বল হাতে ৫ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম।
Published : 19 Nov 2023, 07:14 PM
বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজিবের অফ স্টাম্পে পিচ করা বল উপড়ে নিয়ে গেল অফ স্টাম্প। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর তখনও ক্রিজে ঠায় দাঁড়িয়ে। প্রতিপক্ষের উদযাপন দেখে হয়তো ভেবেছিলেন স্টাম্পিংয়ের আবেদন চলছে। কিপার কিছু একটা বলার পর তিনি বুঝতে পারেন আসল ঘটনা। ছেড়ে যান ক্রিজ।
ওই অবস্থায় ক্রিজ ছেড়ে যেতে কোন ব্যাটসম্যানেরই বা ইচ্ছে করে! তখন যে ইরফানের রান ছিল ৯৯!
জাতীয় ক্রিকেট লিগের শেষ রাউন্ডে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের অধিনায়ক ইরফানের মতো শতক হাতছাড়া করেছেন শাহাদাত হোসেনও। ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন ৮৭ রানে। তার ১৩৭ বলের ইনিংস গড়া ৮ চার ও ২ ছক্কায়। ইরফানের ১৪১ বলে ৯৯ রানের ইনিংসে ৭ চারের পাশে ছক্কা একটি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে এই দুজনের আক্ষেপের দিনে অবশ্য প্রথম ইনিংসে লিড পেয়েছে চট্টগ্রাম। দ্বিতীয় স্তরের এই ম্যাচে প্রথম দিন রাজশাহীকে ১৮৯ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয় দিন রোববার চট্টগ্রাম অল আউট হয়েছে ২৯০ রানে। ২ উইকেটে ৭২ রান নিয়ে এই দিনে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল তারা।
রাজশাহীর সানজামুল ইসলাম ৫ উইকেট নিয়েছেন ৮৬ রান দিয়ে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩৩ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনারের ২৫তম পাঁচ উইকেটের ঘটনা এটি।
জবাবে দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৯ রানেই ৬ উইকেট হারিয়েছে রাজশাহী। বিশ্বকাপ থেকে ফিরে জাতীয় লিগে প্রথম খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও ভালো করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত (২০) ও মুশফিকুর রহিম (১৬)
এখনও ২ রানে পিছিয়ে আছে রাজশাহী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১৮৯
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৭২/২) ৭৯.৫ ওভারে ২৯০ (সাব্বির ২২, ইরফান ৯৯, শাহাদাত ৮৭, শামীম ২০, ইয়াসির ০, নাঈম ১৬, মুরাদ ৬, ইফরান ৭, হাসান ১*; রানা ১৪-১-৫৭-১, মোহর ৪-০-২৮-০, সানজামুল ২৮.৫-৫-৮৬-৫, সাকলাইন ২১-৪-৫৬-২, শান্ত ১১-১-৫৪-১, আশিক ১-০-৭-০)
রাজশাহী ২য় ইনিংস: ৩০.৫ ওভারে ৯৯/৬ (তানজিদ ০, সাব্বির হোসেন ৬, শান্ত ২০, প্রিতম ৩১, মুশফিক ১৬, সাব্বির রহমান ৬*, আশিক ২, সানজামুল ১৪*; হাসান ৮-০-৩২-১, ইফরান ৩-১-৯-১, নাঈম ৯.৫-৩-২৪-১, মুরাদ ১০-১-৩১-৩)
মেহেদির বোলিংয়ে চাপে বরিশাল
দ্বিতীয় স্তরের আরেক ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে লিড পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় চাপে আছে বরিশাল বিভাগ।
দ্বিতীয় দিন শেষে বরিশালের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪২ রান। প্রথম ইনিংসে ২৫ রানের লিড মিলিয়ে ৬৭ রানে এগিয়ে আছে তারা।
