Published : 09 Sep 2024, 01:38 PM
একটা সময় ভারতের জাতীয় দলে ক্রিকেটার উঠে আসতেন মূলত বড় শহর কিংবা চেনা কয়েকটি রাজ্য থেকে। সেই চিত্র এখন বদলে গেছে। বিভিন্ন ছোট শহর, ক্রিকেট ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে পিছিয়ে থাকা রাজ্য, দেশের নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসছে ক্রিকেটার। এজন্যই ভারতীয় ক্রিকেট এখন শক্তিতে সমৃদ্ধ বলে মনে করেন রাহুল দ্রাবিড়।
একসময় মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাট, কর্নাটকার মতো রাজ্য থেকেই ভারতীয় দলের বেশির ভাগ জোগান আসত। শীর্ষ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার মতো সুযোগ-সুবিধা ছিল হাতে গোণা কয়েকটি শহরে। সময়ের সঙ্গে সেই চিত্র বদলে গেছে। মূলত নব্বইয়ের দশক থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে অর্থের প্রবাহ যেমন বেড়েছে, তেমনি ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়েছে বিশাল দেশটির আনাচে-কানাচে।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী কোচ বললেন, দেশজুড়ে ক্রিকেটের সেই স্রোত বেয়েই এখন উঠে আসছেন এত এত ক্রিকেটার।
“আজকে যদি ভারতীয় ক্রিকেটের দিকে তাকান, ভারতীয় ক্রিকেট এখন খুবই শক্তিশালী। দারুণ সমৃদ্ধ। এর একটি বড় কারণ হলো, এখন সব জায়গা থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসে, সারা দেশ থেকে আসে।”
“যদি পেছনে ফিরে যান, গুন্ডাপ্পা বিশ্বানাথের সময়ে, কিংবা আমি যখন শুরু করেছিলাম, বেশির ভাগ প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসত বড় শহরগুলি বা কয়েকটি রাজ্য থেকে। ছোট জায়গায় কোনো প্রতিভাবান ক্রিকেটার থাকলেও তাকে বড় শহরেই আসতে হতো ক্রিকেট খেলতে। কিন্তু এখন সব জায়গা থেকেই ছেলেরা উঠে আসছে ভারতীয় ক্রিকেটে।”
ভারতীয় ক্রিকেটের সেই উন্নতির ঢেউ ঘরোয়া ক্রিকেটেই ফুটে উঠছে বলে মনে করেন দ্রাবিড়।
“রঞ্জি ট্রফির মানের দিকে যদি খেয়াল করে থাকেন, কাউকে অসম্মান না করেই বলছি, একটা সময় ছিল, যখন দক্ষিণাঞ্চলে হায়দরাবাদ ও তামিল নাড়ু ছাড়া অন্য অনেক দলকেই হালকা করে নেওয়া যেত। জয় নিশ্চিত না ধরে রাখলেও একটু হালকাভাবে দেখা যেত। এখন দক্ষিণাঞ্চলে এমন কোনো দল নেই যে বলা যাবে, যাক সহজে হারানো যাবে।”
দ্রাবিড় এই কথাগুলি বলেছেন বেঙ্গালুরুর মাউন্ট জয় ক্লাবের ৫০ বছর পূর্তিতে। বেড়ে ওঠার দিনগুলিতে এই ক্লাবের পাশাপাশি বেঙ্গালোর ইউনাইটেড ক্রিকেট ক্লাবে খেলেছেন ধ্রুপদি এই ব্যাটসম্যান।
ক্রিকেটের উন্নতির জন্য তো বটেই, দেশ ও জাতি গঠনেও ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখেন ৫১ বছর বয়সী কিংবদন্তি এই ক্রিকেটার।
“ক্লাবগুলিতে শক্তিশালী রাখতে হবে আমাদের। মুষ্ঠিমেয় কিছু লোকের কাছে ক্রিকেটকে জিম্মি রাখা চলবে না। ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে হবে সব জায়গায়। প্রতিভাবান ক্রিকেটার ও সুযোগ-সুবিধাগুলোকে স্রেফ একটি-দুটি জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। প্রতিভাবানদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনতে হলে আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে যেন, দেশের সব জায়গায় ছেলেমেয়েরা ভালো অবকাঠামো পায়।”
“উঠতি ছেলে-মেয়েরা ক্লাব ক্রিকেটে এসে শৃঙ্খলা, একতা ও ফিটনেস সম্পর্কে জানতে পারে। ক্লাবের অংশ হওয়া মানে কেবল রাজ্য বা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা নয়, বরং জীবনযাপনের স্কিল শেখা যায় এখানে। ক্লাব থেকে সমাজ ও সম্প্রদায় গড়ে ওঠে। এটির হাত ধরেই একটি দেশ, জাতি গড়ে ওঠে।”