ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে বাঁহাতি স্পিনে পরিবর্তনের কারণ জানালেন প্রধান নির্বাচক।
Published : 17 Feb 2023, 04:42 PM
একজন দলে সুযোগ পেয়ে তেমন কিছু করতে পারেননি। আরেকজন দল থেকে বাইরে যাওয়ার পর ফেরার মতো উল্লোখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। তবু জায়গা বদল হলো দুই বাঁহাতি স্পিনারের। ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়লেন নাসুম আহমেদ, ফিরলেন তাইজুল ইসলাম। এই পরিবর্তনের পেছনে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বললেন টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়ার কথা।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগামী মাসের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের বাংলাদেশ দলে আনা হয়েছে এই পরিবর্তন। সবশেষ ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েছেন নাসুম। দলে ফেরানো হয়েছে তাইজুলকে।
বাংলাদেশের সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলে ১০ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন নাসুম। টি-টোয়েন্টিতে তিনি বাংলাদেশ দলের নিয়মিত মুখ হলেও ওয়ানডেতে সুযোগ সেভাবে পাননি।
গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিব আল হাসান না থাকায় নাসুমের ওয়ানডে অভিষেক হয়। সেই সিরিজে দারুণ বোলিংয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এরপর ভারতের বিপক্ষে এক ম্যাচ খেলে বাদ পড়লেন নাসুম।
তাইজুল বাংলাদেশের টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য হলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কখনও থিতু হতে পারেননি। ৮ বছর আগে ওয়ানডে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করলেও সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে খেলতে পেরেছেন স্রেফ ১২ ওয়ানডে। সাম্প্রতিক সময়ে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তিনি অবশ্য খারাপ করেননি। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে একটি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে উইকেট নেন ৫টি। পরের মাসে জিম্বাবুয়ে সফরে ২ ম্যাচে নেন ৩ উইকেট।
এরপর আবার ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দলে তিনি হারান জায়গা। সে সময় তার বাদ পড়াটা যদিও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল কিছুটা। তবে বাদ পড়ার পর দলে ফেরানোর দাবিও তিনি তেমনভাবে জানাতে পারেননি। গত নভেম্বরে ৫০ ওভারের ম্যাচের সংস্করণে বিসিএলে প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট নিলেও পরের ম্যাচে ১০ ওভারে ৭১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। উইকেটের দেখা পাননি পরের ম্যাচেও।
এবার বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে স্রেফ তিনটি ম্যাচে সুযোগ পান অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। উইকেট পান কেবল ১টি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে প্রধান নির্বাচক জানালেন, নাসুমের বদলে তাইজুলকে নেওয়ার ক্ষেত্রে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনা অনুসরণ করেছেন তারা।
“তাইজুল দল থেকে বাদ পড়েছিল। কিন্তু সিস্টেমের বাইরে যায়নি। আমাদের সিস্টেমেরই ক্রিকেটার সে। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে কিছু কিছু পরিকল্পনা আমাদের দেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই নেওয়া হয়েছে তাইজুলকে।”
টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা কেমন, তা অবশ্য খোলাসা করলেন না প্রধান নির্বাচক। কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের ভূমিকা এখানে কতটা ছিল, সেটিও সরাসরি বলেননি মিনহাজুল, “সবাই মিলেই নেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত।”
বাঁহাতি স্পিনে সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারতেন তানভির ইসলামও। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ১৫ ম্যাচে ২২ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি ওভারপ্রতি ৪.৫৮ রান দিয়ে। এছাড়া এবারের বিপিএলে ১৭ উইকেট নিয়ে তিনি যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। গত বিপিএলেও ১৬ উইকেট নিয়ে তিনি ছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
তানভিরের নামও আলোচনায় ছিল বলে জানালেন প্রধান নির্বাচক।
“তানভির বিবেচনায় ছিল ভালোভাবেই। সে তো আমাদের এইচপির ক্রিকেটার, ভালো পারফর্ম করছে। ওর সুযোগও আসবে।”
বাদ পড়াদের মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য নাম এনামুল হক। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রেকর্ড ১ হাজার ১৩৮ রান করে তিনি ওয়ানডে দলে ফেরেন। অগাস্টে জিম্বাবুয়ে সফরে ৭৩ ও ৭৬ রানের দুটি ইনিংসও খেলেন। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে সিরিজে তিন ম্যাচ মিলিয়ে করেন ৩৩ রান।
তার জন্য অবশ্য আশার দুয়ার খোলা রেখে দিলেন প্রধান নির্বাচক।
“বিজয় (এনামুল) ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ভালো করতে পারেনি। এছাড়া এই সিরিজে টপ অর্ডারে তামিম ফিরেছে, শান্ত ভালো ফর্মে আছে। অপশন নেই আপাতত। তবে সে সিস্টেমেই থাকবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলবে, পারফর্ম করলে আবার সুযোগ আসবে।”