“আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে-বিদেশে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে,” বলেন তিনি।
Published : 12 Jun 2023, 10:17 PM
ইতিহাসের সত্যকে যারা বিতর্কিত করতে চায়, একদিন তারাই বিতর্কিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, “বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা এবং বেতারে এই ঘোষণা পাঠ নিয়ে জননেতা এম এ হান্নানকে যারা বিতর্কিত করতে চায়, ইতিহাসের শিক্ষা অনুযায়ী একদিন তারাই বিতর্কিত হবে।“
সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নানের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় এ মন্তব্য করেন মাহতাব।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ করেছিলেন সে সময়ের চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান।
চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এম এ হান্নান ১৯৭৪ সালের ১২ জুন মারা যান। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ দুপুরে কালুরঘাট বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর প্রেরিত স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রথম পাঠ করেছিলেন জননেতা এম এ হান্নান। এটাই প্রকৃত সত্য এবং স্বীকৃত ইতিহাস। এই সত্যকে যারা অস্বীকার করে তারা তো বাংলাদেশ চায়নি এবং এখনো চায় না।”
তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে-বিদেশে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অশুভ শক্তি আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কুশীলগরা ১/১১ এর মতই একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চায়।
“আরো লক্ষ্যণীয় যে, বিএনপির আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনিবন্ধিত জামায়াত মাঠে নেমেছে। বিএনপি মনে করছে তাদেরকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য আমেরিকা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে। তাই তারা উঠে-পড়ে লেগেছে যে, ২০০১ সালের মতই তারা ক্ষমতায় যাবে এবং আওয়ামী লীগ আর ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কচুকাটা করবে। কিন্তু তারা জানে না, বাঙালি ৭১ এর বিজয়ের জাতি এবং যুদ্ধ বিজয়ী শক্তি। এই শক্তি অবিনাশী এবং অনির্বাণ।”
নেতাকর্মীদের এম এ হান্নানের মত সাহসী ভূমিকায় অবর্তীণ হয়ে রাজপথ ও নির্বাচনী মাঠে থাকার প্রস্তুতি ও সংকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান মাহতাব।
সভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও নগর কমিটির সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জাহির করেননি। তিনি ১৯৭৮ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ছিল বাঙালির প্রতি স্বাধীনতা ঘোষণার একটি গ্রিন সিগন্যাল।
“জিয়াউর রহমান এও উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর এই সিগন্যাল পেয়ে সেনাবাহিনার বাঙালি অফিসার ও সৈনিকরা এবং ইপিআর ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। এটাই ছিল স্বাধীনতার বীজবপন।”
নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী ও দিদারুল আলম চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য বখতেয়ার উদ্দীন খান, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার।
এর আগে সকালে নগরীর স্টেশন রোডে চৈতন্যগলি কবরস্থানে এম এ হান্নানের কবরে দোয়া ও ফাতেহা পাঠ শেষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীসহ নেতারা।