তাওহিদ হৃদয় জিমে অনেক সময় কাটায় ও কঠোর পরিশ্রম করে, বললেন লিটন কুমার দাস।
Published : 27 Feb 2024, 08:01 AM
হাসান মাহমুদের ডেলিভারিটি ছিল লেগ-মিডল স্টাম্পে। লেংথ বলে জায়গায় দাঁড়িয়েই ব্যাট চালিয়ে দিলেন তাওহিদ হৃদয়। লং অন দিয়ে ছক্কা। একটু পর মোহাম্মদ নাবি বল দিলেন একটু ঝুলিয়ে ফুল লেংথ। এবার হাঁটু গেড়ে ব্যাট চালিয়ে দিলেন হৃদয়। বল উড়ে সীমানা পেরিয়ে আছড়ে পড়ল অনেকটা দূরে। দুটি শটেই ফুটে উঠল হৃদয়ের কবজিতে কত জোর।
অবশ্য রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে এই ইনিংসেই শুধু নয়, এবারের বিপিএলে এবং এখনও পর্যন্ত ক্যারিয়ারের নানা সময়েই তা দেখিয়েছেন হৃদয়। ভালো বলকেও তিনি সীমানা ছাড়া করতে পারেন। বিশালদেহী কিংবা খুব পেশীবহুল না হলেও তার হাতের জোর প্রচণ্ড। তার বিপিএল দলের অধিনায়ক লিটন কুমার দাস আলাদা করেই তুলে ধরলেন তরুণ সতীর্থের এই শক্তির জায়গা।
রংপুরের বিপক্ষে বড় রান তাড়ার চ্যালেঞ্জে নিজের সেরা চেহারাতেই ছিলেন হৃদয়। তা খুব কাছ থেকে উপভোগ করেন উইকেটে তার সঙ্গী লিটন। ১৮৬ রান তাড়ায় ৮৯ বলে ১৪৩ রানের অসাধারণ জুটি গড়েন দুজন।
৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৩ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হন হৃদয়। দলকে আরও এগিয়ে নিয়ে লিটন ফেরেন ৫৭ বলে ৮৩ রান করে। রংপুরকে ৬ উইকেটে হারিয়ে আরও একবার ফাইনালে পা রাখে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
এই ইনিংসের পথে তামিম ইকবালকে (৪৪৩) টপকে এবারের বিপিএলের রানের তালিকায় সবার ওপরে উঠে যান হৃদয় (৪৪৭)। আসরের সর্বোচ্চ ২৪ ছক্কা এসেছে তার ব্যাট থেকেই।
বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানই বিপিএলের কোনো আসরে আগে এত ছক্কা মারতে পারেননি। ২০১৯ বিপিএলে তামিম ইকবালের ২৩ ছক্কা ছিল আগের রেকর্ড।
রংপুরের বিপক্ষে ম্যাচের পর লিটন বললেন, ছক্কা মারার এই দক্ষতার জায়গায় বাংলাদেশের অন্য অনেক ব্যাটসম্যানের চেয়ে আলাদা হৃদয়।
"(হৃদয়ের ব্যাটিংয়ে) আমার যেটা মনে হয়েছে, ও ভালো বলটাকেও ছক্কা মারতে পারে। যেটা আমাদের দেশে খুব কম ব্যাটসম্যানই পারে। স্বাভাবিক যে কোনো বোলার, যে কোন সংস্করণেই উইকেটে বল করবে। আর ও উইকেটের বলটাই বেশি ভালো মারে।”
“এটা শুধু ও নয়, যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো ক্রিকেটার, সবাই স্টাম্পের বল ভালো খেলে। আমার মনে হয়, এটা ওর ভালো একটা প্লাস পয়েন্ট।”
হৃদয়ের শারীরিক গঠন এমনিতে অনেকটাই ছোটখাটো। তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, এতটা জোর আছে তার হাতে। তবে লিটন জানালেন, অনেক ঘাম ঝরিয়ে এবং জিমে অনেক সময় কাটিয়েই ২২ গজে অমন ঝড় তোলেন হৃদয়।
“দেখতে ছোটখাটো হলেও বড় বড় মারতে পারে ও। এটাও ওর একটা আলাদা... আমি ওকে সামনে থেকে যেটা দেখি, ও ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করে এবং কঠোর পরিশ্রমী। সাধারণত খুব সংখ্যক মানুষই এত বেশি জিমে যায়। ও ফাঁকা সময়ে শুধু জিমেই থাকে। মানে ওর কিছু না কিছু কাজ করতেই হয়। আমার মনে হয় এটাও অনেক ভালো একটা দিক।"