পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের ৪-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ে ব্যাট হাতে বড় অবদান ওপেনার সাইফার্টের।
Published : 26 Mar 2025, 09:38 PM
পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই পঞ্চাশোর্ধ বিস্ফোরক জুটি, শেষ ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে নিজেদের রেকর্ড রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ে বড় অবদান রেখেছে তাদের উদ্বোধনী জুটি। আরও নির্দিষ্ট করে বললে টিম সাইফার্ট। এই ওপেনার বললেন, প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে উপভোগের আনন্দে ব্যাট চালিয়েছেন তারা।
নিয়মিত অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারসহ প্রথম পছন্দের বেশ কজন ক্রিকেটারকে ছাড়াই ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের সিরিজটি ৪-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে নিউ জিল্যান্ড।
প্রথম ম্যাচে ৯২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৩৫ বলে ৫৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন সাইফার্ট ও ফিন অ্যালেন, নিউ জিল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেয় ৯ উইকেটে। বৃষ্টির কারণে ১৫ ওভারে নেমে আসা দ্বিতীয় ম্যাচে ১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুর জুটিতে আসে ২৯ বলে ৬৬।
সেদিন প্রথম তিন ওভারে সাইফার্ট ও অ্যালেন মিলে ছক্কা মারেন ৭টি, আইসিসির পূর্ণ সদস্য কোনো দলের ম্যাচে প্রথম তিন ওভারে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড সেটি। ম্যাচটিতে নিউ জিল্যান্ডের জয় ৫ উইকেটে।
তৃতীয় ম্যাচেই কেবল কিউইদের শুরুর জুটি দুই অঙ্কে যেতে পারেনি, ৫ বলে ৩। ওই একটি ম্যাচই কেবল হারে তারা সিরিজে। চতুর্থ ম্যাচে তাদের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২৫ বলে ৫৯ রান। উড়ন্ত শুরুর পর ২২০ রানের পুঁজি গড়ে একশর বেশি রানে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা।
ওয়েলিংটনে বুধবার শেষ ম্যাচে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন সাইফার্ট ও অ্যালেন। প্রথম ৬ ওভারে তারা তুলে ফেলেন ৯২ রান, পাওয়ার প্লেতে যা নিউ জিল্যান্ডের রেকর্ড। শুরুর জুটিতে আসে ৩৯ বলে ৯৩ রান, যেখানে সাইফার্টের একার রান ২৭ বলে ৬৪। ১২৯ রানের লক্ষ্য নিউ জিল্যান্ড ১০ ওভারেই পেরিয়ে যায় স্রেফ ২ উইকেট হারিয়ে।
এই ম্যাচে ১০ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৮ বলে অপরাজিত ৯৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলার পর সংবাদ সম্মেলনে সাইফার্ট বললেন, তার ও অ্যালেনের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের মনোভাবই সবকিছু সহজ করে দিয়েছে।
“আমি ও ফিন (অ্যালেন) বেশিরভাগ ম্যাচ যেভাবে শুরু করেছি, তা অসাধারণ। আমরা যেভাবে বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছি এবং দলকে ভিত গড়ে দিয়েছি, তা ছিল বেশ মজার।”
“শুরুতে একটু কঠিন ছিল। হয়তো তাদের ওপর চাপ প্রয়োগের সিদ্ধান্তটি আমাদের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। স্রেফ মজা করার চেষ্টা করেছি। আমরা দুজন ভালো বন্ধু, তাই নিজের বন্ধুর সঙ্গে ভালো সময় কাটানোটা মজার।”
বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে সাইফার্টের। এর ফলে যেকোনো কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়া তার জন্য সহজ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
“বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকার ফলে আমি আত্মবিশ্বাসী হয়েছি এবং ইনিংস কীভাবে এগিয়ে নিতে হয়, তাও শিখেছি। এই ইনিংসটি হয়তো একটু কঠিন ছিল, তবে আমার মনে হয় মূল বিষয় হলো বাউন্সি উইকেটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং গতি ব্যবহার করা। ব্ল্যাকক্যাপসের সঙ্গে আরেকটি সিরিজের জন্য বিদেশে গেলে উইকেট পুরোপুরি ভিন্ন হতে পারে, তখন খেলার ধরনটা একটু বদলাতে হবে।”
এই সিরিজ দিয়ে প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলে ফেরেন সাইফার্ট। পাঁচ ম্যাচে তিনি করেন যথাক্রমে ২৯ বলে ৪৪, ২২ বলে ৪৫, ৯ বলে ১৯, ২২ বলে ৪৪ ও ৩৮ বলে অপরাজিত ৯৭ রান। ৬২.২৫ গড় আর ২০৭.৫০ স্ট্রাইক রেটে ২৪৯ রান করে সিরিজের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনিই। ১৬৭ রানের বেশি করতে পারেনি আর কেউ।
সাইফার্ট ছক্কা মারেন মোট ২২টি, চার ২০টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ ছক্কা মারেন অ্যালেন। ৭ ছক্কার বেশি নেই আর কারও।
এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সিরিজ-সেরার পুরস্কার জেতেন ৩০ বছর বয়সী সাইফার্ট।