পাকিস্তানের সাবেক স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরী স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলেন।
Published : 24 Feb 2025, 03:16 PM
পাকিস্তানের সাবেক স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে ছাত্রদের একটি হল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’ সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি আবাসিক হল, অনুষদ এবং জিমনেসিয়ামের নাম পরিবর্তনেরও সিদ্ধান্ত সভায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুরাতন শামসুন নাহার হলের পরিত্যক্ত ভবনের স্থলে নতুন একটি ছাত্রাবাস তৈরির পরিকল্পনা আছে। সেখানে ছাত্রাবাসটি নির্মাণ করা হলে সেটি ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে হবে।”
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে পাকিস্তানের সাবেক স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর অবদানের কথা স্মরণ করেন অনেকেই।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও আইন অনুষদের কাছেই ছিল শামসুন নাহার হল। পরে নতুন করে শামসুন নাহার হল তৈরির পর প্রায় দুই দশক আগে আগের ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে শনিবারের সিন্ডিকেট সভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে নির্মিত বিভিন্ন আবাসিক হল, জিমনেসিয়াম এবং সাবেক এক উপাচার্যের নামে নির্মিত একটি অনুষদ ভবনের নাম পরিবর্তনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নতুন নামানুসারে, জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘বিজয় ২৪’ হল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘শহীদ ফরহাদ হোসেন হল’; যিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাগুরায় নিহত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন ফরহাদ হোসেন।
এছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘নবাব ফয়েজুন্নেসা হল’ ও বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ কামাল জিমনেসিয়ামের নাম পাল্টে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়াম’ এবং বঙ্গবন্ধু উদ্যানের নাম পাল্টে ‘জুলাই বিপ্লব উদ্যান’ রাখা হয়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নাম পাল্টে রাখা হয় ‘শহীদ হৃদয় তরুয়া ভবন’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত হয়েছিলেন ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া।
নির্মাণাধীন দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবনটির নাম রাখা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক প্রয়াত আবু ইউসুফের নামে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তাকে ২০০৯ সালে তাকে চতুর্দশ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালে উপাচার্য থাকাকালীন সময়ে তিনি মারা যান। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি উপ-উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন।