রুশোর সেঞ্চুরিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াল দ. আফ্রিকা

প্রথম পছন্দের বেশ কয়েকজনকে ছাড়া খেলতে নেমে পারল না ভারত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2022, 05:20 PM
Updated : 4 Oct 2022, 05:20 PM

টানা দুটি শূন্য রানের ইনিংসে বেশ চাপে ছিলেন রাইলি রুশো। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে সেই চাপ উড়িয়ে দিলেন বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। করলেন টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি। সঙ্গে কুইন্টন ডি ককের চমৎকার ফিফটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা গড়ল রান পাহাড়। প্রথম পছন্দের বেশ কয়েকজনকে ছাড়া খেলতে নামা ভারতকে হারিয়ে এড়াল হোয়াইটওয়াশ।

ইন্দোরে মঙ্গলবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৪৯ রানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২২৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভারত থমকে গেছে ১৭৮ রানে। প্রথম দুই ম্যাচে জেতা স্বাগতিকরা সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে।

সফরকারীদের বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান রুশোর। ৪৮ বলে ৮ ছক্কা ও ৭ চারে ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৬৮ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেন ওপেনার ডি কক। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের সবার মিলিত অবদানে সেভাবে জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি ভারত।

হলকার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই টেম্বা বাভুমাকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দুই ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা রুশো এবার প্রথম তিন বল খেলেন ডট। ফ্লিক করে চার মেরে রানের খাতা খোলেন তিনি। পরের বলে মারেন আরেকটি।

এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। রানের গতি বাড়ানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন রুশো। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ছক্কায় ওড়ানোর পর মোহাম্মদ সিরাজকে মারেন আরেকটি।

রুশোর ঝড়ো ইনিংসের মধ্যেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চালিয়ে যান ডি কক। বাড়তে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার রান। অশ্বিনের এক ওভারে ছক্কা মারেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই।

তাদের সামনে কোথায় বল ফেলবেন, যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না ভারতীয় বোলাররা। উমেশ যাদবকে ছক্কা মেরে ৩৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ডি কক। এই ওপেনার ও রুশোর জুটিতে একমাত্র বাউন্ডারি ছাড়া ওভারটি করেন অশ্বিন। দ্বাদশ ওভারে তিনি দেন কেবল ৫ রান।

পরের ওভারে ডি ককের রান আউটে ভাঙে বিপজ্জনক জুটি। ৪৩ বলে চার ছক্কা ও ছয় চারে ৪৩ বলে ৬৮ রান করেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। রুশোর সঙ্গে ৪৭ বলে তিনি গড়েন ৮৯ রানের জুটি।

ক্রিজে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মারেন ট্রিস্টান স্টাবস। তবে পরে তাকে প্রায় দর্শক বানিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন রুশো। ১৯তম ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে তিনি পৌঁছান তিন অঙ্কে। টি-টোয়েন্টিতে তার প্রথম। গত জুলাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফে অপরাজিত ৯৬ ছিল এই সংস্করণে তার আগের সর্বোচ্চ।

পরের বলেই বিদায় দেন স্টাবস। ৪৪ বলে ৮৭ রানের জুটিতে তার অবদান ১৮ বলে ২৩। শেষটায় ঝড় তোলেন ডেভিড মিলার। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার তিন ছক্কায় ৫ বলে করেন ১৯ রান।

লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলিকে এই ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া ভারত বড় রান তাড়ায় দ্বিতীয় বলেই হারায় রোহিত শর্মাকে। কাগিসো রাবাদার বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ভারত অধিনায়ক। পরের ওভারে এলবিডব্লিউ হয়ে যান শ্রেয়াস আইয়ার।

রাহুলের অনুপস্থিতিতে ওপেনিংয়ে নামা রিশাভ পান্ত শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত। কিন্তু বড় করতে পারেননি ইনিংস। লুঙ্গি এনগিডির এক ওভারে দুটি করে ছক্কা ও চারে ২০ রান নিয়ে সেই ওভারের শেষ বলে দেন ক্যাচ। পান্ত ১৪ বলে করেন ২৭।

চারে নেমে ঝড় তোলেন দিনেশ কার্তিক। চারটি করে ছক্কা ও চারে ২১ বলে খেলেন ৪৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। কেশভ মহারাজকে জোড়া ছক্কা মারার পরও অহেতুক ঝুঁকি নিয়ে রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টায় তিনি হয়ে যান বোল্ড।

ছন্দে থাকা সূর্যকুমার যাদব টেকেন কেবল ৬ বল। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের ফুল লেংথে করা ওয়াইড বলে ডিপ পয়েন্টে স্টাবসের দুর্দান্ত ক্যাচে শেষ হয় তার ৮ রানের ইনিংস।

৮৬ রানে প্রথম ৫ ব্যাটসম্যানকে হারানো ভারত এরপর হারের ব্যবধান কমায় হার্শাল প্যাটেল, দিপক চাহার ও উমেশের ব্যাটে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ২২৭/৩ (ডি কক ৬৮, বাভুমা ৩, রুশো ১০০*, স্টাবস ২৩, মিলার ১৯*; চাহার ৪-০-৪৮-০, সিরাজ ৪-০-৪৪-০, অশ্বিন ৪-০-৩৫-০, উমেশ ৩-০-৩৪-১, হার্শাল ৪-০-৪৯-০, আকসার ১-০-১৩-০)

ভারত: ১৮.৩ ওভারে ১৭৮ (রোহিত ০, পান্ত ২৭, আইয়ার ১, কার্তিক ৪৬, সূর্যকুমার ৮, আকসার ৯, হার্শাল ১৭, অশ্বিন ২, চাহার ৩১, উমেশ ২০*, সিরাজ ৫; রাবাদা ৪-০-২৪-১, পার্নেল ৪-০-৪১-২, এনগিডি ৩-০-৫১-২, মহারাজ ৪-০-৩৪-২, প্রিটোরিয়াস ৩.৩-০-২৬-৩)

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৯ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী ভারত

ম্যান অব দা ম্যাচ: রাইলি রুশো

ম্যান অব দা সিরিজ: সূর্যকুমার যাদব