করাচি টেস্টে তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে ৪ উইকেট নিয়ে লিডের আশা জাগিয়েছে নিউ জিল্যান্ড।
Published : 04 Jan 2023, 07:37 PM
আরও একবার সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে আক্ষেপে পুড়লেন ইমাম-উল-হক। এবার আর ভুল করলেন না সৌদ শাকিল। ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে দিনজুড়ে ব্যাটিং করে তিনি তুলে নিলেন কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সরফরাজ আহমেদের ব্যাট থেকে এলো টানা তৃতীয় ফিফটি। দিনের প্রথম দুই সেশনে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের দাপটের পর শেষ বিকেলে ৪ উইকেট নিয়ে অবশ্য প্রথম ইনিংসে লিডের আশা জাগাল নিউ জিল্যান্ড।
করাচিতে দ্বিতীয় টেস্টে ৫ উইকেটে ৩৮৫ থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৪০৭ রান। এখনও তারা পিছিয়ে আছে ৪২ রানে।
ক্যারিয়ারের প্রথম চার টেস্টে পাঁচটি ফিফটির পর অবশেষে শতকের স্বাদ পাওয়া শাকিল খেলছেন ১২৪ রানে। তার ৩৩৬ বলের ইনিংস গড়া ১৭টি চারে।
করাচি জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার তৃতীয় দিনেও উইকেট ছিল যথারীতি ব্যাটিং সহায়ক। প্রথম দুই সেশনে ছিল না বিন্দুমাত্র প্রাণের ছোঁয়া।
পাকিস্তান এ দিন ব্যাটিং শুরু করে ৩ উইকেটে ১৫৪ রান নিয়ে। আগের দিন ৭৪ রানে অপরাজিত ইমাম দিনের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন। তবে টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কট বিহাইন্ড হন টিম সাউদির বলে। নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক উইকেটটি পান রিভিউ নিয়ে।
প্রথম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৬ রানের পর এবার ইমাম করেন ৮৩। ১৬৫ বলের ইনিংসে ১০টি চারের পাশে ছক্কা একটি।
শাকিল আগের দিন রানের খাতা খুলেছিলেন মুখোমুখি ৪২তম বলে। ১৩ রানে দিন শুরু করা ২৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান এ দিনও এগোতে থাকেন ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে। ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি ১৭৩ বলে।
শাকিলের ঠিক বিপরীত সরফরাজ। অভিজ্ঞ কিপার-ব্যাটসম্যানের পঞ্চাশ ছুঁতে লাগে কেবল ৬১ বল।
৯৫ থেকে মাইকেল ব্রেসওয়েলকে চার মেরে সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান শাকিল। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি ২৪০ বলে।
মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভাঙতে চা-বিরতির আগে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে ড্যারিল মিচেলকে আক্রমণে আনেন কিউই অধিনায়ক সাউদি। কাজে দেয় সেই কৌশল।
মিচেলের মিডিয়াম পেসে প্রথম বলে সরফরাজকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। ব্যাটসম্যান রিভিউ নিয়ে বাঁচেন বল আগে ব্যাটে লাগায়। এক বল পরই স্টাম্পড হয়ে ফেরেন তিনি।
তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটি নিয়ে অবশ্য সংশয় আছে যথেষ্ট। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে শট খেলার চেষ্টায় ব্যাটে ছোঁয়াতে পারেননি সরফরাজ। ফলো থ্রুয়ে ব্যাটসম্যানের ডান পা চলে আসে বাইরে। কিপার যখন বেলস ফেলে দেন, বাম পায়ের বুটের অংশ দাগের ভেতরে মাটিতে নাকি শূন্যে ছিল, পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল না।
সরফরাজের বিদায়ে ভাঙে ২৩৮ বল স্থায়ী ১৫০ রানের জুটি।
তিন বছর পর সাদা পোশাকে ফিরে আগের টেস্টে দুই ইনিংসে সরফরাজ করেছিলেন ৮৬ ও ৫৩ রান। এবার ১০৯ বলে ১০টি চারে করলেন ৭৮।
আঘা সালমানকে সঙ্গে নিয়ে এরপর দলকে এগিয়ে নেন শাকিল। ১০২ রানে শর্ট পয়েন্টে তার ক্যাচ ফেলেন টম ল্যাথাম।
শেষ বিকেলে দুই স্পিনারের হাত ধরে পাঁচ ওভারের মধ্যে ১২ রানে ৪ উইকেট তুলে নেয় নিউ জিল্যান্ড।
নিজের পরপর দুই ওভারে সালমান (৪১) ও হাসান আলিকে ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল। সালমান ক্যাচ দেন স্লিপে, হাসান ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে।
লেগ স্পিনার ইশ সোধি পরপর দুই বলে নাসিম শাহ ও মির হামজাকে বোল্ড করে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। সেই বলটা ঠেকিয়ে দেন শেষ ব্যাটসম্যান আবরার আহমেদ। তাকে নিয়ে দিনের বাকি তিন ওভার নিরাপদে কাটিয়ে দেন শাকিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৪৯
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৩২ ওভারে ৪০৭/৯ (আগের দিন ১৫৪/৩ (ইমাম ৮৩, শাকিল ১২৪*, সরফরাজ ৭৮, সালমান ৪১, হাসান ৪, নাসিম ৪, হামজা ০, আবরার ০*; সাউদি ২৫-৭-৬২-১, হেনরি ২৮-৯-৫৮-১, এজাজ ১৭-২-৮৮-৩, ব্রেসওয়েল ২৬-৩-৮৭-০, সোধি ২৬-৩-৯৪-২, মিচেল ১০-৬-১১-১)