দেশ পরিচালনায় ‘ব্যর্থতার দায়’ নিয়ে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
Published : 12 Oct 2020, 04:56 PM
সোমবার প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে ‘নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে’ চট্টগ্রাম মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ডা. শাহাদাত বলেন, “এসব অপকর্মের পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে। জাতিসংঘ পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এই ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে। এর চেয়ে লজ্জা কী হতে পারে একটা জাতির জন্য?
“ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যেই স্বীকার করে নিয়েছেন এই ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও নিপীড়নের পেছনে সরকারি দলের মদদ রয়েছে। তাই দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার দিকে যান। যদি না যান জনগণ জেগে উঠছে, আপনাদের চলে যেতে বাধ্য করবে।”
দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘চরম অবনতি’ হয়েছে মন্তব্য করে ডা. শাহাদাত বলেন, “ধর্ষণ ও নারী-শিশু নির্যাতনের মতো বিষয়গুলো এই অবৈধ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় নিরন্তর বিষয় হয়ে গেছে। এগুলো এখন একটি মহোৎসবে পরিণত হয়েছে।
“আজকে এই যে ধর্ষণ এটা শুধু একজন নারীকে ধর্ষণ না, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধর্ষণ। বর্তমানে মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। আজকে দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত না। রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি করে তারা ক্ষমতায় বসে আছে।”
তিনি বলেন, “আজকে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ থামলে চলবে না। এই প্রতিবাদ ছড়িয়ে দিতে হবে দেশের প্রতিটি এলাকায়। এবার প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে যত বাধা-বিপত্তিই আসুক না কেন।”
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, “বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি চলছে, এই পরিস্থিতি সভ্য সমাজের নয়। এটা সম্পূর্ণ একটি অসভ্য সমাজে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আজকের আওয়ামী লীগ সরকার।
“তারা এই সমাজে ভয়ঙ্কর নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সারা দেশে যারা ধর্ষণ, অত্যাচার, অবিচারের সাথে যুক্ত রয়েছে তারা এই সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছে এবং এ কারণেই তারা আরও বেশি অপকর্ম করতে উৎসাহিত হচ্ছে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, “এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, মানুষের অধিকারকে ধ্বংস করেছে। একটা মানুষের যে ন্যূনতম বেঁচে থাকার অধিকার, সে অধিকার থেকে সরকার বঞ্চিত করেছে।
“এ থেকে পরিত্রাণ পেতে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।”
ফোরামের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মো. জানে আলম, বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেন, মো. কামরুল ইসলাম, মন্জুর রহমান চৌধুরী, হামিদ হোসাইন, ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য জেলী চৌধুরী, ড্যাব নেতা ডা. আবুল কালাম, ডা. কাজী মাহবুব আলম, ডা. এস এম সরোয়ার আলম, আবদুল হালিম শপন, মো. ইদ্রিস আলী, আলমগীর নুর, আলী আজম, জাকির হোসেন, নারী নেত্রী আখি সুলতানা প্রমুখ।