লাগছে।
এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারি রুটে চলাচল করে দুই জোড়া ট্রেন। দোহাজারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফার্নেস ওয়েল আনা-নেওয়ার জন্যও ট্রেন চলে এই সেতু দিয়ে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ চালু হলে তারও পথ হবে এই সেতু।