মিলারকে ছাপিয়ে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নায়ক হেড

রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এই ওপেনার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2023, 05:56 PM
Updated : 16 Nov 2023, 05:56 PM

২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর ধাক্কা অনেকটাই সামলে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। হাইনরিখ ক্লসেনের সঙ্গে ডেভিড মিলারের দারুণ জুটিতে পেয়ে যায় মোমেন্টামও। পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে লাগামটা ফের অস্ট্রেলিয়ার দিকে নিয়ে আসেন ট্র্যাভিস হেড। পরে ‘ট্রিকি’ রান তাড়ায় আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। সেমি-ফাইনালের নাটকীয় লড়াইয়ে ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জয়ের নায়ক তাই হেড। 

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ৩ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার ২১২ রান ১৬ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে গেছে টুর্নামেন্টের সফলতম দলটি। এক আসর পর তারা আবারও ফাইনালে, সব মিলিয়ে খেলবে অষ্টমবার।

বল হাতে ৫ ওভারে ২১ রানে ২ উইকেট নেন হেড। পরে ৪৮ বলে ২ ছক্কা ও ৯ চারে খেলেন ৬২ রানের ইনিংস। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের সৌজন্যে সেঞ্চুরি হাঁকানো ডেভিড মিলারকে পেছনে ফেলে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

ওয়ানডেতে এ নিয়ে চতুর্থবার ম্যাচ সেরা হলেন হেড, আগের তিনটিতেই করেছিলেন সেঞ্চুরি। এর একটি চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে। চলতি আসরেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিষেক হয় বিস্ফোরক এই ওপেনারের। সেদিন ১০৯ রানের ইনিংসের সৌজন্য জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

প্রতিপক্ষ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা যেন একটু বেশিই পছন্দের হেডের। কেবল এই দলের বিপক্ষেই তিন সংস্করণেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনি। 

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে যখন হেড বল হাতে পান তখন জমে গেছে ক্লসেন ও মিলারের জুটি। তাদের ব্যাটে বাড়ছিল রানের গতি। দুই ব্যাটসম্যানকে ভাবাতে পারছিলেন না কেউই। রান বিলিয়ে যাচ্ছিলেন মূল স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা।

সেই সময়ে এসে দারুণ এক ডেলিভারিতে ক্লসেনকে ফিরিয়ে ৯৫ রানের জুটি ভাঙেন হেড। পরের বলেই তিনি এলবিডব্লিউ করে দেন অলরাউন্ডার মার্কো ইয়ানসেনকে।

এরপর দারুণভাবে দায়িত্ব সামলান নিজের আসল কাজ, ব্যাটিংয়ে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর টানা তিন ইনিংসে ব্যর্থ ছিলেন তিনি। তিন ম্যাচেই অফ স্টাম্পের বাইরে বলে খোঁচা মেরে আউট হয়েছিলেন ১১, শূন্য ও ১০ রানে। যেন ঠিক সময়েই ফিরলেন স্বরূপে।

মার্কো ইয়ানসেন, কাগিসো রাবাদারাও সেই চেষ্টা করেন। তবে এদিন অফ স্টাম্পের বাইরের বল ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন হেড। ঝুঁকি নিয়ে খেলেছেন দারুণ কিছু শট। সেগুলো কাজেও লেগেছে, তরতর করে বেড়েছে রান।

ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে কেবল ৬.১ ওভারে গড়েন ৬০ রানের জুটি। পরে তৃতীয় উইকেটে স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে উপহার দেন ৪৫ রানের আরেকটি ভালো জুটি। ঝড় তুলে তিনি ফেরার সময় অস্ট্রেলিয়ার রান ১৪.১ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৬।

উড়ন্ত সূচনা পাওয়ায় পরের ব্যাটসম্যানরা উইকেটে গিয়ে থিতু হওয়ার যথেষ্ট সময় পায়। ঝুঁকি নেওয়ার চাপও ছিল না। তবুও কেউ কেউ ঝুঁকি নেন, কিন্তু ফিল্ডিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বাজে দিনের জন্য চড়া মাশুল দিতে হয়নি অস্ট্রেলিয়ার!