৩৫ বছর বয়সী একজনের জন্য দলে ফেরা কঠিন বটে, তবে একশ টেস্ট খেলার স্বপ্ন পূরণে হাল ছাড়ছেন না অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
Published : 16 Jan 2024, 12:42 PM
আরেক দফায় বাদ পড়ার পর টেস্ট দল থেকে এখন বেশ কিছুটা দূরে আজিঙ্কা রাহানে। এবারের রঞ্জি মৌসুমের শুরুটা করেছেন শূন্য দিয়ে। ৩৫ বছর বয়সী একজনের জন্য দলে ফেরার চ্যালেঞ্জও অনেক কঠিন। তবে এখনই হাল ছাড়ছেন না অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। বরং একশ টেস্ট খেলার স্বপ্নের আবির চোখে মেখে লড়াই চালিয়ে যেতে চান তিনি।
ফেরার এক অধ্যায় গত বছর রচনা করেছিলেন রাহানে। ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর বাদ পড়েছিলেন টেস্ট দল থেকে। দেড় বছর পর আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের ভারতীয় দলে ফেরানো হয় তাকে। রঞ্জি ট্রফিতে ভালো করেছিলেন বটে। তবে তিনি ফিরতে পেরেছিলেন মূলত শ্রেয়াস আইয়ার চোটের পড়ায়। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে নতুন রূপে নিজেকে মেলে ধরার ভূমিকাও ছিল টেস্টে ফেরার পেছনে।
সুযোগটি তিনি কাজে লাগান দারুণভাবে। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেন ৮৯, পরের ইনিংসে ৪৬। পরে জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাকে সহ-অধিনায়ক করা হয়। তবে সেই সফরে দুই টেস্টে দুটি ইনিংস খেলে তিনি ব্যর্থ হন। এরপর আবার বাদ পড়ে যান।
শ্রেয়াস চোট কাটিয়ে ফিরেছেন। দলে ফেরার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় সেঞ্চুরি করেছেন লোকেশ রাহুল। ভারতের টপ অর্ডারে ইয়াশাসবি জয়সওয়াল আসায় শুবমান গিল নেমেছেন তিনে। ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে তাই জায়গা পাওয়া এখন অনেক কঠিন।
ফেরার দাবি জানানোর মতো কিছু এখনও করতেও পারেননি রাহানে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব ভালো ফর্মে নেই তিনি। একদিনের ম্যাচের আসর বিজয় হাজারে ট্রফিতে ৮ ইনিংসে ফিফটি করেছেন একটি। এরপর রঞ্জিতে মৌসুমে প্রথমবার খেলতে নেমে অন্ধ্র প্রদেশের বিপক্ষে আউট হয়েছেন শূন্য রানে।
ম্যাচটি অবশ্য জিতে নেয় তার দল মুম্বাই। সেখানে তার অধিনায়কত্বের ভূমিকাও আছে বেশ। ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজের স্বপ্নের কথা জানান রাহানে।
“একটি একটি করে ম্যাচ ধরে এগোতে চাই মুম্বাইয়ের হয়ে। লক্ষ্য হলো রঞ্জি ট্রফির শিরোপা জয় করা, আরও বড় লক্ষ্য ভারতের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলা।”
এই লক্ষ্য পূরণে আরও ১৫টি টেস্ট খেলতে হবে রাহানেকে। ৮৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে ১২ সেঞ্চুরিতে ৫ হাজার ৭৭ রান করেছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ৬টি টেস্টে অধিনায়কত্ব করে দারুণভাবে নজর কেড়েছেন কুশলী নেতৃত্ব দিয়ে। একসময় তার ব্যাটিং গড় পঞ্চাশের কাছাকাছিও ছিল। সময়ের থাবায় তা এখন ৩৮.৪৬।
তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হওয়ার রসায়নটা তো রাহানে জানেনই। তার মতে, মূল পার্থক্য গড়া হয়ে যায় মানসিকতায়।
“পুরো ব্যাপারটিই মানসিকতার। নিজের খেলা তো সহসাই বদলে যায় না। দিনশেষে, ব্যাটিং মানে তো বলে চোখ রাখা ও খেলারই ব্যাপার। তবে আসল ব্যাপারটি মাথার… কে কীভাবে ভাবছে, সেটিই একজনের সঙ্গে আরেকজনের ব্যবধান। কে কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে, এসব ছোট ছোট ব্যাপারই বড় পার্থক্য গড়ে দেয়।”
“স্রেফ ব্যাটিং আর বোলিংয়ের কথা ভাবলে হয় না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানসিকতা ঠিকঠাক থাকতে হয়। মানসিকভাবে কতটা শক্তিশালী, এটা গুরুত্বপূর্ণ। কে কীভাবে গতি সামলায়, ব্যর্থতা সামলায়, এসব বড় ভূমিকা রাখে।”