“দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে এ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করায় ফিরোজ খানকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
Published : 01 Nov 2024, 10:00 PM
চট্টগ্রামে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বাদী ফিরোজ খানকে বিএনপির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ফিরোজ খান নগরীর ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। শুক্রবার তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তর সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইদ্রিস আলী।
চান্দগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আজম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত পত্রে ‘দলীয় নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে’ জড়িত থাকার অভিযোগে ফিরোজ খানকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
বিএনপির দপ্তর সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইদ্রিস আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফিরোজ খান কোতোয়ালি থানায় সনতনী জাগরণ মঞ্চের ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের যে মামলাটি করেছেন, সেটি তার নিজস্ব চিন্তায় করেছেন। এরসাথে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।
“দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে এ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করায় ফিরোজ খানকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া রঙের আরেকটি পাতাকা টাঙানোর অভিযোগে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের ওই মামলা করেন ফিরোজ খান। তবে মামলার এজাহারে তিনি নিজের দলীয় পরিচয় দেননি।
সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীরকে প্রধান আসামি করে মোট ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়। পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫/২০ জনকে আসামি করেছেন বাদী।
চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী ছাড়াও ইসকন প্রবর্ত্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীকে মামলায় ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
ফিরোজের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, লালদীঘি মাঠের সমাবেশের দিন নিউ মার্কেটে জাতীয় পতাকার ওপর ‘সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের’ গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করে দেওয়া হয়, যা রাষ্ট্রের ‘অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার শামিল’।
‘দেশের সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা প্রদর্শন ও দেশের অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার মানসে’ এভাবে পতাকা অবমাননা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলার এজাহারে বলা হয়, “জাতীয় পতাকার ওপরে ধর্মীয় পাতাকা উত্তোলন করে আসামিরা দেশের ভেতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর করার রাষ্ট্রদ্রোহ কাজে লিপ্ত আছে।”
এ মামলার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে চেরাগী পাহাড় মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেখান থেকে শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে দেশের ৬৪ জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন মঞ্চের সংগঠকরা।
এরপর শুক্রবার দুপুরে মামলার বাদী ফিরোজ খানকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সেজন্য বিকালে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান সনাতন জাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাশ। ফিরোজ খানকে মামলায় ইন্ধনদাতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তিনি।
দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে ফিরোজ খানের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।