প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ইচ্ছা থাকলেও’ মাঠ খালি না থাকায় চট্টগ্রামের বদলে পটিয়ায় জনসভার আয়োজন করা হচ্ছে বলে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ জানিয়েছেন।
Published : 10 Mar 2018, 07:32 PM
২১ মার্চের ওই জনসভা উপলক্ষে শনিবার চট্টগ্রামের মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে আয়োজিত দলের যৌথ বর্ধিত সভায় একথা বলেন তিনি।
হানিফ বলেন, দলীয় সভানেত্রীর জনসভার জায়গা ঠিক করার ক্ষেত্রে একটি বিষয়কে তারা মাথায় রাখেন যেন জনসভার গুরুত্ব আশপাশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, “আমাদের সভানেত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রীয় কাজে উনি প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকায় উনার পক্ষে বেশি সময় দেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তাই স্বাভাবিকভাবেই একটি জায়গায় একবারের বেশি দুবার যাওয়া খুব কঠিন। এসব বিবেচনায় সভার জায়গা সেভাবে নির্ধারণ করা হয়। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা ছিল চট্টগ্রাম শহরের মধ্যেই জনসভাটা করার।
“কিন্তু আপনাদের এখানে যে বাণিজ্য মেলা চলছে, এই মেলার কারণেই চট্টগ্রামে যে মূল মাঠটা জনসভা করার সেটা এই মুহূর্তে খালি করা গেল না। যার কারণে জনসভাটা সরিয়ে দক্ষিণে পটিয়া উপজেলায় নেওয়া হয়েছে।”
এবারও প্রথম দিকে নগরীতেই প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আলোচনা হলেও পরে তা পটিয়ায় ঠিক হয়। নগরীর পলোগ্রাউন্ডে চট্টগ্রাম চেম্বার আয়োজিত মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা চলছে। এছাড়া আউটার স্টেডিয়ামে সুইমিং পুলের নির্মাণ কাজ চলায় সেটির আয়তন অর্ধেকে নেমে এসেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় হানিফের আগে বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “মহানগরে মাঠ নেই এই কথা সঠিক নয়। কেননা বর্তমানে পটিয়ায় জনসভার জন্য যে ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে- এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, প্যারেড মাঠ, পলোগ্রাউন্ডসহ নগরে সেই পরিমাপের আটটি মাঠ রয়েছে।
“কিন্তু পলোগ্রাউন্ডে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। ভেন্যু নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে আগামী এপ্রিলের তৃতীয়-চতুর্থ সপ্তাহে, অথবা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মহানগরে একটি জনসভা আয়োজনের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে উদ্যোগে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণের জন্য সার্বিক বিবেচনা করেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, এপ্রিলের মাঝামাঝি বা শেষ দিকে নগরীর পলোগ্রাউন্ডেই আরেকটি জনসভার করার জন্য। কারণ এর পর হয়ত নির্বাচনের আগে আর সময় পাওয়া যাবে না।
“মহানগরীর নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রীকে বলব, এখানে একটি জনসভা করার জন্য।”
পটিয়া সরকারি কলেজ মাঠে ২১ মার্চের এই জনসভায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটাতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান হানিফ। জনসভায় নারীদের উপস্থিতি বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।
“জনসভাকে সফল করতে আমরা সকলে বসে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের মধ্যে বক্তিগত দ্বন্দ্ব থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের সংগঠনের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।”
জনসভা আয়োজনের বিষয়ে পটিয়ার সাংসদ শামসুল হক চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জনসভায় এক লাখ লোক সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তারা।
“এর মধ্যে ৭৫ হাজার পুরুষ এবং ২৫ হাজার নারী থাকবে।”
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় যৌথ সভায় সভাপতিত্ব করেন উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
বক্তব্য রাখেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাংসদ ডা. আফছারুল আমিন, দিদারুল আলম, নজরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও ওয়াশিকা আয়েশা খান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, কেন্দ্রীয় উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।