এ সংঘর্ষের ঘটনার পর ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল নেতারা পরস্পরকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন।
Published : 21 Nov 2024, 10:40 PM
দীর্ঘ ১৫ বছর পর চট্টগ্রামের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের হল খুলে দেওয়ার পর সিট বরাদ্দ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইসলামী ছাত্র শিবির ও ছাত্রদলের কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার এ সংঘর্ষের ঘটনার পর ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল নেতারা পরস্পরকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) ফয়সাল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হলের সিট বরাদ্দ নিয়ে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।”
২০০৯ সাল থেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রাবাস বন্ধ ছিল। বুধবার হলের আসন বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশের সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ঢিল ছোড়াছুড়ি চলে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. হানিফের দাবি, প্রশাসনকে ‘জিম্মি করে’ ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের পছন্দমত সিট বরাদ্দ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হলে ওঠার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করায় ‘ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের’ নিয়ে শিবির কর্মীরা হেলমেট পড়ে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
“ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গিয়ে শিবির কর্মীদের প্রতিহত করে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।”
ছাত্রদল নেতা হানিফ বলেন, “১৫ বছর পর কোনো ধরনের সংস্কার ছাড়া হল খুলে দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে শিবির কর্মীরা কলেজ প্রশাসনকে জিম্মি করে তাদের পছন্দমত সিট বরাদ্দ নিয়েছে।”
অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের হলে সিট বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও এ সেমিন্টারের ১১ জন শিবির কর্মী হলে সিট বরাদ্দ পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন হানিফ।
তিনি বলেন, “হলের সিট বরাদ্দের আগে আমরা প্রিন্সিপাল স্যারকে বলেছিলাম যোগ্যতার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দেওয়ার জন্য। তখন প্রিন্সিপাল স্যার আমাদের আশ্বাস্ত করেছেন এবং বলেছেন অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের সামনে পরীক্ষা, এক মাসের জন্য তাদের কোনো আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে না। কিন্তু শিবির সেটা মানেনি। তারা তাদের পছন্দমত আসন নিয়েছে।”
এদিকে এ ঘটনার জন্য পাল্টা ছাত্রদলকে দায়ী করেছে ইসলামী ছাত্র শিবির। সংগঠনের সভাপতি জাকির হোসেনের ভাষ্য, তার আর ছাত্রত্ব নেই। তিনি এক বছর আগে সভাপতির দায়িত্বে থাকলেও এখন নেই। বর্তমানে পলিটেকনিক ইসস্টিটিউট ক্যাম্পাসে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কোনো সাংগঠনিক কমিটি বা কার্যক্রম নেই।
নিজেকে সাবেক শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, “আমি ক্যাম্পাসে নেই। বিভিন্ন জন ফেইসবুকে লাইভ করেছে সেখানে দেখেছি এবং যতটুকু শুনেছি ছাত্রদল তাদের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের গুন্ডাদের নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
“আমি শুনেছি, ছাত্রদল প্রিন্সিপালকে তাদের হলের সিট বরাদ্দের দাবি করেছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেছে কোন কোটা হবে না। মেধা এবং ভৌগলিক দূরত্ব বিবেচনায় যারা সিট পাওয়ার যোগ্য, তারাই সিট পাবে। কিন্তু ছাত্রদলের কথা হচ্ছে তাদের শিক্ষার্থীদের আসন দিতে হবে।”
ছাত্রশিবির নেতা জাকির বলেন, “শুনেছি গতকাল প্রশাসন হলের সিট বরাদ্দ করে তালিকা দিয়েছে। আজকে তারা (ছাত্রদল) পুনরায় তাদের আসন বরাদ্দ দেওয়ার দাবি করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যুক্তি, আপনাদের (ছাত্রদল) কর্মীরা যদি মেধা এবং ভৌগলিক দূরত্বের মানদণ্ডে সিট পেয়ে থাকে, তারাও পাবে আমরাও পাব। কিন্তু ছাত্রদল সেটা মানতে রাজি নয়।”
জাকিরের অভিযোগ, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি উপেক্ষা করে ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে। অনেকেই আহত হয়েছেন।”