Published : 02 May 2023, 06:25 PM
গৌতম গম্ভির ও বিরাট কোহলির মধ্যে দৃষ্টিকটু বাকবিতণ্ডা নিয়ে ভারতের ক্রিকেটে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। তাদের এমন আচরণ নিয়ে অনেকেই বিরক্ত। দেশটির দুই সাবেক ক্রিকেটার অনিল কুম্বলে ও হরভজন সিংয়ের যেমন একদম ভালো লাগেনি গম্ভির-কোহলির কথার লড়াই।
আইপিএলে সোমবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ম্যাচ শেষে ঘটে এই কাণ্ড। ১২৬ রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচটি ১৮ রানে জেতে বেঙ্গালোর।
দুই দলের ক্রিকেটারদের করমর্দনের সময় খুব আন্তরিক ছিলেন না কোহলি ও গম্ভির। কিছুক্ষণ পর শুরু হয় লক্ষ্ণৌর ‘গ্লোবাল মেন্টর’ গম্ভিরের সঙ্গে কোহলির দ্বন্দ্ব।
কোহলির সঙ্গে লক্ষ্ণৌর ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কাইল মেয়ার্সকে কথা বলতে দেখে তার হাত ধরে টেনে নিয়ে যান গম্ভির। পেছনে থেকে কোহলি কিছু একটা বলে উঠলে ঘুরে দাঁড়ান গম্ভির।
পাল্টা কিছু একটা বলতে বলতে কোহলির দিকে এগিয়ে যান ভারতের সাবেক এই ওপেনার। লক্ষ্ণৌর অধিনায়ক লোকেশ রাহুল চেষ্টা করেও পারেননি গম্ভিরকে থামাতে। দলটির পেসার মহসিন খান জড়িয়ে ধরে গম্ভিরকে কিছুক্ষণ থামিয়ে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও ব্যর্থ। এক পর্যায়ে মুখোমুখি হয়ে যান কোহলি-গম্ভির।
শেষ পর্যন্ত লক্ষ্ণৌর অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার অমিত মিশ্র এসে কোহলিকে সরিয়ে দেন কিছু একটা বলে। এরপর দুই দলের ক্রিকেটার ও ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা দুজনকে আলাদা করে দেন।
এমন দৃষ্টিকটু ঘটনায় দুইজনকেই জরিমানা করা হয় ম্যাচ ফির পুরোটা।
মাঠে আগ্রাসী শরীরী ভাষা দেখানো বা আবেগের প্রদর্শন ক্রিকেটারদের জন্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু খেলা শেষেও বিষযটি বয়ে নেওয়া ভালো নজির মনে করেন না ভারতের সাবেক লেগ স্পিনার কুম্বলে।
“মনের মধ্যে অনেক আবেগ কাজ করতে পারে, তবে সেগুলোকে প্রকাশ্য করা উচিত নয়…মাঠে মতবিরোধ হতেই পারে, মুহূর্তের উত্তেজনায় প্রতিপক্ষকে কেউ কিছু বলেও ফেলে। কিন্তু ম্যাচ শেষে পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করতে হবে ও সম্মান জানাতে হবে। এগুলো খেলোয়াড়দের জন্য নয়, খেলটির জন্য করতে হবে। কারণ খেলাটিকে সম্মান দেখানো প্রয়োজন।”
“আমি জানি না (তাদের মধ্যে) কী কথা হয়েছিল, সম্ভবত ব্যক্তিগত কিছু হতে পারে। সেটা এমন কিছু, যা ক্রিকেট মাঠে বয়ে আনা যাবে না। বিরাট, গৌতম যে-ই এটা করুক, ভালো দৃষ্টান্ত ছিল না।”
কোহলি-গম্ভিরের ঝামেলার শুরু মূলত ২০১৩ আইপিএল থেকে। ১০ বছর আগে একটি ম্যাচে বেশ এক চোট লেগে গিয়েছিল সেই সময়ের কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ক গম্ভির ও বেঙ্গালোর অধিনায়ক কোহলির। তখনও তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছিল ওই ঘটনা। এরপর থেকে আর এই দুজনের সুসম্পর্কের কথা শোনা যায়নি।
এখন কোহলি আর বেঙ্গালোরের অধিনায়ক নন। খেলোয়াড়ি জীবন বেশ আগেই চুকিয়ে গম্ভির এখন মেন্টরের ভূমিকায় আছেন লক্ষ্ণৌ দলে।
এস শ্রীশান্তের সঙ্গে এমন এক কথার লড়াইয়ে আরও খারাপ কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছিলেন হরভজন। ২০০৮ সালের আইপিএলে এক ম্যাচে শ্রীশান্তকে চড় মেরে বসেন সাবেক এই স্পিনার। যা নিয়ে এখনও আক্ষেপ হয় তার।
সেই উদাহরণ টেনে হরভজন বললেন, কোহলির মতো ক্রিকেটের মহাতারকার কথার লড়াইয়ে এভাবে জড়িয়ে পড়া খেলাটির জন্য ভালো দৃষ্টান্ত নয়।
“২০০৮ সালে শ্রীশান্তের সঙ্গে যা করেছি, সেটার জন্য আমি লজ্জিত। বিরাট কোহলি একজন কিংবদন্তি, তার এই ধরনের ঘটনায় জড়িত হওয়া উচিত নয়। বিরাট ও গম্ভীরের মধ্যে যা হয়েছে, তা ক্রিকেটের জন্য সঠিক নয়।”