“এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম। এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমার কাছে আসবে। তখন খেলা শুরু হবে।”
Published : 16 Mar 2025, 08:50 PM
ঢাকায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের গ্রেপ্তার নিয়ে তার স্ত্রী শারিমন আক্তার তামান্নার প্রতিক্রিয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সেই ভিডিওতে তিনি ‘কাড়ি কাড়ি’ টাকা খরচ করে সাজ্জাদকে জামিনে বের করে আনার কথা বলেছেন। পাশাপাশি তার বিরোধী পক্ষকে হুমকি দিয়ে বলেছেন “এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা।”
তামান্না তার ফেইসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি শেয়ার করলেও পরে তা সরিয়ে নেন। তবে ততক্ষণে সেটি কপি করে ফেইসবুকে ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে।
তামান্না ভিডিওতে বলেন, “আমার জামাই গতকালকে অ্যারেস্ট হইছে। এটা নিয়ে এত হায় হুতাশ করার কিছু নাই। ঠিক আছে, মামলা যখন আছে অ্যারেস্ট হবেই। এগুলো নিয়ে এত দুঃখ করে কান্নাকাটি করার কিছুই নাই। আপনারা যারা ভাবতেছেন আমার জামাই অ্যারেস্ট হইছে, আর কোনদিন বের হবে না, তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।
ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, আমরা কাড়ি কাড়ি বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে। যারা এ ঘটনা ঘটাইছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না মাথায় রাইখো। এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম। এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমার কাছে আসবে। তখন খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করেছ তোমরা, শেষ করব আমরা। ঠিক আছে?
“যারা আমার জামাই সাজ্জাদের সাপোর্টার আছ, তারা তারা দোয়া কর, যাতে ১০/১২ দিনের মধ্যে জামিন করায় ফেলতে পারি।”
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শারিমন আক্তার তামান্নার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
গ্রেপ্তারের সময় পুলিশেকে গুলি করে পালানো চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে শনিবার রাতে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।
রোববার সংবাদ সম্মেলন করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, প্রবাসে অবস্থান করা ‘বড়’ সাজ্জাদের প্রশ্রয়ে ছোট সাজ্জাদ চট্টগ্রামের বায়েজিদ, চান্দগাঁও এলাকায় চাঁদাবাজি ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. জাহাঙ্গীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাজ্জাদের বিরুদ্ধে জোড়া খুনসহ ১৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে সবগুলো মামলায় রিমান্ডে আনা হবে।
প্রথম ধাপে তাকে চান্দগাঁও থানায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
গত বছরের ২১ অক্টোবর বিকালে চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়া এলাকায় দোকানে বসে চা পানের সময় তাহসিন নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে কালো রঙের একটি গাড়িতে করে আসা লোকজন।
ওই ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় তাহসিনের বাবার করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয় পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে।
হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের জামালের ছেলে সাজ্জাদ নগরীর বায়েজিদ, অক্সিজেন, চান্দগাঁও এলাকায় পরিচিত ‘ছোটসাজ্জাদ’ বা ‘বুড়ির নাতি’ হিসেবে।
দুই যুগ আগে চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতুর সংযোগ সড়কে দিনের বেলায় আড়াআড়ি বাস রেখে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীবাহী মাইক্রোবাস আটকে গুলি চালিয়ে আটজনকে হত্যার আসামি ছিলেন বড় সাজ্জাদ। তার অনুসারী হিসেবে তার পক্ষে বায়েজিদ ও চান্দগাঁও এলাকায় চাঁদাবাজি করেন ছোট সাজ্জাদ।