পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বঙ্গবন্ধুর সাথে বিএনপিনেতার তুলনার অভিযোগে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাবন্দি চট্টগ্রামের ১৩ শিক্ষকের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে শিক্ষক সমিতি।
Published : 28 Aug 2017, 09:45 PM
সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানান বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতারা।
তারা ঈদের আগেই মানবিক দিক বিবেচনা করে ১৩ শিক্ষককে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।
সমাবেশে সমিতির আঞ্চলিক শাখার সভাপতি লকিয়ত উল্লাহ অভিযুক্ত কোনো নেতা স্বাধীনতাবিরোধী বা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের সাথে কখনো জড়িত ছিলেন না দাবি করে বলেন, “প্রশ্ন প্রণেতার ত্রুটি স্বীকার ও ক্ষমা প্রার্থনার পরও মামলা হয়েছে, ১৩ শিক্ষকের বিদ্যালয়ে দায়িত্বপালনসহ তাদের চাকরি ও বেতনভাতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করবে।”
সমিতির ছয় উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্নপত্র প্রণয়নে সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকলেও কোনো প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে ও প্ররোচনায় সমিতির কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপদেষ্টা সুনীল চক্রবর্তী, বাকবিশিস চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক উত্তম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল মনসুর মো. হাবিব, বাশিস চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী, বাশিস চট্টগ্রাম অঞ্চলের যুগ্ম সম্পাদক শিমুল মহাজন প্রমুখ।
গত বছরের ১৭ জুলাই নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের ৪ নম্বর প্রশ্নে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি লিয়াকত আলীকে জাতির জনকের সঙ্গে তুলনা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
ওই ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
এর একদিন পর গত বছরের ১৯ জুলাই বাঁশখালী উপজেলা সদর থেকে গ্রেপ্তার হন শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া এবং বাঁশখালী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কালীপুর নাসেরা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহেরুল ইসলাম।
ওই রাতে বাঁশখালী থানার সেসময়ের এএসআই নুরুল আনোয়ার ৫৪ ধারায় একটি মামলা করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ১২৪ (ক) ধারা অনুসারে সেটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
এ মামলায় গত ১১ জুলাই হাই কোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন ১৩ শিক্ষক। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা বাঁশখালী আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন।
বাঁশখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন আবেদন নাকচ হলে ২৩ অগাস্ট দক্ষিণ চট্টগ্রামের ছয় উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও প্রশ্নকর্তা শিক্ষকসহ মোট ১৩ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।