টানা বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানি যোগ হয়ে মহেশখালে দেওয়া বাঁধের উজানে উত্তর-মধ্যম হালিশহর এলাকায়ও সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
Published : 05 Jul 2016, 10:07 PM
গত ২১ মে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু আঘাত হানার দিন উজানের বাসিন্দারা ওই বাঁধ কাটতে গেলে পুলিশ ও বন্দর কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সেদিনই মহেশখালের বন্দর রিপাবলিক ক্লাব সংলগ্ন অংশে নির্মিত বাঁধের স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়।
রোববার রাতে বন্দরনগরীতে ভারি বর্ষণ শুরু হয়; সঙ্গে যোগ হয় জোয়ারের পানি। সোমবার দুপুরের পর বাঁধের স্লুইস গেইট খুলে দেওয়ার পর ডুবেছে দুই দিকের এলাকাই। মঙ্গল ও বুধবারও বৃষ্টি এবং জোয়ারের সময় পানি উঠে আসায় পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি দেখা যায়নি।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের হিসাব মতে, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় ১৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে; সঙ্গে যোগ হয়েছে জোয়ারের পানি।
আর দেড়টার পর পানি উঠতে শুরু করে বাঁধের উজানে থাকা নিমতলা, আদর্শপাড়া, মুন্সীপাড়া, মাইজপাড়া, পোর্ট কলোনি, ইস্ট কলোনি, শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা ও পোর্ট কানেকটিং সড়কে।
২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদের কাউন্সিলর এইচ এম সোহেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার পর থেকে পানি বাড়তে শুরু করে। সন্ধ্যা ৬টার পর নামতে শুরু করে।
“মহেশখালের সল্টগোলা এলাকায় স্থায়ী স্লুইস গেইট নির্মাণ না হলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। কয়েকদিন আগেও বন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করেছি। তারা আশু কোনো সমাধানের আশ্বাস দিতে পারেনি।”
বাঁধের উজানে থাকা ৩৭ নম্বর উত্তর-মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুমন পাটোয়ারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিমতলা বিশ্বরোড মোড় থেকে বন্দর নতুন মার্কেট পর্যন্ত এলাকায় আগে পানি উঠতে দেখিনি। আজ সেখানেও পানি উঠেছে।
ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ শফিউল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার এলাকায় রোববারও পানি উঠেছে। সোমবার দেড়টার পর সর্বোচ্চ পানি ওঠে। পরে স্লুইস গেইট খুলে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে পানি কমতে শুরু করে।”
বন্দর কর্মকর্তারা এই বর্ষার পর সল্টগোলা এলাকায় স্থায়ী স্লুইস গেইট নির্মাণ কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “চার-পাঁচ দিন আগেও বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এ অবস্থা হয়নি।”
মহেশখালে থাকা বাঁধের স্লুইস গেইট নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে বলে জানান বন্দর কর্মকর্তা জুলফিকার।
কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানি মহেশখাল দিয়ে ঢুকে নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা ও আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করায় গত বছর রিপাবলিক ক্লাব সংলগ্ন মহেশখাঁলে ওই বাঁধ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বাঁধের উজানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৭ নম্বর উত্তর-মধ্যম হালিশহর ও ৩৮ নম্বর দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড।
বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই ওই দুই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা প্রতিবাদ করে আসছিলেন।
ওই বাঁধ একটি অংশকে জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচলেও অনেকে প্লাবনের ঝুঁকিতে পড়ায় সমালোচনা করে আসছেন পরিবেশবাদীরাও।