পরপর দুই ম্যাচে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তামিম ইকবাল।
Published : 12 Mar 2025, 04:32 PM
চমৎকার বোলিংয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে অল্পে আটকে রাখলেন তাইজুল ইসলাম, আবু হায়দাররা। মাঝারি লক্ষ্যে শুরুতেই হোঁচট খেল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এরপর আর বিপদ ঘটতে দিলেন না তামিম ইকবাল। মাহিদুল ইসলামের সঙ্গে ম্যারাথন জুটিতে নিজে করলেন সেঞ্চুরি, অনায়াস জয় পেল তার দল।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে পরপর দুই ম্যাচে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে মোহামেডানের নায়ক তামিম। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড আগে থেকেই তার। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে সেটি আরেকটু বাড়িয়ে নিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যন।
দিনের আরেক ম্যাচে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগান নাঈম শেখ। তবে ৮০ ছুঁয়ে আউট হয়ে যান আগের রাউন্ডে ১৭৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলা বাঁহাতি ওপেনার। বাকিরাও হতাশ করলে ম্যাচ হেরে যায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
তামিমের সেঞ্চুরিতে মোহামেডানের ‘হ্যাটট্রিক’
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে তামিমের সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে জেতে মোহামেডান। নবাগত গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে হেরে যাত্রা শুরুর পর টানা তিন ম্যাচ জিতল তারকাখচিত দলটি।
তাইজুল, আবু হায়দারের দারুণ বোলিংয়ে ব্রাদার্সকে ১৮৭ রানে গুটিয়ে দেয় গতবারের রানার্স-আপরা। পরে ১০৩ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় তারা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় ব্রাদার্স। পরে তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেননি বাকি ব্যাটসম্যানরা।
তিন নম্বরে নেমে দলের সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন অভিজ্ঞ ইমতিয়াজ হোসেন। আইচ মোল্লার ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান।
১০ ওভারে মাত্র ৩১ রানে ৪ উইকেট নেন তাইজুল। ৪ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে বোলারদের তালিকায় শীর্ষে বাঁহাতি স্পিনার। এছাড়া ২৪ রান খরচায় আবু হায়দারের শিকার ৩টি।
রান তাড়ায় পয়েন্টে বিশাল চৌধুরির দুর্দান্ত ক্যাচে প্রথম ওভারেই ড্রেসিং রুমে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর আর আনন্দের উপলক্ষ পায়নি ব্রাদার্স।
ধীরেসুস্থে শুরুর ধাক্কা সামলে ক্রমেই রানের গতি বাড়ান তামিম ও মাহিদুল। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ১৯২ বলে ১৮৭ রানের ম্যাচ জেতানো জুটি।
লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারের ২৪তম সেঞ্চুরিতে ১০৫ রান করেন তামিম। ৯৬ বলের ইনিংসে ৯ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মারেন ৩৬ ছুঁইছুঁই ওপেনার।
চার ম্যাচে দ্বিতীয় ফিফটি করে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন মাহিদুল। ৬ চারের সঙ্গে তার ব্যাট থেকে আসে ৩টি ছক্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৪৮.৪ ওভারে ১৮৭ (মাহফিজুল ১৮, বিশাল ০, ইমতিয়াজ ৪৩, মাইশুকুর ১৯, জাহিদুজ্জামান ১৬, সোহাগ ৮, রাকিবুল ১৭, সুমন ৪, আসিফ ৭*, আল আমিন ১৩; আবু হায়দার ৬.৪-১-২৪-৩, ইকবাল ৯-০-৩৬-০, নাসুম ১০-২-৩৫-১, তাইজুল ১০-১-৩১-৪, সাইফ ৭-০-২৫-০, মিরাজ ৬-০-৩০-২)
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৩২.৫ ওভারে ১৯১/১ (তামিম ১০৫*, মিরাজ ২, মাহিদুল ৭৫*; আল আমিন ৪-০-২৩-১, সোহাগ ৮-০-৪১-০, রাকিবুল ৫.৫-০-৪২-০, সুমন ৭-০-৩৩-০, আসিফ ৪-০-৩২-০, বিশাল ২-০-১৫-০, মাইশুকুর ২-০-৫-০)
ফল: মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: তামিম ইকবাল
সাইফের ঘূর্ণি, তানজিদ-সৌম্যর ফিফটি
দারুণ বোলিংয়ে আরেকবার প্রতিপক্ষকে অল্পে আটকে রাখলেন লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বোলাররা। ছোট লক্ষ্যে আবারও দাপুটে ব্যাটিং করলেন টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে শীর্ষে উঠে গেল রূপগঞ্জ।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে রূপগঞ্জের জয় ৮ উইকেটে। ১৫৩ রানের লক্ষ্য ১৬০ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলে একঝাঁক তারকায় ঠাসা দল।
চার ম্যাচে রূপগঞ্জের এটি তৃতীয় জয়। সমান ম্যাচে আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিংও জিতেছে তিনটি করে। শ্রেয়তর রান রেটে এক নম্বরে রূপগঞ্জ।
নাঈম শেখের বিধ্বংসী ইনিংসে আগের ম্যাচে ৪২২ রানের ইতিহাস গড়া প্রাইম ব্যাংক এদিন কোনোমতে দেড়শ পেরোয়। এতেও বড় অবদান নাঈমের। অর্ধেকের বেশি রান একাই করেন তিনি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায় প্রাইম ব্যাংক। একের পর এক ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন সাব্বির হোসেন, জাকির হাসান, শাহাদাত হোসেন, শামীম হোসেনরা।
একপ্রান্তে অবিচল থেকে ২ চার, ৩ ছক্কায় ৫৭ বলে ফিফটি করেন নাঈম। রিশাদ হোসেনের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৩ রানের জুটি গড়েন তিনি।
নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৩ বলে ৮১ রান করেন নাঈম। আর কেউ ২০ রানের বেশি করতে পারেননি।
অফ স্পিনে রূপগঞ্জের পক্ষে ৪ উইকেট নেন সাইফ হাসান। এছাড়া তানজিম হাসানের শিকার ৩টি।
বল হাতে আলো ছড়ালেও রান তাড়ায় কিছু করতে পারেননি সাইফ। ৩৫ বলে ১৬ রান করে ফেরেন তিনি।
চলতি লিগে নিজের দ্বিতীয় ফিফটিতে ৬৮ রান করেন তানজিদ হাসান। ৪৯ বলের ইনিংসে ৭ চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কা মারেন বাঁহাতি ওপেনার।
তানজিদের বিদায়ের পর জয়কে নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন সৌম্য। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ বলে ৫০ রান করেন অভিজ্ঞ ওপেনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ২৯.৫ ওভারে ১৫২ (নাঈম ৮১, সাব্বির ৭, জাকির ৯, শাহাদাত ২০, ইরফান ৪, নাহিদুল ৬, শামীম ১১, রিশাদ ৮, খালেদ ১, নাজমুল ২, হাসান ০; শরিফুল ৪-০-২৫-১, তানজিম ৫.৫-০-৩০-৩, মেহেদি ৫-০-২৫-১, সাইফ ১০-০-৩৭-৪, তানভির ৫-০-৩৫-১)
লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ২৩.২ ওভারে ১৫৪/২ (তানজিদ ৬৮, সাইফ ১৬, সৌম্য ৫০*, জয় ১৪*; হাসান ৪-০-৩৫-০, নাহিদুল ১০-১-৩৭-১, নাজমুল ১-০-১০-০, খালেদ ২-০-১৯-০, রিশাদ ৫-০-৪০-১, শামীম ১.২-০-১৩-০)
ফল: লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইফ হাসান