সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টি নিয়ে গ্রায়েম স্মিথের মন্তব্যে হিংসার ছাপ দেখতে পাচ্ছেন ভিরেন্দার শেবাগ।
Published : 16 Jan 2025, 11:44 AM
ঢিল ছুড়েছিলেন গ্রায়েম স্মিথ। এবার পাটকেল ছুড়লেন ভিরেন্দার শেবাগ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টিকে খোঁচা মেরে যে মন্তব্য করেছিলেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক স্মিথ, সেখানে হিংসার ছাপ দেখতে পাচ্ছেন ভারতের ব্যাটিং গ্রেট শেবাগ।
দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এসএ টোয়েন্টির কমিশানার স্মিথ। তার হাত ধরেই মূলত সাফল্যের পথ ধরে এগিয়ে চলেছে এই টুর্নামেন্ট। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টিতে ধারাভাষ্যকার ও সঞ্চালক হিসেবে কাজ করছেন শেবাগ।
এই দুটি টুর্নামেন্ট হয়ে আসছে প্রায় একই সময়ে। তাই টুর্নামেন্টের মান, বিদেশি ক্রিকেটারদের উপস্থিতির পরিমাণ, এসব নিয়ে তুলনাও হয় নিত্য। এই একই সময়ে অবশ্য বিগ ব্যাশ ও বিপিএলও হয়ে থাকে। তবে বিগ ব্যাশে এমনিতেই বেশি বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম নেই। সেদিকে তাদের মনোযোগও নেই। নিজেদের ক্রিকেটার, খেলার ও সম্প্রচারের মান, সব মিলিয়েই বিগ ব্যাশের আলাদা কদর আছে। বিপিএল বেশ পুরোনো টুর্নামেন্ট হলেও লড়াইয়ে এখন তুলনাতেও আসার মতো নয়।
তারকা বিদেশি ক্রিকেটাররা এই সময়টায় মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা ও আমিরাতের টুর্নামেন্টেই খেলে থাকেন। তবে টুর্নামেন্টের ধরনে বড় ফারাক আছে। আইপিএল ও অন্য বেশির ভাগ লিগের মতোই এসএ টোয়েন্টিতে একাদশে থাকতে পারেন সর্বোচ্চ চার জন বিদেশি ক্রিকেটার। আমিরাতের লিগে দলগুলি গড়া মূলত বিদেশিদের দিয়েই। সেখানে একাদশে ৯ জন পর্যন্ত বিদেশি ক্রিকেটার রাখা যায়।
এটা নিয়েই কিছু দিন আগে কেপ টাউনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্মিথ বলেছিলেন, এই ধরনের লিগ ক্রিকেটের জন্য ক্ষতিকর।
“আইএল টি-টোয়েন্টির চেয়ে নিজেদেরকে খুবই আলাদা হিসেবে দেখি আমরা। আমরা দক্ষিণ আফ্রিকান লিগ, বেশির ভাগ ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকার এবং আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের উন্নতি।”
“আইএল টি-টোয়েন্টির মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে আমাদেরকে, তাই তাদের নিয়ে কিছু বললেই বলা হতে পারে যে, আমি মুখ খারাপ করছি। কিন্তু আমার মনে হয়, এই ধরনের লিগ (আইএল টি-টোয়েন্টি) ক্রিকেট খেলাটির জন্য ভালো নয়। ওখানে অনেক বিদেশি ক্রিকেটার মিলে একটি দল গড়তে হয়, স্থানীয় ক্রিকেটে বিনিয়োগ খুব বেশি নেই। বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য এটা চ্যালেঞ্জ এবং সামনের পথচলায় ব্যাপারটির একটি সুরাহা প্রয়োজন।”
এবার সেটির জবাব দিয়েছেন শেবাগ। তার কথার তীব্রতা তো সবসময়ই তার ব্যাটিংয়ের মতোই!
“আমি এখানে (স্মিথের কথায়) পরশ্রীকাতরতা দেখতে পাচ্ছি। কারণ, আমাদের এখানে বিদেশি ক্রিকেটারের স্রোত বয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তাদের লিগ এরকম আন্তর্জাতিক তারকা খুঁজে ফিরছে। তার (স্মিথ) যন্ত্রণা আমি বুঝতে পারছি, তবে এই ধরনটাই আইএল টি-টোয়েন্টির জন্য বরং আরও ভালো। এখানকার স্থানীয় ক্রিকেটাররা এত অভিজ্ঞ ও কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের সঙ্গে মিশতে পারছে এবং তাদের কাছ থেকে শিখছে।”
আইএল টি-টোয়েন্টির প্রধান নির্বাহী ডেভিড হোয়াইট অবশ্য কয়েক দিন আগেই স্মিথের মন্তব্যকে উড়িয়ে দিয়েছেন।
“আমার মনে হয় না, গ্রায়েম স্মিথ খোঁজখববর নিয়ে বা গবেষণা করে এই কথা বলেছেন। আমিরাতে ৬০ হাজার নিবন্ধিত ক্রিকেটার আছেন। হাজার হাজার ক্রিকেটার খেলছেন অনানুষ্ঠানিক ক্রিকেটে। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় আমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করছি। শুধু এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ডের হাই-পারফরম্যান্স প্রোগ্রামেই নয়, বরং আমিরাতের ভেতরে বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, বিভিন্ন উৎসব, ছোট ছোট নামা জায়গায় বিনিয়োগ করছি ও পাশাপাশি বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলেও কাজ করছি।”
“আমরা যা করে চলেছি, তা যদি ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে পারেন, তাহলে এটাও বুঝতে পারবেন যে, ওই মন্তব্য (স্মিথের) সঠিক নয়। সহযোগী দেশগুলির ক্রিকেটে সম্ভাবনা অপার এবং আমরা সেটি তুলে ধরার সুযোগ নিচ্ছি।”