Published : 27 Oct 2023, 07:49 PM
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শামসুর রহমান। সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফের শতকের স্বাদ পেলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। সঙ্গে তাওহিদুল ইসলামের ফিফটিতে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে বড় সংগ্রহ পেল সিলেট বিভাগ।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের তৃতীয় রাউন্ডে প্রথম স্তরের এই ম্যাচে ৪১৫ রান করেছে সিলেট। শুক্রবার দ্বিতীয় দিন শেষে রংপুরের রান ৬ উইকেটে ১১৪। এখনও ৩০১ রানে পিছিয়ে আছে তারা।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২১তম সেঞ্চুরিতে ১৬০ রান করেছেন শামসুর। ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের ২৫২ বলের ইনিংসটি গড়া ১৫ চার ও ২ ছক্কায়।
২০৩ বলে ৬২ রান করেছেন তাওহিদুল। পঞ্চম উইকেটে তার সঙ্গে শামসুরের জুটিতে এসেছে ১৮০ রান।
১০৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে রংপুরের সফলতম বোলার আসাদুল্লাহ গালিব। ৬ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার এই স্বাদ পেলেন ২১ বছর বয়সী পেসার।
খুলনার আবু নাসের স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৪ উইকেটে ২৬৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে সিলেট। প্রথম দিন ৭০ রানে অপরাজিত শামসুর শতক পূর্ণ করেন ১৭৬ বলে। ২৩২ বলে পা রাখেন দেড়শতে।
একটা পর্যায়ে সিলেটের রান ছিল ৫ উইকেটে ৩৯১। এরপর ২৪ রানের মধ্যে তারা হারায় শেষ ৫ উইকেট। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে গালিবের বলে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় শামসুরের ইনিংস।
জবাবে সিলেটের পেসারদের তোপে শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রংপুর। দিন শেষে ১০৬ বলে ৫০ রানে অপরাজিত আছেন অধিনায়ক তানবির হায়দার।
সৈয়দ খালেদ আহমেদ ৩টি ও আবু জায়েদ চৌধুরি ২টি উইকেট নিয়েছেন। আরেক পেসার রেজাউর রহমান রাজার শিকার একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট বিভাগ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৬৭/৪) ১৩২.৪ ওভারে ৪১৫ (শামসুর ১৬০, তাওহিদুল ৬০, রাহাতুল ১৪, রেজাউর ১, আবু জায়েদ ০, খালেদ ১২*, নাবিল ৮; গালিব ২৫.৪-৩-১০৭-৫, গাফফার ২৪-৫-৫২-১, রবিউল ৯-১-৩৪-০, নবিন ১৪-২-৩৭-০, নিহাদউজ্জামান ৩৭-৯-৮২-৩, রিশাদ ২৩-০-৯৬-১)
রংপুর বিভাগ ১ম ইনিংস: ৪১ ওভারে ১১৪/৬ (রবিউল ১২, মাইশুকুর ১৪, অনিক ১, মোসাদ্দেক ৯, তানবির ৫০*, নবিন ১২, রিশাদ ৪, নিহাদউজ্জামান ২*; আবু জায়েদ ১০-৩-২২-২, খালেদ ১১-১-৩৯-৩, রেজাউর ৭-১-২৬-১, নাবিল ১০-৮-৮-০, রাহাতুল ৩-০-১১-০)
দ্বিতীয় দিনও পণ্ড কক্সবাজারে
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম স্তরের আরেক ম্যাচে দ্বিতীয় দিনেও খেলা হয়নি ভেজা আউটফিল্ডের কারণে। ঢাকা মেট্রো ও ঢাকা বিভাগের ক্রিকেটারদের তাই অলস দিন কেটেছে।
ঘূর্ণিঝড় হানুমের প্রভাবে পানি উঠে গিয়েছিল এই মাঠে। এখনও পুরোপুরি শুকায়নি আউটফিল্ড।
সুযোগ হাতছাড়া মুমিনুলের
ফের শতকের সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন মুমিনুল হক। জাতীয় দলের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক এবার রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে আউট হয়েছেন ৮৮ রানে। তার দল চট্টগ্রাম বিভাগ অবশ্য লিড নেওয়ার পথে আছে।
