পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে ভালো করেছে বলেই মনে করেন অধিনায়ক বাবর, তবে সহ-অধিনায়ক শাদাব খানের মতে, টানা রান করার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাববিস্তারি ইনিংস খেলা।
Published : 22 Apr 2024, 02:04 PM
প্রসঙ্গটি পুরোনো। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউ জিল্যান্ডের কাছে হারার পর সেটি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আবার। আরও একবার প্রশ্নবিদ্ধ টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের ধরন। অধিনায়ক বাবর আজম যদিও ব্যাটিংয়ে সমস্যার কিছু দেখছেন না। তবে এই সংস্করণে বড় রান করার চেয়েও কখনও কখনও যে ‘ইম্প্যাক্টফুল ইনিংস’ খেলা বেশি জরুরি, সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন সহ-অধিনায়ক শাদাব খান।
রাওয়ালপিন্ডিতে রোববার টসের সময় বাবর বলেন, উইকেট পুরোপুরি ব্যাটিং স্বর্গ। সেই উইকেটে চার উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে পাকিস্তান তোলে ১৭৮ রান। সেই রান যে যথেষ্ট নয়, তা প্রমাণ হয়ে যায় ম্যাচের পরের ভাগে। ১০ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে জিতে যায় নিউ জিল্যান্ড। ৪২ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত ইনিংস খেলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে দলকে সমতায় ফেরান মার্ক চাপম্যান।
সাইম আইয়ুবের ২২ বলে ৩২ রানের ইনিংসে এ দিন শুরুটা ভালোই করে পাকিস্তান। পাওয়ার প্লেতে তারা রান তোলে ৫৪। তবে সাইমের বিদায়ের পর কিছুটা গতি হারায় ইনিংস। পরের সাত ওভারে তারা তুলতে পারে ৫১ রান।
বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের জুটির সময় কিছুটা থমকে যায় গতি। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মিলে ৫৯ রান করেন ৫০ বল খেলে। বাবর একাদশ ওভারে আউট হন ২৯ বলে ৩৯ রান করে। রিজওয়ান ২১ বলে ২২ রান করে ত্রয়োদশ ওভারে মাঠের বাইরে চলে যান পায়ে টান লাগায়।
পরে ২০ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন তরুণ ইরফান খান। পাকিস্তান শেষ দিকে আবার দ্রুত রান তুলতে পারে শাদাবের সৌজন্যে। ২০ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার।
তবে চাপম্যানের ঝড়ের সামনে উড়ে যায় পাকিস্তানের সবকিছু।
পাকিস্তানের ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ের ওই মন্থর গতি নিয়ে প্রশ্ন হলো ম্যাচের পর। বাবর এখানেও নিরাপদ ব্যাটিংয়ের পথই বেছে নিলেন।
“ব্যাটিংয়ে আমরা ভালো করেছি। আমার মনে হয় না, এটা (মন্থর হয়ে যাওয়া) খুব বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। কারণ শেষে আমরা পুষিয়ে দিয়েছি।”
“বলতে পারেন, ১০ রানের ঘাটতি ছিল আমাদের। দুভার্গজনকভাবে, রিজওয়ানের চোট আমাদের জন্য ধাক্কা হয়ে আসে, কারণ নতুন ব্যাটসম্যানের কাজটা সহজ ছিল না। তবে শাদাব পরে দারুণ খেলেছে এবং ইরফানের সঙ্গে দুর্দান্ত জুটি গড়ে তুলেছে। পিন্ডিতে ১৮০-১৯০ রান জয়ের মতো স্কোর।”
তবে ব্যাটিংয়ে যে ঘাটতি কিছু ছিল, তা মেনে নিলেন পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত কোচ আজহার মাহমুদ। নিজেদের শেখার তাগিদ জানানোর পাশাপাশি তিনি কৃতিত্ব দিলেন চাপম্যানকেও।
“১৫-২০ রানের ঘাটতি ছিল আমাদের। শুরুটা খুব ভালো করেছিলাম আমরা। প্রথম ৬ ওভারে স্কোর ছিল ৫৪, যা খুব ভালো। শেষ দিকে শাদাবের ইনিংসটিও ছিল দারুণ। তবে মাঝে আমরা একটু ধীরগতির হয়ে পড়ি। ৭ থেকে ১০ ওভার, পরে ১১ থেকে ১৫ ওভারে বল একটু গ্রিপ করছিল এবং আমরা মন্থর হয়ে পড়ি।”
“এই ব্যাপারগুলি শিখতে হবে আমাদের। তবে চাপম্যান যেভাবে খেলেছে, তাকেও কৃতিত্ব দিতে হবে আমাদের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কেউ যদি এভাবে দাঁড়িয়ে যায়, সেই একজনই ম্যাচ বের করে নিয়ে যেতে পারে।”
শাদাব খানের জবাবটা আরও সরাসরি। জাতীয় দলে তার ব্যাটিং অর্ডার নিয়েও আলোচনা হয় অনেক। পিএসএলে ওপরের দিকে খেলে নিয়মিত রান করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেই সুযোগ বেশির ভাগ সময় পান না তিনি। নিজের পছন্দের পজিশনের কথা একটু করে তুলে ধরলেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন এই যুগের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দাবিও।
“পিএসএলে আমি তিন-চার নম্বরে খেলেছি এবং এখানেই আমি সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ। তবে ফ্লোটার হিসেবে খেলালেও আমার সমস্যা নেই। সুযোগ যেখানেই পাই, আমার পরিকল্পনা একই থাকবে। সবসময়ই দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করি আমি।”
“কখনও কখনও, প্রভাববিস্তারি ইনিংস বেশি প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে এই সময়ের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টানা রান করা খুব কঠিন নয়, কিন্তু প্রভাববিস্তারি ইনিংস খেলা কঠিন।”