বরিশালের ৬ উইকেটের ৪টিই নিয়েছেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান। ৯ ওভারে ৬ মেডেনে তিনি রান দিয়েছেন কেবল ৯।
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বিনা উইকেটে ১৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে ২১৪ রানে অল আউট হয় খুলনা। ওপেনার এনামুল হক সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন ৭৩ বলে।
আরেক ওপেনার প্রান্তিক নওরোজ নাবিল করেন ৪৩। ৯৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর পথ হারায় খুলনা।
বরিশালের বাঁহাতি স্পিনাত তানভির ইসলাম ৮৩ রানে নেন ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল ১ম ইনিংস: ২৩৯
খুলনা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৬/০) ৭৬.৪ ওভারে ২১৪ (এনামুল ৬২, প্রান্তিক ৪৩, সৌম্য ১৪, মিঠুন ৮, সোহান ৭, আফিফ ৩৯, মেহেদি ২১, জিয়াউর ৯, আওলাদ ০, সালমান ৬*, আল আমিন ২; কামরুল রাব্বি ৬-১-১৮-০, তানভির ২৬.১-২-৮৩-৪, মইন ১৫.৩-৫-২৭-৩, রুয়েল ৩-১-৭-০, সালমান ৩-০-১২-০, সোহাগ ২০-১-৫৩-২, মইনুল ২-০-৯-০, রাফসান ১-০-২-০)
বরিশাল ২য় ইনিংস: ১৮ ওভারে ৪২/৬ (রাফসান ১৭, মইনুল ০, সালমান ১১, রুয়েল ২, মইন ০, ফজলে মাহমুদ ৮, শামসুল ০*, কামরুল রাব্বি ০; মেহেদি ৯-৬-৯-৪, আল আমিন ৬-১-২৫-১, আফিফ ২-২-০-০, আওলাদ ১-০-৪-১)
নাসুম-জাকেরের ফিফটি
প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সিলেট বিভাগ। প্রথম স্তরের ম্যাচে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে দ্বিতীয় দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২২৮ রান। এগিয়ে আছে তারা ১৭২ রানে।
১৩৯ বলে ১০ চারে ৭১ রান করেছেন নাসুম আহমেদ। ১৫৮ বলে ১০ চারে ৭৩ রানে অপরাজিত আছেন জাকের আলি।
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে এর আগে ৬ উইকেটে ১২৪ রানে দ্বিতীয় দিন শুরু করে ১৮১ রানে অল আউট হয় রংপুর। প্রথম দিন সিলেটকে ১২৫ রানে গুটিয়ে দেওয়া রংপুর লিড পায় ৫৬ রানের।
সিলেটের দুই পেসার আবু জায়েদ চৌধুরি ও রেজাউর রহমান রাজা নেন ৪টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট ১ম ইনিংস: ১২৫
রংপুর ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১২৪/৬) ৫২.৫ ওভারে ১৮১ (মাহমুদুল ৩৬, নিহাদুজ্জামান ২০, রিশাদ ৩২*, আব্দুল গাফফার ৪, গালিব ৯; আবু জায়েদ ১৭-৩-৬০-৪, সফর ৯-৪-১৮-১, রাজা ১৭-০-৬৫-৪, নাসুম ৮.৫-১-২৭-১, রাহাতুল ১-০-১-০)
সিলেট ২য় ইনিংস: ৭০ ওভারে ২২৮/৪ (তৌফিক ১১, জাকির ০, অমিত ৩৮, নাসুম ৭১, জাকের ৭৩*, শামসুর ২৫*; গালিব ১১-২-৫৯-২, গাফফার ১১-১-৩৭-১, মামুন ১০-২-২৬-০, মাহমুদুল ২-০-১২-০, নিহাদুজ্জামান ১৭-৫-৩২-০, আরিফুল ৪-০-১৯-০, নবিন ৫-০-১৭-০, রিশাদ ৭-১-১৪-০, তানভির ৩-০-৯-১)
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ঢাকা ও ঢাকা মেট্রোর প্রথম স্তরের আরেক ম্যাচে দ্বিতীয় দিনেও কোনো বল মাঠে গড়ায়নি। ঢাকা বিভাগের শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে গত রাউন্ডেই।