দ্বিতীয় স্তরের এই ম্যাচে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে প্রথম দিনের ৮ উইকেটে ৩০৯ রানের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনে আর কোনো রান যোগ করতে পারেনি রাজশাহী।
দিনের প্রথম চার বলে রাজশাহীর শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সৈকত আলি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তৃতীয়বার এই স্বাদ পেলেন ২৯ বছর বয়সী পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
জবাবে দিন শেষে চট্টগ্রামের রান ৫ উইকেটে ৩০৯।
মুমিনুলের ১১৫ বলে ৮৮ রানের ইনিংস গড়া ৮টি চারে। এর আগে প্রথম রাউন্ডে তিনি আউট হয়েছিলেন ৯৪ রান করে।
১১৪ বলে ৫৩ রান করেছেন ওপেনার পারভেজ হোসেন। ইয়াসির আলি ৬৪ বলে করেছেন ৪৮।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী বিভাগ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩০৯/৮) ৯০.৪ ওভারে ৩০৯ (আশিক ৩৫, মোহর ০, আসাদুজ্জামান ০; ইফরান ১৪-২-৩৬-১, এনামুল ১৫-১-৮০-০, মহিদুল ১৮.২-২-৭৩-১, সৈকত ১১.৪-৩-৩৮-৫, নাঈম ২৯.৪-৯-৭৫-৩, শামীম ২-০-৫-০)
চট্টগ্রাম বিভাগ ১ম ইনিংস: ৮৭ ওভারে ৩০৯/৫ (পিনাক ৩৩, পারভেজ ৫৩, সৈকত ২৭, মুমিনুল ৮৮, ইয়াসির ৪৮, শামীম ২৪*, শুক্কুর ১২*; মোহর ২০-৫-৪৬-১, আসাদুজ্জামান ১৪-০-৬৬-১, সাব্বির ৯-১৪-১৯-১, হাবিবুর ৪-১-১৫-০, তাইজুল ৩০-৬-৮৩-১, সানজামুল ৬-০-৪০-১, মেহেরব ৪-০-১৮-০)
মইনের দারুণ ইনিংসে উদ্ধার বরিশাল
আট নম্বরে নেমে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে পঞ্চাশ ছাড়ানো দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন মইন আলি। তাতে অল্পে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা এড়িয়ে প্রথম ইনিংসে লিড পেয়েছে বরিশাল বিভাগ।
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের এই ম্যাচে প্রথম দিনে ১৫ উইকেট পতনের পর দ্বিতীয় দিনে পড়েছে সব মিলিয়ে ১১টি।
৫ উইকেটে ৮০ রান নিয়ে দিন শুরু করে একটা পর্যায়ে বরিশালের স্কোর হয়ে যায় ৮ উইকেটে ১২১। সেখান থেকে কামরুল ইসলাম রাব্বির সঙ্গে নবম উইকেটে ৯৮ রানের জুটিতে দলের রান দুইশ পার করেন মইন। ২২১ রানে অল আউট হয়ে ৭৯ রানের লিড পায় তারা।
১০৩ বলে ৮ চারে ৭৬ রান করেন মইন। রাব্বি ১০৩ বলে করেন ৩০ রান।
আগের দিন ৪ উইকেট নেওয়া সৌম্য সরকার ধরতে পারেননি আর কোনো শিকার।
প্রথম দিনে ১৪২ রানে গুটিয়ে যাওয়া খুলনা দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৬ উইকেটে ১২২ রানে। ৪৩ রানে এগিয়ে আছে তারা।
প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ব্যর্থ হয়েছেন ইমরুল কায়েস, এনামুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেনরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা বিভাগ ১ম ইনিংস: ১৪২
বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৮০/৫) ৮২.৫ ওভারে ২২১ (রুয়েল ৬, শামসুল ১৮, মইন ৭৬, সোহাগ ৮, রাব্বি ৩০, তানভির ১*; আল আমিন ১৬-৩-৪১-২, জিয়াউর ৮-২-২৬-০, হালিম ১১-০-৫০-১, সৌম্য ১৯-৬-৪৩-৪, টিপু ১৬-৩-২৭-২, মিঠুন ৩-১-৪-০, নাহিদুল ৪.৫-০-১৩-১, এনামুল ৩-০-৬-০, আফিফ ২-০-২-০)
খুলনা বিভাগ ২য় ইনিংস: ৩২ ওভারে ১২২/৬ (ইমরুল ১৫, এনামুল ১, মিঠুন ৪, আফিফ ১৩, নুরুল ৪৫, নাহিদুল ২৫, সৌম্য ৫*, জিয়াউর ১২*; রাব্বি ৩-০-১৬-১, রুয়েল ৩-০-২১-১, তানভির ৭-১-২৪-১, মইন ৮-২-২৩-১, সালমান ৫-০-২২-০, মইনুল ৬-২-১৪-১)