জিম্বাবুয়েকে গুঁড়িয়ে ডাচদের ‘প্রথম’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ পর্বে প্রথম জয় পেল নেদারল্যান্ডস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Nov 2022, 07:26 AM
Updated : 2 Nov 2022, 07:26 AM

শুরুর তিন ব্যাটসম্যানের মতো শেষের ছয় জনও যেতে পারলেন না দুই অঙ্কে। নেদারল্যান্ডসের দুর্দান্ত বোলিং সামলে মাঝে কিছুটা লড়াই করলেন শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজা। তাতে কোনোমতে একশ পার করল জিম্বাবুয়ে। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় মাক্স ও’ডাওডের দায়িত্বশীল ফিফটিতে অনায়াস জয় তুলে নিল ডাচরা।

অ্যাডিলেইডে বুধবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের জয় ৫ উইকেটে। জিম্বাবুয়েকে ১১৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১২ বল বাকি থাকতে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে যায় তারা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে দুটি জয় আছে নেদারল্যান্ডসের। দুটিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০০৯ ও ২০১৪ আসরে। জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে প্রথম জয়ের দেখা পেল তারা। এতে সেমি-ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন এখানেই শেষ হয়ে গেল জিম্বাবুয়ের।

রান তাড়ায় ১ ছক্কা ও ৮ চারে ৪৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলেন ও’ডাওড। এবারের আসরে দ্বিতীয় ফিফটি করে এই ওপেনার জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। 

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটা হয় বেশ বাজে। পাওয়ার প্লেতে ২০ রান তুলে তারা হারায় ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে পল ফন মেকেরেনের বলে ওয়েসলি মাধেভেরে হন বোল্ড। ব্র্যান্ডন গ্লভার পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন ক্রেইগ আরভিন ও রেজিস চাকাভাকে।

জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক আরভিন হন কট বিহাইন্ড। টানা দুই বলে পয়েন্টে ও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান চাকাভা। জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। দুই বল পর হন এলবিডব্লিউ।

বিপদে পড়া দলের হাল ধরেন উলিয়ামস ও রাজা। গ্লভারকে টানা চার-ছক্কা মেরে ঝড়ের আভাস দেন রাজা। ওই ওভারেই তাকে ফেরাতে পারত জিম্বাবুয়ে। কিন্তু কট বিহাইন্ড হয়েছেন ব্যাটসম্যান বুঝতেই পারেননি কেউ! পরে রিপ্লেতে দেখা যায় তা।

৩ চারে ২৮ রান করা উইলিয়ামসের বিদায়ে ভাঙে ৪৮ রানে জুটি। দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেওয়া রাজা ছক্কায় ওড়ান লোগান ফন বিককে। পরে গ্লভারকে ওভারে মারেন একটি করে ছক্কা-চার।

দলে ফেরা বাস ডে লেডেকে ছক্কার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাজা। করেন তিনটি করে ছক্কা-চারে ২৪ বলে ৪০ রান। এরপর আর বেশিদূর এগোয়নি জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ১৯ রানে হারায় তারা শেষ ৪ উইকেট। তাদের ইনিংসে ৯ জনই ছুঁয়ে পারেননি দুই অঙ্ক।

নেদারল্যান্ডসের হয়ে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন ফন মেকেরেন। দুটি করে প্রাপ্তি গ্লভার, ফন বিক ও ডে লেডের।

জবাবে রিচার্ড এনগারাভাকে ছক্কায় উড়িয়ে ভালো কিছুর আভাস দেওয়া স্টেফান মাইবার্গ টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। চতুর্থ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানির বলে ক্যাচ তুলে দেন এই ওপেনার।

দ্রুত উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেন ও’ডাওড ও টম কুপার। মুজারাবানিকে ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা মারেন কুপার। ও’ডাওড ছক্কায় ওড়ান উইলিয়ামসকে।

এই দুইজনের জমে যাওয়া জুটিতেই মনে হচ্ছিল জয়ের বন্দরে পৌঁছে যাবে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু লুক জঙ্গুয়েকে ছক্কার চেষ্টায় মিডউইকেট বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন এক ছক্কা ও ২ চারে ৩২ রান করা কুপার। ভাঙে ৭৩ রানের জুটি।

পরের ওভারে বিদায় নেন কলিন আকারম্যান। এক প্রান্ত আগলে রাখেন ও’ডাওড। জঙ্গুয়েকে টানা দুই চার মেরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের একাদশ ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি ৪৫ বলে।

৩০ বলে যখন ৯ রান চাই নেদারল্যান্ডসের, ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ও’ডাওড। পরে ২৪ বলে ৩ রানের সমীকরণ মেলাতে ১২ বল খেলে ডাচরা। মাঝে পড়ে একটি উইকেটও। আরেকটিও হারাতে পারত তারা। অল্পের জন্য স্টাম্পিং থেকে বেঁচে যান ডে লেডে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ১৯.২ ওভারে ১১৭ (মাধেভেরে ১, আরভিন ৩, চাকাভা ৫, উইলিয়ামস ২৮, রাজা ৪০, শুম্বা ২, বার্ল ২, জঙ্গুয়ে ৬, এনগারাভা ৯, চাটারা ৬*, মুজারাবানি ১; ক্লাসেন ৪-০-১৭-১, ফন মেকেরেন ৪-০-২৯-৩, গ্লভার ৪-১-২৯-২, ফন বিক ২.২-০-১৭-২, ডে লেডে ৪-০-১৪-২, ফন মেরওয়া ১-০-৮-০)

নেদারল্যান্ডস: ১৮ ওভারে ১২০/৫ (মাইবার্গ ৮, ও’ডাওড ৫২, কুপার ৩২, আকারম্যান ১, ডে লেডে ১২*, এডওয়ার্ডস ৫, ফন মেরওয়া ০*; চাটারা ৪-০-২২-০, এনগারাভা ৪-০-১৮-২, মুজারাবানি ৪-০-২৩-২, উইলিয়ামস ৩-০-২১-০, রাজা ১-০-৬-০, জঙ্গুয়ে ২-০-২৫-১)

ফল: নেদারল্যান্ডস ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মাক্স ও’ডাওড