‘১৫ হাজার রান করার পরও এটা শোনা দুর্ভাগ্যজনক’

বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ এলেই চোটের অজুহাত দেখান তামিম ইকবাল, এমন আলোচনায় মর্মাহত বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2023, 12:11 PM
Updated : 26 Feb 2023, 12:11 PM

প্রায় সাত মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় তামিম ইকবাল। কিন্তু ফেরার আগে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তার দিকে প্রশ্ন ছুটে গেল চোট-আঘাত নিয়ে, যেখানে মিশে থাকল অবিশ্বাস, সংশয় আর সন্দেহ। সেই প্রশ্নের সুর ধরতে পেরে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের আক্ষেপ, এত বছর পর এমন কথা!

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিম সবশেষ খেলেছেন গত অগাস্টে খেলেছিলেন জিম্বাবুয়ে সফরে। এরপর বাংলাদেশ দলের ব্যস্ততা ছিল শুধুই টি-টোয়েন্টিতে, যে সংস্করণ থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ভারতের বিপক্ষে সিরিজে তার খেলার কথা ছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধে প্রস্তুতি পর্বেই।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পর ফিল্ডিংয়ের সময় হানা দেয় কুঁচকির চোট। প্রাথমিকভাবে ওয়ানডে থেকে ছিটকে যাওয়া তামিম পরে খেলতে পারেননি টেস্ট সিরিজেও।

পরে তিনি মাঠে ফেরেন বিপিএল দিয়ে। এই টুর্নামেন্টের শেষ দিকে আবার চোটের কারণে মাঠের বাইরে যেতে হয় তাকে। এবার অবশ্য চোটের আঘাতের চেয়ে বেশি ছিল সতর্কতা, যাতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে সমস্যা না হয়।

প্রত্যাশামতো এখন এই সিরিজে খেলার পথে তিনি। তবে সিরিজের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠল বাইরে থাকার সময়টা নিয়ে। ‘বড় সিরিজের আগে তামিমের ইনজুরি হয়’, এরকম আলোচনা আছে বলেও বলা হলো তাকে। তামিম আক্ষেপের হাসিতে দিলেন উত্তর।

“আমি ১৫ হাজার রান করার পরও যদি এই কথা শুনতে হয়, তাহলে এটা খুবই দুঃখজনক। খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ১৭ বছর ধরে খেলছি। আমার ধারণা, (দলের) ৯০ শতাংশ ম্যাচ খেলেছি। হয়তো ১০ শতাংশ ম্যাচ হয়তো খেলতে পারিনি চোটের কারণে। আমার গড় যদি ৯০ শতাংশ হয়, তাহলে এটা আমার মনে হয় এটা দারুণ। যেহেতু ১৭ বছর ধরে খেলছি।”

“সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৫ হাজারের কাছাকাছি রান করার পর যদি এটা শুনতে হয়, বা যে কেউ এটা বলছে বা লিখছে, খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটাই বলতে পারি। কোনো ক্রিকেটারই কোনো ম্যাচ মিস করতে চায় না। আপনি যেটা বললেন, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এর চেয়ে বেশি আমার আসলে কিছু বলার নেই।”

২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়ানডে অভিষেক তামিমের। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ২৫৮টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে তামিম ছিলেন ২৩১ ম্যাচে। এই সময়ে বাংলাদেশের হয়ে তার চেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলেনি আর কেউ।

তার অভিষেক থেকে এখনও পর্যন্ত ৮৭ টেস্টের ৬৯টিতে খেলেছেন তিনি। এই সময়ে তার চেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন বাংলাদেশের কেবল মুশফিকুর রহিম (৮০টি)। তার অভিষেক টি-টোয়েন্টি থেকে শেষটি পর্যন্ত বাংলাদেশ খেলেছে মোট ৯৪ ম্যাচ, যেখানে তিনি খেলেছেন ৭৪টি।

তিন সংস্করণ মিলে তামিমের নামের পাশে আছে ৩৭৪ ম্যাচে ১৪ হাজার ৮৫৭ রান। বাংলাদেশের হয়ে যা সবচেয়ে বেশি। সর্বোচ্চ ২৫টি সেঞ্চুরিও তার। আর কারও ১৫টি সেঞ্চুরিও নেই।  

তামিমের উত্তর শেষে সংবাদ সম্মেলনে এগিয়ে যাচ্ছিল পরের প্রশ্নের দিকে। তা থামিয়ে খানিকটা রসিকতাও করে নেন ওয়ানডে অধিনায়ক। 

“ইংল্যান্ড সিরিজও বড় সিরিজ। আমি কেন খেলছি? ওদের পেস বোলিং আক্রমণ আরও ভালো আছে। তাহলে আমি কেন খেলছি! (হাসি)।”