মুমিনুল-মিঠুনদের ব্যর্থতায় লড়লেন কেবল সাদমান

দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্টে ভারত ‘এ’ দলের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ ‘এ’ দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2022, 08:31 AM
Updated : 9 Dec 2022, 08:31 AM

অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ঝুলিয়ে দেওয়া বল। ছেড়ে দেওয়া যায় অনায়াসেই। কিন্তু দুঃসময় এমনই এক ব্যাপার যে, এমন বলেও ব্যাট বাড়িয়ে দিতে প্রলুব্ধ করে। অনেক বাইরের বলে লম্বা পা নিয়ে ব্যাট চালিয়ে দিলেন মুমিনুল হক। বেজে গেল তার বিদায় ঘণ্টাও। ভারতের বিপক্ষে টেস্টের আগে ছন্দে ফেরার শেষ সুযোগও কাজে লাগাতে পারলেন না মুমিনুল হক।

শুধু অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানই নন, ব্যর্থতার মিছিলে সামিল হলেন মিডল অর্ডারের অন্যরাও। বিরুদ্ধ স্রোতে লড়াই চালিয়ে গেলেন কেবল সাদমান ইসলাম। কিন্তু সঙ্গী না পেয়ে সেঞ্চুরির দুয়ারেই থমকে যেতে হলো তাকে। ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ ‘এ’ দল।

সিলেটে দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্টের শেষ দিনে লড়াই জমাতেই পারল না বাংলাদেশ। শুক্রবার লাঞ্চের পরপরই ভারতীয়রা জিতে গেল ইনিংস ও ১২৩ রানে।

বাংলাদেশের ১৮৭ রানের ইনিংসে সাদমান একাই করেন অপরাজিত ৯৩। প্রায় ৬ ঘণ্টা উইকেটে কাটিয়ে ১৮ চারের ইনিংসটিকে সেঞ্চুরির পূর্ণতা দিতে পারেননি দল অলআউট হয়ে যাওয়ায়।

আগের ম্যাচে শেষ দিনে প্রবল লড়াইয়ের পর শেষ জুটিতে ম্যাচ বাঁচাতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এবারও প্রয়োজন ছিল তেমন কিছুর। কিন্তু সেই আশায় বড় চোট লাগে দিনের শুরুর দিকেই। পঞ্চম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার সৌরভ কুমারের বলে আলগা শটে আউট হয়ে ফেরেন মুমিনুল। ৩১ বল খেলে তার রান ৬।

টেস্ট ও ঘরোয়া ক্রিকেটে সাম্প্রতিক ব্যর্থতার পর এই দুটি আনঅফিসিয়াল টেস্টে তার মোট রান ৪ ইনিংসে ৪২। ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের বাংলাদেশ দলে অবশ্য তিনি আছেন।

পরের জুটিতেই যা একটু লড়াই হয়। সাদমান ও শাহাদাত হোসেন মিলে ১৭ ওভারের বেশি উইকেটে কাটিয়ে যোগ করেন ৫৪ রান। ইনিংসের একমাত্র ফিফটি জুটি এটিই।

এই জুটি ভাঙে শাহাদাত হঠাৎ ধৈর্য হারানোয়। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে সৌরভকে ইনসাইড আউট খেলতে গিয়ে কাভারে ধরা পড়েন তিনি ২৯ রান করে।

লাঞ্চের পর বাংলাদেশের লড়াইয়ের শেষ আশাও শেষ করে দেন নবদিপ সাইনি। এক ওভারেই তিনি বিদায় করেন জাকের আলি ও মোহাম্মদ মিঠুনকে।

শর্ট অব লেংথ বল পুল করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন জাকের (২২)। বল একটু নিচু হয়ে ছোবল দেয় তার প্যাডে। অধিনায়ক মিঠুন উইকেটে গিয়ে দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই অনেক বাইরের বলে আলতো করে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দেন দ্বিতীয় স্লিপে।

এরপর সুমন খান ও হাসান মুরাদকে এক ওভারে ফিরিয়ে সৌরভ পূর্ণ করেন ৫ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই স্বাদ পেলেন তিনি ১৮ বার।

এরপর কৌতূহল ছিল কেবল সাদমান সেঞ্চুরি করতে পারেন কিনা। অষ্টম উইকেট পতনের সময় খেলছিলেন তিনি ৭৪ রানে। শেষ দুই জুটিতে আরেকটু এগিয়ে যান তিনি, কিন্তু তিন অঙ্ক ছোঁয়া পর্যন্ত তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ।

প্রথম ইনিংসে উইকেটশূন্য সৌরভ এবার নেন ৬ উইকেট। আগের দিন তিনি ব্যাট হাতে খেলেন ৩৯ বলে ৫৫ রানের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট শিকারি পেসার মুকেশ কুমার শেষ দিনে বোলিংই করেননি।

 সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ‘এ’ ১ম ইনিংস: ২৫২

ভারত ‘এ’ দল ১ম ইনিংস: ৫৬২/৯ (ডি.)

বাংলাদেশ ‘এ’ ২য় ইনিংস: ৭৯.৫ ওভারে ১৮৭ (আগের দিন ৪৯/২) (জাকির ১২, সাদমান ৯৩*, জয় ১০, মুমিনুল ৬, মুমিনুল ৬, শাহাদাত ২৯, জাকের ২২, মিঠুন ০, সুমন ৮, মুরাদ ০, আশিকুর ৬, মুশফিক ০; উমেশ ১৫.৫-৪-৩৪-৪, সাইনি ১৫-৬-৫৪-২, মুকেশ ৪-২-৫-০, সৌরভ ৩০-১০-৭৪-৬, জয়ন্ত ১৫-৭-১৯-০)।

ফল: ভারত ‘এ’ দল ইনিংস ও ১২৩ রানে জয়ী।

সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ভারত ‘এ’ দল ১-০তে জয়ী।