সাকিবের ক্যারিয়ারে সেরা বোলিংয়ের পর ফিল সল্ট ও জ্যাকব বেথেলের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে ইংলিশরা।
Published : 10 Nov 2024, 11:32 AM
শৈশবের ছয় বছর বারবাডোজে কাটিয়েছেন ফিল সল্ট। জ্যাকব বেথেলের তো জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই বারবাডোজেই। সময়ের পরিক্রমায় দুজনই এখন ইংল্যান্ডের। তবে বারবাডোজে ফিরে ছেলেবেলার স্মৃতির পরশে যেন জ্বলে ওঠার রসদ পেলেন দুজন। সাকিব মাহমুদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পর সল্ট ও বেথেলের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বড় জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংলিশরা।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটে হারাল ইংল্যান্ড।
ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে শনিবার নিজের প্রথম দুই ওভারে তিন উইকেট শিকার করেন সাকিব। শেষ দিকে ফিরে দারুণ বোলিংয়ে আরও একটি উইকেট নেন তিনি। ক্যারিবিয়ানরা তবু ১৮২ রানের পুঁজি পায়।
সেই চ্যালেঞ্জকে পাত্তাই দেননি সল্ট। ৯ চার ও ৬ ছক্কায় ৫৪ বলে ১০৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার তৃতীয় সেঞ্চুরি এটি। সবকটিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ইংল্যান্ডের হয়ে একাধিক সেঞ্চুরি নেই আর কারও।
বেথেলের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন জুটিতে রান আসে ৬১ বলে ১০৭।
ক্যারিয়ারের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা বেথেল প্রথম ফিফটিতে অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৫৮ রান করে। ইংল্যান্ডের ভবিষ্যৎ বলে বিবেচিত ২১ বছর বয়সী অলরাউনডার সম্ভাবনার আলো আরও একবার ছড়ালেন তার জন্মভূমিতে।
এত কিছুর মধ্যে ইংল্যান্ডের অপ্রাপ্তি একটিই। চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে প্রথম বলেই আউট হয়ে যান অধিনায়ক জস বাটলার।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শুরুতে নাড়িয়ে দেন সাকিব। নিজের প্রথম ওভারে ফেরান তিনি ব্র্যান্ডন কিংকে, পরের ওভারে এভিন লুইসকে বিদায় করার পর প্রথম বলেই আউট করেন শিমরন হেটমায়ারকে।
নিকোলাস পুরান অবশ্য তিনে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিংই শুরু করেন। পাওয়ার প্লেতে ৫৮ রান তোলে ক্যারিবিয়ানরা। তবে অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল দুই ছক্কায় ১০ বল ১৮ করে বিদায় নেন। টিকতে পারেননি শেরফেন রাদারফোর্ডও। ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারায় তারা।
তবে ক্যারিবিয়ানদের আগ্রাসন থামেনি। যদিও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউ। কিন্তু আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রান বাড়তে থাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ফেরার ম্যাচে ২৯ বলে ৩৮ রান করেন পুরান, চার ছক্কায় ১৭ বলে ৩০ করেন আন্দ্রে রাসেল।
শেষ হয়নি সেখানেও। আটে নেমে রোমারিও শেফার্ড অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ৩৫ করে। এমনকি দশে নামা গুডাকেশ মোটি ৩৫ করে ফেলেন ১৪ বলেই।
১৯তম ওভারে সাকিব মাহমুদ মাত্র চার রান দিয়ে মোটিকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম চার উইকেট পূর্ণ করেন।
রান তাড়ায় ঝড়ো ব্যাটিংয়েই শুরু করেন সল্ট ও উইল জ্যাকস। আকিল হোসেনের প্রথম দুই ওভারে ছক্কা ও চার মারেন সল্ট, রাসেলকে ছক্কায় শুরু করেন জ্যাকস। চতুর্থ ওভারে শামার জোসেফকে ছক্কা মারার পর টানা চারটি চারে গুড়িয়ে দেন সল্ট।
তাদেরকে থামাতে পাওয়ারপ্লেতে আনা হয় মোটির স্পিন। কিন্তু এই বাঁহাতি স্পিনারের প্রথম তিন বলে দুটি ছক্কা মারেন সল্ট। ওই ওভারে পরে জ্যাকসও একটি ছক্কা মেরে আউট হয়ে যান পরের বলে।
পাওয়ার প্লেতে ৭৩ তুলে ফেলে ইংল্যান্ড। সল্টের রান তখন ২৬ বলে ৫৪!
পরের ওভারে শেফার্ডের বলে মোটির দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন বাটলার। তবে ক্যারিবিয়ানরা ম্যাচে ফিরতে পারেনি। তাদের সব প্রচেষ্টা বিধ্বস্ত হয় সল্ট ও বেথেলের ব্যাটের তাণ্ডবে।
শেফার্ডকে চার মেরে ৫৩ বলে শতরানে পা রাখেন সল্ট। দুই বল পরই ছক্কা মেরে শতরানের জুটি পূর্ণ করেন বেথেল। ১৯ বল বাকি থাকতে খেলাও শেষ ওই ওভারেই।
ব্রিজটাউনে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ রোববারই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৮২/৯ (কিং ৩, লুইস ১৮, পুরান ৩৮, হেটমায়ার ০, পাওয়েল ১৮, রাদারফোর্ড ২, রাসেল ৩০, শেফার্ড ৩৫, আকিল ২, মোটি ৩৩, শামার ০*; টপলি ২.২-০-২৬-০, সাকিব ৪-০-৩৪-৪, ওভারটন ৩.২-০-২৭-১, রাশিদ ৪-০-৩২-৩, মুজলি ১-০-৭-০, কারান ৩-০-৩১-০, লিভিংস্টোন ২-০-২১-১)।
ইংল্যান্ড: ১৬.৫ ওভারে ১৮৩/২ (সল্ট ১০৩*, জ্যাকস ১৭, বাটলার ০, বেথেল ৫৮*; আকিল ৪-০-২০-০, রাসেল ২-০-২৭-০, শামার ৩-০-৪৫-০, মোটি ৪-০-৪৫-১, শেফার্ড ৩.৫-০-৪৫-১)।
ফল: ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ড ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ফিল সল্ট।