বিশ্বকাপের শেষটা জয়ে রাঙাতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক

উইমেন’স টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয় নিয়ে দেশে ফিরতে চায় দল, বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2023, 02:55 PM
Updated : 20 Feb 2023, 02:55 PM

‘দেশ ছাড়ার আগে আপনারা বলেছিলেন অন্তত একটি জয় নিয়ে ফিরতে চান, কিন্তু আপনারা পারলেন না…”, সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বেশ লম্বা প্রশ্নের একটি অংশ এটি। সেই অংশ ধরেই নিগার সুলতানার উত্তর দেওয়ার শুরু, “পারলাম না… এখনও কিন্তু সুযোগ শেষ হয়নি…!” 

বাংলাদেশ অধিনায়ক ঠিক বলেছেন বটে। সুযোগ শেষ হয়নি। আইসিসি উইমেন’স টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেলেও আরেকটি ম্যাচ বাকি আছে বাংলাদেশের। তবে সেই ম্যাচে লক্ষ্য পূরণ আদৌ কতটা সম্ভব, সেই সংশয় বা প্রশ্নও আছে। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা শুধু স্বাগতিক দলই নয়, শক্তি-সামর্থ্যেও এগিয়ে। 

নিগার অবশ্য হাল ছাড়ছেন না। জয়ের আনন্দকে সঙ্গী করে তিনি ফিরতে চান দেশে। 

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কেপ টাউনে মঙ্গলবার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কার কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের কাছেও হেরেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দীর্ঘ জয়খরাও তাই কাটেনি এবারও।

স্বাগতিক হিসেবে খেলা ২০১৪ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার ও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে জয়ের পর গত তিন বিশ্বকাপে ১২ ম্যাচ খেলে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। এবারও তিন ম্যাচ হেরে টানা পরাজয়ের ধরা পৌঁছে গেছে ১৫ ম্যাচে। 

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে নিগার বললেন, এবার শেষ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে হারের ধারায় ছেদ টানতে চান তারা। 

“পারলাম না… এখনও কিন্তু সুযোগ শেষ হয়নি…! শেষ একটা ম্যাচ যেহেতু হাতে আছে। দেখুন, দল ভালো করতে পারেনি, সেটা আমরা জানি। দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারিনি বলেই দল ভালো করতে পারেনি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দু-একটি থাকলেও কিন্তু ভালো হয়নি, কারণ দল হিসেবে পারফর্ম করতে না পারলে একটু কঠিন হয়ে যায় ম্যাচ জেতা।”

এই সংস্করণে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রথম ম্যাচেই জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে ২০১২ সালে মিরপুরে সেই জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের ক্রিকেট এগিয়ে গেছে অনেক। তারা এখন বিশ্বের শীর্ষ দলগুলির কাতারেই আছে। কিন্তু বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উন্নতি খুব একটা হয়নি। মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রথম ম্যাচে ওই হারের পর টানা ৯টি ম্যাচ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। 

এবার অবশ্য ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত প্রত্যাশামতো খেলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায় তারা অনেকটা অভাবনীয়ভাবে। পরে নিউ জিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারালেও পরের ম্যাচে আবার হেরে গেছে অস্ট্রেলিয়ার কাছে। তাদের সেমি-ফাইনাল সম্ভাবনা অবশ্য টিকে আছে এখনও। এজন্য বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততে হবে অনেক বড় ব্যবধানে। 

দক্ষিণ আফ্রিকার এই চাপে থাকাই কাজে লাগাতে চান নিগার। 

“ছোট ছোট ভুলগুলির মূল্য দিতে হয়েছে, আমার কাছে মনে হয়। যেহেতু আরেকটি ম্যাচ আছে, আগের ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে যেন আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি।” 

“আমার কাছে মনে হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা একটু চাপে আছে। আমরা ওভাবে চাপে নেই। চাপহীন ক্রিকেট যদি আমরা খেলতে পারি, এই ম্যাচটি ভালো খেলবে পারব।”

দেশ ছাড়ার আগে নিগার যদিও বলেছিলেন অন্তত একটি জয় নিয়ে ফিরতে চান, তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার পর স্বপ্নের সীমানা বেড়ে গিয়েছিল আরও। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলেছিলেন, তাদের দৃষ্টি সেমি-ফাইনালে। সেই স্বপ্নের বাস্তব ভিত্তি কতটা ছিল, এমন প্রশ্নও উঠল শেষ ম্যাচের আগে। 

নিগার নিজের চাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে আবারও বললেন, জয় দিয়ে শেষ করতে চান বিশ্বকাপ অভিযান। 

“প্রতিটি দলই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে চেষ্টায় থাকে যেন সেমি-ফাইনালে যায়। আমাদেরও সুযোগ ছিল, যদি আমরা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো খেলতে পারতাম। তাদের বিপক্ষে আমাদের জয়ের একটি সুযোগও এসেছিল। কিন্তু কোনোভাবে আমরা দ্বিতীয় ভাগে ভালো বোলিং করতে পারিনি, ভালো ফিল্ডিং করতে পারিনি। তাই ম্যাচটি আমাদের হাত থেকে চলে গিয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কঠিন ছিল আমাদের জন্য। ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা ভালো করতে পারিনি, তবে বোলিং অনেক ভালো হয়েছে।” 

“সব মিলিয়ে আমাদের দল হিসেবে পারফরম্যান্সে ঘাটতি থেকে গেছে। এসব উইকেটে ১৩০-১৪০ রানের বেশি না করলে কঠিন হয়ে যায় ম্যাচ বের করা। তবে সবাই এরকম টুর্নামেন্ট যখন খেলতে আসে, বড় চিন্তা করেই আসে যেন সেমি-ফাইনাল খেলতে পারি। আমাদের সেটা হয়নি। ইচ্ছা থাকবে শেষ ম্যাচটিতে ভালো কিছু যেন পেতে পারি, একটি জয় নিয়ে ফেরার ইচ্ছা আছে।”