শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) প্রশাসনিক অস্থিরতা নতুন মোড় নিয়েছে। লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির কার্যক্রম দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন দেশটির আপিল আদালত।
চলমান বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতায় পুরো বোর্ডকে বরখাস্ত করে সোমবার একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির ঘোষণা দিয়ে গেজেট জারি করেন শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রী রোশান রানাসিংহে। কমিটির প্রধান করা হয় বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে।
গেজেট বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে এসএলসি সভাপতি শাম্মি সিলভার আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানির পর মঙ্গলবার আপিল আদালত ওই আদেশ দেন।
পুরো বোর্ডকে বরখাস্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি ঘোষণার বিষয়টি শ্রীলঙ্কা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত গড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়, এমনকি মঙ্গলবারের সংসদ অধিবেশনেও বিতর্ক হয়।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি নিয়োগের পদক্ষেপের কথা গণমাধ্যমে জানতে পারেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। ক্রীড়া মন্ত্রী রানাসিংহে তার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন যে, সিদ্ধান্তটি শুধুমাত্র ক্রীড়া মন্ত্রীর এখতিয়ারে এবং মন্ত্রিসভা বা প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপনের পর সবকিছু তদন্তের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রী আলী সাবরির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি উপ-কমিটি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে রানাসিংহেও উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসিডেন্টের মিডিয়া অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মন্ত্রিসভা বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি বিশেষ উপ-কমিটি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে...এই উপ-কমিটির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থার সুপারিশ করা।”
সংসদ অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় মঙ্গলবার রানাসিংহে বলেন, প্রেসিডেন্ট তাকে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি প্রত্যাহার করে নিতে বলেছেন।
শাম্মি সিলভার নেতৃত্বাধীন বোর্ডের বিরুদ্ধে আর্থিক অপব্যবহার এবং অব্যবস্থাপনার জন্য প্রায়ই অভিযোগ তোলেন রানাসিংহে। সোমবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “এরা জনগণের অর্থ ভোগ করছে। প্রেসিডেন্ট, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক যদি আমাকে সহায়তা করেন, তাহলে পুরো এসএলসি কমিটি কমপক্ষে ১৫ বছরের জন্য কারাগারে থাকবে।”
আইসিসি এক্ষেত্রে কী প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটিও একটি বড় বিষয়। শ্রীলঙ্কার নিজস্ব ক্রীড়া আইন অনুযায়ী, যে কোনো খেলার গভর্নিং বডি ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে সরকারের। এই ক্ষমতা গত ২০ বছরে এসএলসিতে একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে।
কিন্তু, সবশেষ ২০১৪ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত যখন অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তখন এসএলসিকে অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল আইসিসি। এসএলসির সদস্যদের মাধ্যমে একটি নতুন বোর্ড নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত আইসিসির তহবিলগুলো আটকে রাখা হয়েছিল। আইসিসির বোর্ড মিটিংয়েও এসএলসিকে পর্যবেক্ষকের মর্যাদায় অবনমিত করা হয়েছিল।
এ দিকে, দুই সপ্তাহের মধ্যে হবে আইসিসির পরবর্তী বোর্ড সভা। সেখানে এসএলসির প্রতিনিধি হিসেবে কে উপস্থিত হবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।