দেশের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখন শেষের খুব কাছে, জানালেন নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ।
Published : 18 Sep 2024, 06:49 PM
১৪ মাসের বেশি হয়ে গেছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যায়নি সালমা খাতুনকে। এবারের বিশ্বকাপ দলেও তার থাকার সম্ভাবনা ছিল না একটুও। তার পরও দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে তার নামটি এলো। তবে নতুন শুরুর আভাস নয়, সেখানে থাকল শেষের বার্তা। দেশের নারী ক্রিকেটের অগ্রপথিকদের একজন এই অলরাউন্ডারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এপিটাফ এখন লিখেই ফেলা যায়।
একইরকম পরিণতি অপেক্ষা করছে রুমানা আহমেদের জন্যও। অতি নাটকীয় কিছু না হলে তার দলে ফেরার সম্ভাবনাও আর নেই।
নারী দলে নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ জানালেন, অভিজ্ঞ এই দুই ক্রিকেটারকেই মাঠ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে বিসিবি।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের প্রায় শুরু থেকেই সঙ্গী সালমা। ২০১১ সালে দেশের প্রথম ওয়ানডে ও পরের বছর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তিনিই ছিলেন অধিনায়ক। অনেক বছর ধরে দেশের নারী ক্রিকেটের মুখ ছিলেন তিনিই। বাংলাদেশের হয়ে ১৪১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এই অলরাউন্ডার। দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৬৫ টি-টোয়েন্টি ও ১৮ ওয়ানডেতে।
তবে ব্যাটে-বলে ফর্ম হারিয়ে একটা সময় তিনি দলের বাইরে চলে যান। সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নিউ জিল্যান্ড সফরে, সবশেষ টি-টোয়েন্টি গত বছরের জুলাইয়ে ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে।
পর ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সে দলে ফেরার শক্ত দাবি জানাতে পারেননি ৩৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। গত ঢাকা উইমেন’স প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে ৬ ইনিংসে তার রান ছিল মোট ৬১, ৯ ইনিংসে উইকেট নিয়েছিলেন ১৫টি।
সদ্য সমাপ্ত নারী জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টিতে ৩ ইনিংসে রান করতে পারেন তিনি মোট ২৩, উইকেট নিতে পারেন কেবল ১টি।
সালমার ক্যারিয়ার এখন কোন মোড়ে দাঁড়িয়ে, এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নির্বাচক সাজ্জাদ নিজে থেকেই জুড়ে দিলেন রুমানাকেও। সাবেক এই ক্রিকেটার জানালেন, এই দুই ক্রিকেটারের সঙ্গেই ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ কথা বলে পরিষ্কার চিত্র তারা তুলে ধরেছেন।
“সালমার ব্যাপারটা.. একই সঙ্গে রুমানাও… আমরা ওদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। বোর্ডের পক্ষ থেকে কথা বলেছি যে, ওরা যদি শেষ খেলাটি খেলতে চায়, ওদেরকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে। একটি ম্যাচ খেলিয়ে ওদেরক অফিসিয়ালি বিদায় দিতে পারব।”
“পাশাপাশি এটাও বলেছি যে, ওরা যদি খেলা ছেড়ে দেয়, ওদেরকে অন্য কোথাও কাজে লাগানো যেতে পারে, কোচিং বা আম্পায়ারিং, বা কোথাও। ওরা এভাবেই চিন্তা করছে। হয়তো এই বছরটা ওরা খেলবে (ঘরোয়া ক্রিকেটে)। এরপর আমার মনে হয়…।”
তাহলে কি সালমা আর জাতীয় দলের ভাবনায় নেই? এই প্রশ্নে নির্বাচক সরাসরিই জানিয়ে রাখলেন, “সালমা নেই ভাবনায়। এক বছরের বেশি হয়ে গেছে সে দলে নেই।”
এখানে নির্বাচক যা বললেন, তাতে রুমানার জন্য দুয়ার এখনও বন্ধ হয়নি। তবে বিশ্বকাপ দলে তার জায়গা হয়নি। সালমার মতো তিনিও দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। প্রায় দেড় বছর পর গত জুলাইয়ে এশিয়া কাপ দিয়ে তাকে ফেরানো হয় দলে।
শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপে তিন ম্যাচ খেলে দুটিতে অপরাজিত ছিলেন তিনি ৭ বলে ৫ ও ৪ বলে ৬ রান করে। আরেক ম্যাচে আউট হন ১১ বলে ১ রানে। বোলিংয়ে কোনো উইকেট নিতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে তিন ওভারে ১৩ রান দিয়েছিলেন, পরের দুই ম্যাচে বোলিং করেন কেবল ১ ওভার করে।
নির্বাচক সাজ্জাদ যা বললেন, তাতে রুমানার সামনেও আপাতত আশার আলো খুব একটা নেই।
“রুমানাকে আমরা এশিয়া কাপে নিয়েছিলাম, মূলত মিডল অর্ডার ব্যাটিংয়ের জন্য। কিন্তু সে ভালো পারফর্ম করতে পারেনি। এই মুহূর্তে যে ধরনের ব্যাটিং সে করে, তা টি-টোয়েন্টির সঙ্গে আপাতত যাচ্ছে না।”
“ওর জায়গায় ভালো একজন ব্যাটার এসেছে, তাজ নিহার। সে ভালো স্ট্রাইক করে, মিডল অর্ডারে ভালো করতে পারে।”
ঢাকা উইমেন’স প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে ৮ ইনিংসে ২৩৪ রান করেন তাজ, জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টিতে ৪ ইনিংসে ৯৪ রান করেন ১০২.১৭ স্ট্রাইক রেটে।