অভিষেকে আলো ছড়ানো প্রতিভাবান এই ভারতীয় ব্যাটসম্যানের সঙ্গে একসময় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরে খেলেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।
Published : 22 Feb 2024, 09:07 AM
সেই কবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরে একসঙ্গে খেলেছেন দুজন। কিন্তু কাছ থেকে যতটুকু দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতেই সারফারাজ খানকে হৃদয়ে জায়গা দিয়ে রেখেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ভারতের এই প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান অভিষেক টেস্টে যেভাবে খেলেছেন এবং তার পরিবারের উপস্থিতিতে যে আবহ তৈরি হয়েছে রাজকোট টেস্টে, সবকিছুই দারুণভাবে ছুঁয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিং কিংবদন্তিকে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত রাজকোট টেস্টে শেষ হয়েছে সারফারাজ ও তার পরিবারের অপেক্ষা। সেই স্কুল ক্রিকেট থেকেই সাড়া জাগানো প্রতিভাবান এই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে তার ক্রিকেট কোচ বাবা নাওশাদ খানের লড়াইয়ের গল্পটা ভারতীয় ক্রিকেটে অনেকেরই জানা। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের জোয়ার বইয়ে দিয়েও জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না সারফারাজ। অবশেষে রাজকোটে বহুকাঙ্ক্ষিত সেই টেস্ট ক্যাপ তিনি পান।
সেদিন মাঠে ছিলেন সারফারাজের বাবা ও স্ত্রী। টসের আগে টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার পরই ছুটে গিয়ে বাবার হাতে ক্যাপ তুলে দেন তিনি। সেই ক্যাপ হাতে তার বাবার কান্নার দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে। পরে ব্যাট হাতেও অভিষেক টেস্ট রাঙান সারফারাজ। প্রথম ইনিংসে রান আউট হওয়ার আগে ৬৬ বলে ৬২ রান করেন ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। পরের ইনিংসে তিনি ৭২ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকার সময় ইনিংস ঘোষণা করে দেয় দল।
সারফারাজের আইপিএল অভিষেক সেই ২০১৫ সালে। সেই ম্যাচে ছিলেন ডি ভিলিয়ার্সও। পরে ২০১৬ ও ২০১৮ আসরে এই দলের হয়েই খেলেন সারফারাজ। ডি ভিলিয়ার্স তো এই ফ্র্যাঞ্চাইজির ঘরের ছেলেই হয়ে উঠেছিলেন। সবশেষ ২০১৮ সালে দুজন একসঙ্গে খেলেন আইপিএলে।
এরপর অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও সাবেক সতীর্থকে ভালোভাবেই মনে রেখেছেন ডি ভিলিয়ার্স। সারফারাজ টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার পরই সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক বলেছিলেন, এই ব্যাটসম্যানকে টেস্ট ক্রিকেটে দেখতে রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষায় তিনি। এবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ডি ভিলিয়ার্স বললেন, সারফারাজের অভিষেক দেখে তার মন ভরে গেছে।
“ভারতের হয়ে প্রথম টেস্টে তার পরিবারকে সেখানে দেখতে পাওয়াটা ছিল দারুণ ব্যাপার। আরসিবিতে (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর) তার সঙ্গে ছিলাম আমি। সে স্থিরমস্তিষ্কের ও খুবই বিনয়ী ছেলে একং তাকে নিয়ে আমি দারুণ গর্বিত।”
“সারফারাজ ফিফটি করার পর ওর বাবা যখন চুম্বন ছুড়ে দিল এবং সেও ক্রিজ থেকে বাবার দিকে সাড়া দিল, এটাও ছিল দারুণ। খুবই আবেগময় মুহূর্ত এবং টিভিতে সরাসরি দেখে আমার হৃদয় উষ্ণতায় ভরে গেছে।”
দুই ইনিংসেই সারফারাজ যেভাবে খেলছিলেন, তাকে মনে হচ্ছিল অপ্রতিরোধ্য। দ্বিতীয় ইনিংসে ইনিংস ঘোষণা করে দেওয়াই ছিল সময়ের দাবি। তবে প্রথম ইনিংসে তিনি কাটা পড়েন রান আউটে, যেটিতে আঙুল তোলা যায় ক্রিজে তার সঙ্গী রবীন্দ্র জাদেজার দিকে। ডি ভিলিয়ার্সও সেটিই বললেন, তবে একটি জায়গায় জাদেজার প্রশংসাও তিনি করলেন।
“সারফারাজ ৬০ রানের মতো করার পর রান আউট হয়ে যায়। এখানে নিশ্চিতভাবেই জাদ্দুকে (জাদেজা) দায় দেওয়া যায়। তবে এর পরপরই সে (জাদেজা) শতরান করার পর তার শরীরী ভাষাতেই হতাশাটা ফুটে উঠছিল। খুব শীতল উদযাপন ছিল তার, তরুণ ব্যাটসম্যান (সারফারাজ) রান আউট হওয়ায় সে হতাশ ছিল। অভিজ্ঞ এক সেনানী এরকম ঘটনার দায়িত্ব নিয়েছে এবং মাঠেই একরকম অনুশোচনা প্রকাশ করেছে, এটা দেখাটা দারুণ ছিল।”