কোহলির রেকর্ড-যাত্রা থামল ৭৬৫ রানে

ফাইনালে ফিফটি করে বিশ্বকাপে রানের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করলেন ভারতীয় গ্রেট।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিআহমেদাবাদ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2023, 11:39 AM
Updated : 19 Nov 2023, 11:39 AM

১ লাখের বেশি দর্শকের দীর্ঘশ্বাস এবং এরপরই নীরবতা… গ্যালারিতে হতবাক আনুশকা শার্মা, ডাগ আউটে রাভিচন্দ্রন অশ্বিনের মাথায় হাত, টিভি পর্দার সামনে নিশ্চিতভাবেই স্তব্ধ কোটি কোটি ভারতীয়। ভিরাট কোহলি আউট! অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের করা বুক সমান উচ্চতার ডেলিভারি ভেঙে দিল অসংখ্য ভারতীয় সমর্থকের বুক।

অল্পতে অবশ্য ফেরেননি কোহলি। বিশ্বকাপে স্বপ্নযাত্রায় ফাইনালেও করেছেন ফিফটি। তবে পরিস্থিতি এমন ছিল যে, দল তার কাছে চাইছিল বড় কিছু। সেটিই হলো না কামিন্সের বল স্টাম্পে টেনে আনায়। আউট হয়ে গেলেন তিনি ৬৩ বলে ৫৪ রান করে। ব্যাট হাতে কোহলির বিশ্বকাপ শেষ হলো ৭৬৫ রানে।

এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড ও প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে ৭০০ রান ছোঁয়ার কীর্তি গড়েছেন তিনি আগেই। ফাইনালে ফিফটি করে নিজের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করলেন তিনি।

১১ ইনিংস খেলে তার গড় ৯৫.৬২, স্ট্রাইক রেট ৯০.৩১।

এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ফিফটি ছোঁয়া ইনিংসের রেকর্ডও তিনি গড়েছিলেন আগেই। ফাইনালের ফিফটিতে সেটিও বাড়িয়ে নিলেন আরও। ১১ ইনিংসের ৯টিতেই তিনি পৌঁছেছেন পঞ্চাশে। এর মধ্যে ৩টিকে রূপ দিয়েছেন শতরানে।

সেই ৩ সেঞ্চুরির একটি করেছিলেন সেমি-ফাইনালে। ফিফটি করলেন ফাইনালে। আর কোনো ভারতীয় ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি।

২০০৩ বিশ্বকাপে সাচিন টেন্ডুলকারের করা ৬৭৩ রানের রেকর্ড পেছনে ফেললেও তার বাউন্ডারির রেকর্ড ছুঁতে পারেননি কোহলি। ওই আসরে সবচেয়ে বেশি ৭৫টি বাউন্ডারি মেরেছিলেন টেন্ডুলকার, এক বিশ্বকাপে যা রেকর্ড। পরে ২০০৭ আসরে ৬৫৯ রানের পথে ৬৯টি চার মেরেছিলেন ম্যাথ হেইডেন। এবার কোহলি থামলেন ৬৮ বাউন্ডারিতে।

ফাইনালে এ দিন কোহলির শুরুটা হয়েছিল দারুণ কয়েকটি বাউন্ডারি মেরে। মিচেল স্টার্কের ওভারে উড়িয়ে মেরে একটি বাউন্ডারির পর ওই ওভারেই টানা দুটি বাউন্ডারি মারেন দৃষ্টিনন্দন দুটি শটে। পরে আরেকটি চার মারেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে কাট শটে।

এরপরই রোহিত শার্মা ও শ্রেয়াস আইয়ার অল্প সময়ের মধ্যে বিদায় নিলে সাবধানী হয়ে যান কোহলি। ঝুঁকির পথ পরিহার করেন। তবে খোলসে ঢুকে যাননি। এক-দুই করে নিয়ে ইনিংস গড়তে থাকেন। ফিফটিতে পা রাখেন ৫৬ বলে।

একটু পরই কামিন্সের সেই ডেলিভারি। শর্ট অব লেংথ থেকে বলকে অনেকটা লাফিয়ে তোলেন কামিন্স। মন্থর উইকেটে কিছুটা থমকে আসে বল। কোহলি শরীর থেকে একটু দূরে ব্যাট পেতে দেন। ব্যাটের কানায় লেগে বল ছোবল দেয় স্টাম্পে। হতাশায় কয়েক মুহূর্ত ক্রিজেই দাঁড়িয়ে থাকেন কোহলি।

শেষটা হয়তো তার প্রত্যাশামতো হলো না। তবে এই বিশ্বকাপে যা করলেন তিনি, রেকর্ড-অর্জন-কীর্তি ভরা তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে দ্যুতিময় প্রাপ্তিগুলোর মধ্যেই থাকবে তা। শেষ পর্যন্ত যদি বিশ্বকাপ জিততে পারে ভারত, কোহলির অর্জনের মুকুটে উজ্জ্বলতম পালক হবে এই বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সই।