“বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাঙালিদের অধিকাংশই অদক্ষ; তাই এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের গতিও মন্থর;” বলেন তিনি।
Published : 21 Jan 2024, 09:04 PM
প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেছেন, “প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে যে বন্ধ্যাত্ব বিদ্যমান তা সমাজকে স্থবির করে দেয়। নতুন কারিকুলামের প্রধান লক্ষ্য হল আমাদের সন্তানদের দক্ষ, জ্ঞান ও বিজ্ঞানমনস্ক মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা।
“তাই একেবারে তৃণমূল স্তর থেকেই শিক্ষার্থীরা যাতে ভবিষ্যতের বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং তারাই একদিন আমাদের অর্থনীতি ও জাতীয় উৎপাদনে প্রধান কারিগর ও চালিকা শক্তি হবে।”
রোববার চট্টগ্রাম নগরীর কেসিদে রোডে নিজের প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
নতুন পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বলে জানান মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেন, “বর্তমানে প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করলেও মাধ্যমিক পর্যন্ত ১ কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করতে পারে। এই ২ কোটির মধ্যে মাত্র ২০ লক্ষ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত পাঠ গ্রহণ করতে পারে।
‘‘এ হিসেবে প্রচলিত শিক্ষা ও পাঠগ্রহণ কার্যক্রমে বিশাল অঙ্কের শিক্ষার্থী নিম্ন মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পাঠগ্রহণ করতে পারায় তারা দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত হতে পারছে না। বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাঙালিদের অধিকাংশই অদক্ষ। তাই এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের গতিও মন্থর।”
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে যে ২৯ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, এগুলোর অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা কাঠামো সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে। শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব না হলেও এখন থেকেই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারলে আমরা অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক দোকানপাট নয় মন্তব্য করে নওফেল বলেন, “শিক্ষার্থীরা যাতে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারে এবং নিজেরা নিজেদের সংস্থান করতে পারে, সেই দিকে শিক্ষক ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত সংশ্লিষ্টদের মনোযোগী হতে হবে।”
শিক্ষকদের পেশাদারিত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষকরা অবশ্যই রাজনীতি করবেন, কিন্তু অন্ধভাবে রাজনৈতিক দলের তোষামোদকারী হয়ে নিজের হীন স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা না করাটাই বাঞ্ছনীয়। এতেই শিক্ষাঙ্গনে নৈতিকতা ও সৃজনশীলতার বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে এবং শিক্ষাঙ্গনে শত ফুল বিকশিত হবে।
“শিক্ষাঙ্গনে ভর্তি বাণিজ্য এবং অন্য কোন অনৈতিকতা ও অনিয়মের সাথে কেউ যুক্ত হলে তাদেরকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।”
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।