ভারত-নিউ জিল্যান্ড সিরিজ
Published : 03 Nov 2024, 08:03 PM
গত ১২ বছরে ঘরের মাঠে যে দলের ছিল না টেস্টে হারের অভিজ্ঞতা, সেই ভারতকেই এবার তাদের আঙিনায় এসে নাকানিচুবানি খাওয়াল নিউ জিল্যান্ড। দুই দলের লড়াই শুরুর আগে যা ছিল অকল্পনীয়, ক্রিকেট ইতিহাসের কোনো দল আগে যা পারেনি, তিন টেস্টেই জিতে সেটিই করে দেখাল কিউইরা।
নিউ জিল্যান্ডের এই অবিশ্বাস্য সাফল্য এবং ভারতের বিব্রতকর সব ব্যর্থতায় সিরিজটিতে হয়েছে অপ্রত্যাশিত অনেক রেকর্ড। আরেক পক্ষের প্রাপ্তিও কম নয়। সেসবের কিছুটা তুলে ধরা হলো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকদের জন্য।
অনাকাঙ্ক্ষিত প্রথম
ঘরের মাঠে তিন বা এর বেশি ম্যাচের টেস্ট সিরিজে প্রথমবার হোয়াইটওয়াশড হওয়ার তেতো স্বাদ পেল ভারত। নিজ আঙিনায় এর আগে সিরিজে সবগুলো ম্যাচ তারা হেরেছিল দুই দফায়; ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-০ এবং ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০।
সিরিজে ৩ হার
১৯৮৩ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে তিন ম্যাচ হারল ভারত। তার আগে ১৯৫৮ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে সিরিজে তিন পরাজয়ের তেতো স্বাদ তারা পেরেছিল পাঁচবার।
বহুল কাঙ্ক্ষিত প্রথম
এবারের আগে প্রায় ৭০ বছরে ১২ বারের ভারত সফরে কোনো সিরিজ জয় ছিল না নিউ জিল্যান্ডের। বহুল কাঙ্ক্ষিত সেই স্বাদ পেল তারা ইতিহাস গড়ে। সিরিজ তো জিতলই, স্বাগতিকদের করল হোয়াইটওয়াশও।
আরেকটি প্রথমের স্বাদ
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে আরেকটি প্রথম স্বাদ পেল নিউ জিল্যান্ড। টেস্ট সিরিজে এই প্রথম তারা তিন ম্যাচ জয়ের কীর্তি গড়ল।
বিব্রতকর রেকর্ড
হোয়াইটওয়াশ এড়াতে স্রেফ ১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হতো ভারতের। কিন্তু স্পিন সহায়ক উইকেটে সেটা পারেনি তারা, হেরে যায় ২৫ রানে। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ঘরের মাঠে ২০০ বা এর কম রানের লক্ষ্য তাড়ায় এই প্রথম হারল দলটি।
নিজ আঙিনায় এর আগে সবচেয়ে কম রানের লক্ষ্য তাড়ায় তাদের হার ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। ১৯৮৭ সালে বেঙ্গালুরুতে (তখনকার বেঙ্গালোর) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ২২১ রান তাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছিল ভারত।
ব্যর্থ রান তাড়া
টেস্টে দেড়শর কম রানের লক্ষ্য তাড়ায় এনিয়ে দ্বিতীয়বার হারল ভারত। ১৯৯৭ সালে ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২০ রানের লক্ষ্যে ৮১ রানে গুটিয়ে যায় তারা, যা তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানের লক্ষ্যে হার।
অল্প পুঁজিতে সাফল্য
ভারতের উল্টো অভিজ্ঞতা হয়েছে নিউ জিল্যান্ডের। দেড়শর কম রানের লক্ষ্য দিয়েও টেস্ট জয়ের কীর্তি দ্বিতীয়বার গড়ল তারা। ১৯৭৮ সালে ওয়েলিংটনে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে কম ১৩৭ রানের লক্ষ্য দিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭২ রানের জয় তুলে নিয়েছিল কিউইরা।
পঞ্জিকাবর্ষে ঘরের মাঠে হারের রেকর্ড
নিজেদের মাঠে ২০২৪ সালে খেলা ১০ টেস্টের ৪টিতে হারল ভারত। এক বছরে এর চেয়ে বেশি টেস্ট কখনও হারেনি তারা। ১৯৬৯ সালে ৮ টেস্ট খেলে সমান ৪টি হেরেছিল উপমহাদেশের দলটি।
পাতৌদির পরই রোহিত
অধিনায়ক হিসেবে ঘরের মাঠে পঞ্চম টেস্ট হারের স্বাদ পেলেন রোহিত শার্মা। ভারতের অধিনায়কদের মধ্যে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ভারতে ৯ টেস্ট হেরে এই তালিকায় সবার ওপরে মানসুর আলি খান পাতৌদি; এর মধ্যে ১৯৬৯ সালে ঘরের মাঠে তার নেতৃত্বে ৪টি টেস্ট হেরেছিল ভারত।
মুম্বাইয়ের রাজা
১৯৮৮ সালে মুম্বাইয়ে (তখনকার বোম্বে) জন্ম নেওয়া নিউ জিল্যান্ড স্পিনার এজাজ প্যাটেল ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত ২ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ২৫ উইকেট। ইংলিশ কিংবদন্তি ইয়ান বোথামকে (২২ উইকেট) পেছনে ফেলে সফরকারী বোলারদের মধ্যে এই মাঠের সফলতম বোলার এখন তিনিই।
এজাজ-জাদেজার সৌজন্যে প্রথম
মুম্বাইয়ে দুই ইনিংসেই পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন এজাজ প্যাটেল ও রাভিন্দ্রা জাদেজা। এক টেস্টে বাঁহাতি বোলারদের চারটি পাঁচ উইকেট নেওয়ার ঘটনা এই প্রথম দেখল ক্রিকেট বিশ্ব।
দুইজন বাঁহাতি বোলারের টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার নজির এনিয়ে দেখা গেল দ্বিতীয়বার। ১৯৮০ সালে করাচি টেস্টে ম্যাচে ১০ উইকেটের স্বাদ পেয়েছিলেন পাকিস্তানের ইকবাল কাসিম ও অস্ট্রেলিয়ার রে ব্রাইট।