Published : 01 May 2025, 10:04 PM
জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে যারা ছিলেন না, এখন ‘নির্বাচনের বিরুদ্ধে’ তারা অবস্থান নিচ্ছেন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া কাউকে বৈধতা দেবেন না জনগণ।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামে শ্রমিক দলের সমাবেশে তিনি বলেন, যারা ‘নির্বাচনের বিরুদ্ধে’ অবস্থান নিচ্ছেন তারা অনির্বাচিত সরকারের ‘সুবিধাভোগী’।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের মধ্যে দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি।
চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরী চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির নেতা আমীর খসরু বলেন, “যারা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে ছিল না, তারা এখন নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। তারা এখন নানা শর্ত দিচ্ছে, এই না হলে নির্বাচন হবে না, ওই না হলে নির্বাচন হবে না।”
তিনি বলেন, “এসব বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে কারণ, তারা জানে সুষ্ঠু নির্বাচনে গেলে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান মুখ থুবড়ে পড়বে। জনগণ তাদের এ সুযোগ বেশিদিন দেবে না।”
খসরু বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ছাড়া কাউকে ক্ষমতা গ্রহণের বৈধতা দেবে না। যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায়, জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মাটিতে তাদের কোনো ইচ্ছাও পূরণ হবে না।”
বর্তমান সরকারের সময় শ্রমিক স্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে বিএনপির দেওয়া ৩১ দফা কর্মসূচিতে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কল্যাণমূলক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি রয়েছে বলেও তুলে ধরেন তিনি।
সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশে এখন নির্বাচিত সরকার নেই। ফলে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা, পারিশ্রমিক ও চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। মালিক ও প্রশাসনের একচেটিয়া অবস্থানে শ্রমিকেরা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।”
শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের লড়াইয়ে বিএনপি শ্রমিকদের পাশে আছে দাবি করে দলটির নীতি নির্ধারণী কমিটির এ নেতা বলেন, “শ্রমিকদের আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণ এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ। যাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক না ছড়ায় এবং দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”
রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়ার সরকারের ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, “যদি দেশে একটি নির্বাচিত সরকার থাকত, তাহলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সংসদে আলোচনা হত, জনগণের মতামত বিবেচনা করা হত।
“অথচ এখন এমন সিদ্ধান্ত কে নিচ্ছে, কাদের সঙ্গে বসে নিচ্ছে, তা জাতি জানে না।”
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, “বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতিতেই কেবল এই করিডোর সম্ভব, তাও নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের শর্তে। তাহলে এখন যারা বাইরে বসে এসব দিচ্ছেন, তারা কীভাবে এত সাহস পাচ্ছেন?”
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া।