ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশা মারতে বিদেশ থেকে ৩৭ বছর আগে আনা ৪৮০ টন ক্ষতিকর ডাইক্লোরো ডাফেনাইল ট্রাইক্লোরেথেন বা ডিডিটি পাউডার অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
Published : 26 Feb 2022, 10:13 PM
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে শনিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এসব পাউডার অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
মশা নিধনের জন্য ১৯৮৫ সালে পাকিস্তান থেকে ৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন ডিডিটি আমদানি করা হয়েছিল। কিন্তু জীববৈচিত্র্যের জন্য ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ এই রাসায়নিক ১৯৮৯ সালে নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
তখনও ৪৮০ টন ডিডিটি আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের গুদামে থেকে গিয়েছিল। বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন ওই পাউডার জাহাজে করে ফ্রান্সে নিয়ে ধ্বংস করা হবে।
ডিডিটি পরিবেশসম্মতভাবে অপসারণের জন্য ‘পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন ইন বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তাতে সহযোগিতা করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
প্রকল্প পরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসব ক্ষতিকর ডিডিটি অপসারণে প্রথমে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্যাকেজিং করা হবে এবং তা জাহাজে তোলা হবে ফ্রান্সে নেওয়ার জন্য। মূলত এসব প্রক্রিয়ার কাজই শনিবার শুরু হল।”
ফরিদ জানান, জাহাজটি ফ্রান্সে যাবার পথে ১৪টি দেশের বন্দর হয়ে যাবে। এর মধ্যে ১৩টির অনুমোদন মিলেছে।
গুদামে রাখা এসব ডিডিটি পাউডার প্যাকেজিংয়ের কাজ রোববার শুরু হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাকি একটি বন্দরের অনুমতি মিললে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই এসব ডিডিটি ধ্বংসের কাজ শেষ হবে।
“অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই ডিডিটি। তখন ম্যালিরিয়াবাহী মশা নিধনের জন্য আনা হয়েছিল। এরপর তা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এর পর ২০০১ সালে বাংলাদেশ স্টকহোম কনভেনশনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করে, যেখানে ডিডিটিসহ ক্ষতিকারক জৈব দূষণকারী কীটনাশক উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিত করার কথা আছে।”
ডিডিটি অপসারণ কাজের জন্য ১০ জন শ্রমিককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও প্রকল্প পরিচালক জানান।
পলিয়েকো নামে একটি বিদেশি কোম্পানি ডিডিটি অপসারণের কাজটি করছে। অপসারণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার একটি দল বর্তমানে চট্টগ্রামে আছে।
শনিবার ডিডিটি অপসারণ প্রক্রিয়া শুরুর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন এবং এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।