‘রুবেল খেলায় ফিরিয়েছে’, রুবেলের ওভারেই ফসকে গেছে ম্যাচ

বিপিএলের ফাইনালে শুরুতে দারুণ বোলিং করলেও পরে খরুচে এক ওভারেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়ায় ভূমিকা রেখেছেন অভিজ্ঞ পেসার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2023, 05:38 AM
Updated : 17 Feb 2023, 05:38 AM

প্রথম স্পেলে উইকেট। দলেরও তা প্রথম ব্রেক থ্রু। দ্বিতীয় স্পেলে প্রথম ওভারেই আরেকটি উইকেট। এই ম্যাচটি তো স্মরণীয় হয়ে থাকারই কথা রুবেল হোসেনের। কিন্তু দুঃস্বপ্নের এক ওভারেই ম্যাচটি তার জন্য হয়ে উঠল ভুলে যাওয়ার মতো। ওই এক ওভারেই ম্যাচের ভাগ্য বদলে গেছে, মানছেন সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। তবে ওই ওভারের আগ পর্যন্ত রুবেলই যে সেরা বোলার ছিলেন, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন অধিনায়ক।

বিপিএলের ফাইনালে বৃহস্পতিবার ১৭৫ রানের পুঁজি পাওয়া সিলেটের হয়ে বোলিংয়ে প্রথম উইকেট এনে দেন রুবেল। ফিরিয়ে দেন তিনি বিপজ্জনক সুনিল নারাইনকে। পাওয়ার প্লেতে ২ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।

পরে লিটন কুমার দাস ও জনসন চার্লস যখন গড়েন দারুণ জুটি, তখনও দলের ত্রাতা রুবেল। ত্রয়োদশ ওভারে তাকে আক্রমণে ফেরান অধিনায়ক। লিটনকে ফিরিয়ে রুবেল ভেঙে দেন ৭০ রানের জুটি। একটি লেগবাইসহ ওই ওভার থেকে আসে স্রেফ ৪ রান।

৩ ওভারে ১৬ রান দেওয়া বোলার এক ওভারেই আরও অনেক বেশি খরচ করে ফেলেন একটু পর। ৪ ওভারে যখন সিলেটের প্রয়োজন ৫২ রান, ছক্কায় তখন রুবেলের ওভার শুরু করেন মইন আলি। পরে দুটি ছক্কা, একটি চার মারেন জনসন চার্লস। ওই ওভার থেকে আসে ২৩ রান। কুমিল্লার সমীকরণ হয়ে ওঠে সহজ।

এরপরও কিছুটা লড়াইয়ে ছিল সিলেট। ১৮তম ওভারে তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব দেন ৮ রান। তবে ১৯তম ওভারে লুক উডের ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে ম্যাচ কার্যত শেষ করে দেন চার্লস।

তবে মোড় বদলের শুরু যে রুবেলের ওভারে, সেটায় কোনো সংশয় নেই। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফিও সেটিই বললেন। ওই সময়ে রুবেলকে বোলিংয়ে আনার কারণও ব্যাখ্যা করলেন তিনি।

“ওখানে যে-ই বোলিং করত, এরকম ওভার হলে ম্যাচ বেরিয়ে যাবে, এটি খুবই স্বাভাবিক। দিনের সেরা বোলার ছিল রুবেলই। ওই সময় এমন একটা অবস্থা ছিল, রুবেলকে বোলিং দিতে হতো, নয়তো থিসারা পেরেরা কিংবা সাকিব (তানজিম হাসান)। আমি মোটামুটি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, সাকিব আগের ম্যাচে যেভাবে বোলিং করেছে, রাউন্ড দা উইকেটে এসে আজকেও ভালো করবে (শেষের দিকে)। কারণ উইকেটে বল একটু গ্রিপ করছিল।”

“এই পাশে যেহেতু একটু ছোট ছিল, সেরা বোলারকে (রুবেল) বোলিং করানো ছাড়া আসলে উপায় ছিল না। শুধু রুবেল নয়, যে কেউ ওই সময়ে বোলিং করে এত রান দিয়ে দিলে, পরে আর ম্যাচে ফেরা কঠিন হয়ে যায়। যে কারও ক্ষেত্রেই হতে পারত।”

তবে রুবেলের প্রতি খুব বেশি কঠোর হতে চান না অধিনায়ক, অভিজ্ঞ পেসারকে তুলতে চান না কাঠগড়ায়।

“সত্যি বলতে, আজকে আমাদের খেলায় ফিরিয়েছে ও। যদিও ওই সময় প্রতি ওভারে ১৩ করে লাগত, কঠিন ছিল, ফাইনালের মতো ৪ ওভারে ৫২ করা কঠিন। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলো আসল। ওই সময়ে একটি ছয়-চার হতেই পারে, বা দুটিও হতে পারে। ঘুরে দাঁড়ানোটা গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে না পারলে এই ধরনের জিনিস হতেই পারে।”

“তার পরও, আমি মনে করি। রুবেলই আমাদের আজকে ম্যাচে ফিরিয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি ওভার এদিক-সেদিক হয়ে গেছে। এটিই আর কী…।”