আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথমবার প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটই নিলেন স্পিনাররা।
Published : 08 Aug 2022, 12:34 AM
প্রথম ১০ ওভারে ভারতের রান ১ উইকেটে ৯৫। সেখান থেকে দুইশ ছিল খুব সম্ভব। তবে শেষ দিকে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেটি হতে দিলেন না ওডিন স্মিথ। সেই স্বস্তি অবশ্য উবে গেল ব্যাটিংয়ে নেমে। এক শিমরন হেটমায়ার ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের আর কেউ ক্রিজে দাঁড়াতেই পারলেন না। ক্যারিবিয়ানদের বিধ্বস্ত করে বিরল কীর্তি গড়ল ভারতীয় স্পিনাররা।
সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে রোববার ভারতের জয় ৮৮ রানে। ফ্লোরিডার লডারহিলে ১৮৮ রানের পুঁজি গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা গুটিয়ে দিয়েছে স্রেফ ১০০ রানে।
এই সংস্করণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রানের দিক দিয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় জয় এটি। ২০১৮ সালে দেশের মাটিতে ৭১ রানে জয় ছিল আগের রেকর্ড।
ক্যারিবিয়ানদের ১০ উইকেটই নেন ভারতের স্পিনাররা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথমবার ঘটল এমন কিছু।
তরুণ লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণই ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৬ রানে নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদিপ যাদব ১২ রানে ও বাঁহাতি স্পিনার আকসার প্যাটেল ১৫ রানে নেন ৩টি করে উইকেট।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ভারত জিতে নিল ৪-১ ব্যবধানে।
ভারতের বড় সংগ্রহে বড় অবদান শ্রেয়াস আইয়ারের। ৪০ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় তিনি করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৪ রান। ২৫ বলে ৩৮ রান করেন দিপক হুডা। শেষ দিকে ১৬ বলে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন এই ম্যাচের ভারত অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে হেটমায়ার ৩৫ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় খেলেন ৫৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। আর কেউ পনেরোও ছুঁতে পারেননি!
ভারত ব্যাটিংয়ে নামে টস জিতে। নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও সূর্যকুমার যাদবের বিশ্রামের সুযোগে শ্রেয়াসের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন ইশান কিষান। ১৩ বলে ১১ রান করে বিদায় নেন কিষান।
এরপর হুডার সঙ্গে জুটি বেঁধে দলের স্কোর একশ পার করেন শ্রেয়াস। ফিফটি করেন তিনি ৩০ বলে। ভারতের দুইশ তখন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু পরপর দুই সেট ব্যাটসম্যানের বিদায়ে কিছুটা কমে যায় রানের গতি।
হুডাকে ফিরিয়ে ৪৬ বলে ৭৬ রানের জুটি ভাঙেন হেইডেন ওয়ালশ। জেসন হোল্ডারকে ফিরতি ক্যাচ দেন শ্রেয়াস।
চারে নেমে টিকতে পারেননি সাঞ্জু স্যামসন। দিনেশ কার্তিক পারেননি শেষের দাবি মেটাতে। ২টি করে চার-ছক্কায় ২৮ রানের ইনিংস খেলে পান্ডিয়া রান আউট হন শেষ ওভারে।
নিজের প্রথম ওভারে ১৫ রান দেওয়া স্মিথ শেষ তিন ওভারে দেন স্রেফ ১৮ রান, সঙ্গে নেন ৩টি উইকেট।
রান তাড়া করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন আকসার। প্রথম ওভারে তিনি বোল্ড করে দেন হোল্ডারকে। এই সংস্করণে প্রথমবার ইনিংস শুরু করতে নেমে শূন্য রানে ফেরেন সাবেক ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।
পঞ্চম ওভারে আকসার জোড়া শিকার ধরেন শামার ব্রুকস ও ডেভন টমাসকে ফিরিয়ে। অধিনায়ক নিকোলাস পুরানকে টিকতে দেননি কুলদিপ। চারে নামা হেটমায়ার সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে একাই টানেন দলকে।
বিষ্ণই দ্বাদশ ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসে তুলে নেন রভম্যান পাওয়েল ও কিমো পলের উইকেট। পরের ওভারে কোনো রান না দিয়েই ডমিনিক ড্রেকস ও স্মিথকে ফিরিয়ে দেন কুলদিপ।
২৮ বলে ফিফটির পরপরই হেটমায়ারকে থামিয়ে দেন বিষ্ণই। ওই ওভারেই ওবেড ম্যাককয়কে ফিরিয়ে ম্যাচের ইতি টেনে দেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৮৮/৭ (কিষান ১১, শ্রেয়াস ৬৪, হুডা ৩৮, স্যামসন ১৫, পান্ডিয়া ২৮, কার্তিক ১২, আকসার ৯, কুলদিপ ০*, আভেশ ১*; হোল্ডার ৪-০-৩৮-১, ম্যাককয় ২-০-২৭-০, ড্রেকস ৩-০-২৪-১, পল ২-০-২৪-০, ওয়ালশ ৪-০-৩৩-১, স্মিথ ৪-০-৩৩-৩)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৫.৪ ওভারে ১০০ (হোল্ডার ০, ব্রুকস ১৩, টমাস ১০, হেটমায়ার ৫৬, পুরান ৩, পাওয়েল ৯, পল ০, ড্রেকস ১, স্মিথ ০, ওয়ালশ ০*, ম্যাককয় ০; আকসার ৩-১-১৫-৩, আর্শদিপ ২-০-১৮-০, আভেশ ২-০-২০-০, পান্ডিয়া ২-০-১৯-০, কুলদিপ ৪-১-১২-৩, বিষ্ণই ১.৪-০-১৬-৪)
ফল: ভারত ৮৮ রানে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে জয়ী ভারত
ম্যান অব দা ম্যাচ: আকসার প্যাটেল
ম্যান অব দা সিরিজ: আর্শদিপ সিং