বাংলাদেশ ক্রিকেট
অনেক আলোচনার পর অবশেষে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে নিয়োগ দেওয়া হলো দেশি কোচ, সামনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে কাজ শুরু করবেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
Published : 05 Nov 2024, 09:49 PM
এক যুগের বেশি সময় পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে যোগ দিলেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। পাঁচ মাসের জন্য সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিলেন তিনি।
জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে দেশি কোচদের নিয়োগ দেওয়ার কথা বেশ কিছু দিন ধরেই বলে আসছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সালাউদ্দিনকে অন্তর্ভুক্তির খবর জানায় বিসিবি।
তার চুক্তির মেয়াদ অবশ্য ছোট্ট। আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তিনি। অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত দায়িত্ব তার।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে খেলতে বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এই সিরিজে দলের সঙ্গে দেখা যাবে না সালাউদ্দিনকে।
চলতি মাসেই দুই টেস্ট ও তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাবে বাংলাদেশ। ওই সফর দিয়েই শুরু হবে সালাউদ্দিনের নতুন মেয়াদের দায়িত্ব।
ঘরোয়া ক্রিকেটের আলোচিত এই কোচের খেলোয়াড়ি জীবন খুব উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন কয়েক বছর। চোট ও নানা বাস্তবতায় ক্যারিয়ার খুব একটা এগোয়নি তার। কোচিং শুরু করেন বিকেএসপিতে খণ্ডকালীন দায়িত্ব দিয়ে।
পরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভিক্টোরিয়ার হয়ে খেলার পাশাপাশি কোচিংও করান। তার কোচিংয়ে চমকপ্রদ পারফরম্যান্সে শিরোপা জয় করে ভিক্টোরিয়া।
জাতীয় দলে তার অধ্যায় শুরু হয় ২০০৬ সালে। ডেভ হোয়াটমোর ও পরে জেমি সিডন্সের কোচিং স্টাফে ছিলেন তিনি। সহকারী কোচ ও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে সেবার দায়িত্ব পালন করেন ২০১০ পর্যন্ত।
পরে বিসিবির জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবে আরও এক বছর কাজ করেন। ২০১১ সালে বিসিবির চাকরি ছেড়ে মালেয়েশিয়ায় চলে যান তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় দলের কোচের দায়িত্ব নিয়ে।
পরে ২০১৪ সালে সিঙ্গাপুরের প্রধান কোচ হন সালাউদ্দিন। তার কোচিংয়ে আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগের চতুর্থ বিভাগে খেলে সিঙ্গাপুর।
এরপর পুরোপুরি দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে মনোযোগ দেন তিনি। ২০১৭ সালে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের প্রথম ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের কোচ ছিলেন তিনি।
এর আগে ২০১৫ সালে তার কোচিংয়েই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয় টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সব মিলিয়ে তার কোচিংয়ে চারবার ট্রফি ঘরে তোলে দলটি।
এছাড়া প্রায়ই নিজেদের ব্যাটিং-বোলিংয়ের নানা সমস্যায় সালাউদ্দিনের শরণাপন্ন হন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুমিনুল হকসহ দেশের অনেক তারকা। সাবেক বাঁহাতি স্পিনার ও বর্তমান নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকও অবৈধ বোলিং অ্যাকশনে নিষিদ্ধ হওয়ার পর সালাউদ্দিনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে সুফল পান।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের আশা জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে সালাউদ্দিনের অন্তর্ভুক্তি অন্যান্য স্থানীয় কোচদের এগিয়ে আসার পথ সহজ করে দেবে।
“বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, যোগ্য প্রার্থীদের জাতীয় দলের হয়ে অবদান রাখার সুযোগ করে দেব। সালাউদ্দিন এই ভূমিকায় আদর্শ একজন, নিজের সঙ্গে বয়ে এনেছে অনেক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জাতীয় দলে আরও বাংলাদেশি কোচ যোগ করার সময় এখনই।”