বাংলাদেশ ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়া স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান ঢাকা লিগে আবাহনীর হয়ে খেলতে নেমে ভালো করতে পারেননি প্রথম ম্যাচে।
Published : 17 Mar 2024, 03:33 PM
একপ্রান্ত থেকে বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি, আরেক প্রান্তে অফ স্পিনার নাঈম আহমেদ আঁটসাঁট বোলিংয়ে ক্রিজে একরকম আটকে রেখেছিলেন লিটন কুমার দাসকে। সেই জাল আর ছিঁড়তে পারলেন না অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। সানির একটি ডেলিভারি সামনের পায়ে খেলবেন নাকি পেছনের পায়ে, সেই বিভ্রান্তে পড়ে কোনোরকমে ব্যাট পেতে দিলেন ভুল লাইনে। বল ছোবল দিল স্টাম্পে। হতাশায় ক্রিজে একটু দাঁড়িয়ে থেকে মাথা নিচু করে ফিরলেন লিটন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি সিরিজে বাংলাদেশ ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়া এই ব্যাটসম্যানের জন্য ফেরার দাবি জানানোর মঞ্চ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। সেখানে ফিরে প্রথম সুযোগে ব্যর্থ স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান। বিকেএসপিতে রোববার তিনি আউট হয়ে যান ১৯ বলে ৫ রান করে।
তার দল আবাহনী লিমিটেডের অবশ্য জিততে বেগ পেতে হয়নি। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে হারায় তারা ৭ উইকেটে।
নতুন বলে সৈয়দ খালেদ আহমেদের দুর্দান্ত স্পেলের পর আফিফ হোসেনের অফ স্পিনে ঘায়েল শাইনপুকুর গুটিয়ে যায় ১৬৯ রানে। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ফিফটিতে সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে আবাহনী ৯৫ বল বাকি রেখে।
শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে তারকাসমৃদ্ধ আবাহনীর টানা তৃতীয় জয় এটি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শাইনপুকুরের ইনিংস ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই। ৪৭ রানে হারায় তারা পাঁচ উইকেট। এর তিনটিই শিকার করেন খালেদ।
ওপেনার খালিদ হাসান ফ্লিক করতে গিয়ে ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে ধরা পড়েন থার্ডম্যান সীমানায়। দুর্দান্ত এক আউট সুইঙ্গারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অমিত হাসান। ব্যাটের কানায় লেগে খালেদের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মার্শাল আইয়ুব।
৬ ওভারের টানা স্পেলে ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন খালেদ।
এছাড়া ওপেনার জিসান আলম সীমানায় ধরা পড়েন সাইফ উদ্দিনকে আপার কাট করে। চতুদর্শ ওভারে আক্রমণে এসে বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান বিদায় করেন ইরফান শুক্কুরকে।
চরম বিপর্যয়ে পড়া দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন আকবর আলি ও এসএম মেহরব হোসেন। আগের ম্যাচে ৫২ বলে ৬২ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলা আকবর ক্রিজে গিয়েই পাল্টা আক্রমণ করেন। রাকিবুলের এক ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা মারেন তিনি। পরে নাহিদুল ইসলামের ওভারে মারেন দুটি ছক্কা ও একটি চার। ফিফটি পূরণ করেন তিনি ৪০ বলে।
এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেননি। তাকে ফিরিয়েই (৪৪ বলে ৫৫) উইকেট শিকার শুরু করেন আফিফ হোসেন। পরে ইলিয়াস সানি ও আরাফাত সানিকেও আউট করেন তিনি।
একপ্রান্ত আগলে রেখে ৭৯ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন মেহরব।
রান তাড়ায় খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি আবাহনীকে। আগের দুই ম্যাচে ৭১ ও ৯৮ রানের ঝড়ো দুটি ইনিংস খেলা ওপেনার সাব্বির হোসেন এবার আউট হন ১১ বলে ১৫ রানেই। তিনে নেমে ব্যর্থ হন লিটনও। তবে দলকে পথে রাখেন নাঈম শেখ।
চারটি চার ও তিন ছক্কায় ৮৭ বলে ৬৬ রান করে আউট হন নাঈম। লিগের তৃতীয় ম্যাচে তার প্রথম ফিফটি এটি।
এরপর আর কোনো উইকেটের পতন হতে দেননি জয় ও আফিফ। ৭৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জেতান দুজন।
৫৯ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন জয়। বোলিংয়ে তিন উইকেটের সঙ্গে ব্যাট হাতে অপরাজিত ২৫ রান করে ম্যাচের সেরা আফিফ হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৪২.৪ ওভারে ১৬৯ (খালিদ ৭, জিসান ৭, অমিত ০, মার্শাল ৭, ইরফান ৯, আকবর ৫৫, মেহরব ৫০*, ইলিয়াস সানি ১৫, আরাফাত সানি ৫, এনামুল ৩, নাঈম ০; সাইফ ৪-০-১৩-১, খালেদ ৬-০-১৭-৩, নাহিদুল ১০-০-৪৬-০, রাকিবুল ৫.৪-০-৩৬-১, আফিফ ১০-০-৩৪-৩, তানভির ৭-০-২০-১)।
আবাহনী লিমিটেড: ৩৪.১ ওভারে ১৭২/৩ (নাঈম ৬৬, সাব্বির ১৫, লিটন ৫, জয় ৫১*, আফিফ ২৫*; এনামুল ৫-০-৪৭-০, নাঈম ৮-১-২১-০, আরাফাত সানি ৭.১-০-২২-২, মেহরব ৬-০-৩৪-০, ইলিয়াস সানি ৫-১-৩২-১, জিসান ৩-০-১৫-০)।
ফল: আবাহনী লিমিটেড ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: আফিফ হোসেন।